শিক্ষকদের জন্যও বিধি |
পড়ুয়াদের মিছিলে যাওয়া রুখতে নির্দেশিকা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্কুল চলাকালীন পড়ুয়াদের রাজনৈতিক মিছিলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। নির্দেশিকায় সরকার জানিয়েছে, স্কুল চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। অন্যথা হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে স্কুলের পরিচালন কমিটি। রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সহায়তায় চলা সব স্কুলই ওই নির্দেশের আওতায় আসবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বেহালার সাহাপুর মথুরানাথ বিদ্যাপীঠের ছাত্রদের একটি রাজনৈতিক মিছিলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল হইচই বাধে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে মামলাও হয়। তার ভিত্তিতে হাইকোর্ট রাজ্য শিক্ষা দফতরকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলে, তারা এ ব্যাপারে তারা কী করছে। বুধবার রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর এই নির্দেশিকা জারি করে স্কুলগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, স্কুলকে কোনও ভাবেই রাজনীতির আখড়া করা চলবে না। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেলের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে রাজ্য সরকার তাদের ওই নির্দেশিকা জারির কথা জানিয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “স্কুলগুলিকে এই নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টকেও তা আমরা জানিয়ে দিলাম।” |
|
রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুল চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়াতে পারবেন না। কোনও ছাত্রকেও মিছিল-মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য বলতে পারবেন না। ছাত্রেরা যাতে নিজে থেকেও কোনও মিছিল-মিটিংয়ে না যায়, সে দিকেও স্কুল-কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে। এই নির্দেশিকা যাতে মানা হয়, সে দিকে নজর দিতে হবে স্কুলের পরিচালন কমিটিকে। এর পরেও কেউ নির্দেশ অমান্য করলে পরিচালন সমিতি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। |
যখন স্কুল চলছে |
• রাজনীতির কাজে নন শিক্ষকরা |
• মিছিল-মিটিংয়ে পড়ুয়ারা নয় |
• নজর রাখবে স্কুল কমিটি |
• অমান্য করলে শাস্তি |
|
সাহাপুর মথুরানাথ বিদ্যাপীঠের বেশ কিছু ছাত্রকে স্কুল চলার সময়ই একটি রাজনৈতিক দলের মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরেই এক ছাত্রের মা বেহালা থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল ছাত্রদের দৈহিক শাস্তি বন্ধ করা নিয়ে একটি জনস্বার্থের মামলাও হয়। ছাত্রদের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতাকে ‘অপরাধ’ আখ্যা দিয়ে রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে নীতি নির্ধারণ করতে বলে হাইকোর্ট। সেই মতো রাজ্য সরকার জানায়, তারা এ ব্যাপারে কঠোর আইন প্রণয়ন করছে। হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, মৌখিক আশ্বাস নয়, বিষয়টি নিয়ে স্কুলশিক্ষা দফতর কী বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তা হাইকোর্টকে জানাতে হবে। এ দিন প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি জানিয়ে রিপোর্ট দেয়।
মথুরানাথ স্কুলের ওই ঘটনার পরে স্কুলশিক্ষা দফতর তদন্ত শুরু করে। বহিরাগত চার জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ জানান রাজ্যের স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন। এ দিন হাইকোর্টকে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। |
|