বাসের ছাদ থেকে পড়ে জখম ছাত্র
বাসের ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর জখম হল এক স্কুল ছাত্র। শুক্রবার দুপুরে বিষ্ণুপুর শহরের অহল্যাবাঈ রোডের উপরে ঢেলাদুয়ার এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে তাকে উদ্ধার করার পরে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ও বিকেলে কলকাতায় এসএসকেএম-এ স্থানান্তর করা হয়। বাসের ছাদে যাত্রী পরিবহণ করার বিরোধিতা করে পথঅবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জখম ছাত্রের নাম তারাপদ দত্ত। সে বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ষষ্ঠশ্রেণির ছাত্র। বিষ্ণুপুর থানার দেঝাঁট গ্রামে তাঁর বাড়ি। সে বিষ্ণুপুর শহরে টিউশন পড়তে এসেছিল। বাসে চেপে বাড়ি ফিরছিল। কোনওকারণে সে বাসের ছাদ থেকে রাস্তার উপরে আছড়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, বাসের ছাদে ওর মতো ছোট ছেলেকে না তুললে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। বাসের ছাদে যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না বলে দাবি তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু ক্ষণ রাস্তা অবরোধ করেন। পরে পুলিশ বাসের চালককে আটক করলে বিক্ষোভ ওঠে। ছেলের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন তার বাবা জিতেন দত্ত। তিনি বলেন, “ঠিউশন পড়ার পরে ঢেলাদুয়ারে সে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখান থেকে বাসে চেপেছিল। কিন্তু অত কম বয়েসি ছেলেকে কোন আক্কেলে বাসকর্মীরা ছাদে চাপালো বুঝতে পারছি না।” তিনি জানান, বাসকর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাবেন। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “এ ধরনের ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। বাসের ছাদে যাত্রী না তোলার জন্য শীঘ্রই বাস মালিক ও শ্রমিকদের ডেকে সতর্ক করা হবে।”
তবুও হুঁশ ফেরেনি যাত্রীদের। ছবি: শুভ্র মিত্র।
বাসের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা এ জেলায় বিচ্ছিন্ন নয়। কয়েকমাস আগে কমলপুরের কাছে পুরুলিয়াগামী একটি বাস রাস্তার পাশে উল্টে যায়। বেশ কয়েকজন মারা যান। উল্লেখ্য, মৃতেরা অধিকাংশই বাসের ছাদের যাত্রী ছিলেন। বাসটি পাল্টি খাওয়ার সময় তাঁরা বাসের ছাদ থেকে নীচে পড়ে যান। তাঁদের উপরে বাসটি আছড়ে পড়ে। সেই ঘটনা থেকে যে শিক্ষা হয় নি, শুক্রবার বিষ্ণুপুরের ঘটনা আরও একবার তা প্রমাণ করল। দুর্ঘটনার জন্য দায় এড়িয়ে গিয়েছে বাঁকুড়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক দীপক শুকুল। তিনি বলেন, “আমরা যাত্রীদের ছাদে উঠতে নিষেধ করি। তবু তাঁরা কথা শোনেন না। পুলিশ-প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিলে তবে হাসের ছাদে ওঠা বন্ধ হবে।” বাস শ্রমিক সংগঠনগুলি দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন যাত্রীদের ঘাড়েই। বাঁকুড়া জেলা মোটর মজদুর সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাধা দিলেও কিছু যাত্রী ছাদে ওঠেন। বাসকর্মীরা বাধা দিয়ে অনেকক্ষেত্রে আবার মারও খেয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।” একই বক্তব্য বাঁকুড়া জেলা বাস ওয়াকার্স ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক মহম্মদ নঈমেরও। তবে জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি বলেন, “বারবার বৈঠক ডেকে বাসের ছাদে যাত্রী তোলা নিয়ে বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। তারাই নিয়ম না মেনে যাত্রীদের বাসের ছাদে বহণ করছেন।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “এ বার বাসের ছাদে যাত্রী তোলা হলে বাসের ‘পারমিট’ বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” বাসের ছাদে যাত্রী তোলা আটকাতে পুলিশ মাঝে মধ্যে অভিযান চালায় বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার প্রণব কুমার। তিনি বলেন, “আমরা মাঝে মধ্যে অভিযান চালাই। কিন্তু বাসকর্মীরা ছাদে যাত্রী তোলা বন্ধ করছেন না। তাই এ ধরনের দুর্ঘটনা মাঝে মধ্যে ঘটছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.