হলদিয়ার মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় রয়েছেন লক্ষ্মণ শেঠ। ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে মেদিনীপুরের প্যারামেডিক্যাল কলেজ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়লেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক দীপক সরকারও!
কলেজে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরানোর দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে প্যারামেডিক্যাল কলেজে। এই কলেজ পরিচালনা করে বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউট অব হেল্থ নামে একটি সংস্থা। যে সংস্থার চেয়ারম্যান দীপকবাবু। দীপকবাবুর উদ্যোগেই শহরের রাঙামাটিতে এই কলেজ ও তার পাশে একটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। সেই প্রতিষ্ঠানেই পড়াশোনা এখন শিকেয় উঠেছে। শুক্রবারই অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হয় বেশ কিছু দাবি জানান ছাত্রীরা। পরে অধ্যক্ষ নন্দদুলাল ভট্টাচার্য বলেন, “ছাত্রীদের কথা শুনেছি। সমস্যা সমাধানের সব রকম চেষ্টা চলছে।” কলেজ সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ২২ নভেম্বর কলেজে একটি জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সভায় উপস্থিত থাকবেন দীপকবাবু। এক আধিকারিকের বক্তব্য, “ছাত্রছাত্রীদের কিছু দাবি রয়েছে। ওই দিন সংস্থার চেয়ারম্যান তাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসবেন।”
প্যারামেডিক্যাল কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে বিএসসি ও এমএসসি কোর্স পড়ানো হয়। যেমন, নিউট্রিশন, মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি টেকনোলজি, ফিজিওথেরাপি ইত্যাদি। রাজ্যে পালাবদলের আগে সব কিছুই চলছিল মসৃণ ভাবে। কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরেই ছাত্রছাত্রীদের অসন্তোষ বাড়ছে। এক ছাত্রীর কথায়, “আগেও আমরা বেশ কিছু দাবিতে আন্দোলন শুরু করার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু, পরিবেশ-পরিস্থিতি তেমন ছিল না।”
ছাত্রছাত্রীদের দাবি, গত ক’মাস ধরেই কলেজে সময়মতো ক্লাস হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে অধ্যাপকেরা আসতেন, তাঁরাও আসছেন না। ফলে, পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। অথচ, ভর্তি হওয়ার সময় বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরাও ক্লাস নেবেন। সমস্যার কথা মেনে কলেজের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা তো কাউকে জোর করতে পারি না। এখানে যাঁরা পড়ান, তাঁদের যথেষ্ঠ যোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু, গত ক’মাস ধরে কয়েক জন গেস্ট লেকচারার আর ক্লাস নিতে আসছেন না। আমরা তাঁদের বারে বারে আসার অনুরোধ করেছি। কিন্তু, তাঁরা গররাজি হচ্ছেন।”এই অবস্থায় গত বুধবার থেকেই আন্দোলন শুরু হয়েছে। কার্যত, সে দিন থেকেই অচলাবস্থা চলছে। প্যারামেডিক্যাল কলেজে সব মিলিয়ে প্রায় ২৩০ জন ছাত্রছাত্রী পড়েন। ছাত্রীদের জন্য হস্টেল রয়েছে। ৮৫ জন আবাসিক। বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ হস্টেল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদেই শুক্রবার অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হন ছাত্রীরা। আরও কিছু দাবিও জানানো হয়। কলেজের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “হস্টেল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। ২২ তারিখ চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা আলোচনায় বসবেন। তার আগের ক’দিনই হস্টেল বন্ধ রাখার কথা ভাবা হয়েছিল।” শুক্রবার অবশ্য এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, হস্টেল চালু থাকবে। আপাতত, ২২ তারিখের বৈঠকের দিকেই নজর সব পক্ষের। |