|
|
|
|
নন্দীগ্রামে নিখোঁজ কাণ্ডের তদন্তে বাড়তি সময় দু’মাস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও তমলুক |
প্রাথমিক রিপোর্টের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। নন্দীগ্রামের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নিখোঁজ সমর্থকেরা কোথায় গেলেন, সেই ব্যাপারে তদন্ত শেষ করার জন্য সিআইডি-কে আরও দু’মাস সময় দিয়েছে তারা।
নন্দীগ্রামের নিখোঁজদের ব্যাপারে বৃহস্পতিবারেই হাইকোর্টে তাদের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছিল সিআইডি। বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ (দুই বিচারপতির নাম একই) শুক্রবার ওই রিপোর্ট সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে। তখন সিআইডি-র তরফে ডিভিশন বেঞ্চকে জানানো হয়, তদন্ত শেষ করার জন্য তাদের আরও কিছু সময় দরকার। ডিভিশন বেঞ্চ তার পরেই তদন্ত শেষ করার জন্য সিবিআই-কে আরও দু’মাস সময় মঞ্জুর করে।
নিখোঁজ-কাণ্ডে এ দিনও নন্দীগ্রামে তদন্ত চালিয়েছে সিআইডি। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার শক্তি দলপতিকে গ্রেফতার করেছিল তারা। তাঁকে জেরা করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে সিআইডি সূত্রের দাবি। ওই সূত্রের খবর, সিপিএম-কর্মী শক্তিবাবু খেজুরির কামারদায় একটি ক্লাবের অ্যাম্বুল্যান্স চালাতেন। ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি কমিটির মিছিলে সিপিএমের হামলায় নিহতদের দেহ বহনে সেই অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহৃত হয়েছিল বলে সিআইডি-র দাবি। বুধবারই অ্যাম্বুল্যান্সটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় শক্তিবাবুকে। হলদিয়া আদালতের অনুমতিক্রমে আপাতত তাঁকে নিজেদের হেফাজতে রেখে জেরা করছে সিআইডি। এ দিন শক্তিবাবুকে খেজুরির কামারদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শেরখাঁচকের জননী ইটভাটা ও কুঞ্জপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
সিআইডি সূত্রের দাবি, চার বছর আগের সেই ১০ নভেম্বর কামারদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে দু’জনের মৃতদেহ নিয়ে শক্তিবাবু জননী ইটাভাটায় গিয়েছিলেন। সেখানে আগে থেকে আরও চারটি দেহ রাখা ছিল। সন্ধ্যার পরে কালো পলিথিনে মোড়া অবস্থায় ছ’টি দেহ ফের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়েই কুঞ্জপুরে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল তাঁকে। সেখানে খালের ধারে দেহগুলি নামিয়ে তিনি কামারদা ফিরে যান। খালটি রসুলপুর ঘাট পর্যন্ত গিয়েছে। সেখান থেকে নৌকায় চাপিয়ে দেহগুলি পরে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। সিআইডি-র দাবি, জেরায় এ-সব তথ্য জানিয়েছেন শক্তিবাবু।
সরকারি আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় এ দিন হাইকোর্টে বলেন, ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর কামারদা হাসপাতালে কিছু লোক একটি অ্যাম্বুল্যান্সে কয়েক জনকে এনেছিলেন। উপস্থিত চিকিৎসক দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসক ময়না-তদন্তের কথা বললেও বন্দুক দেখিয়ে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
নিখোঁজ-কাণ্ডে দুই সিপিএম নেতা হিমাংশু দাস ও প্রজাপতি দাসের নাম জড়িয়ে গিয়েছে বলে জানায় সিআইডি। তারা বলছে, খেজুরি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সেই সময়ের সভাপতি হিমাংশুবাবুই আবার কামারদার ক্লাবটিরও সম্পাদক। ওই ক্লাবেরই অ্যাম্বুল্যান্স চালাতেন শক্তিবাবু। কামারদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই চিকিৎসকও ইতিমধ্যে আদালতে সে-দিনের ঘটনা নিয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। সাগরে দেহ ভাসানোর অভিযোগে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল খেজুরির প্রাক্তন সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য তথা নৌকার মালিক অজিত বরকে। শুক্রবার হলদিয়া আদালত তাঁর জেল-হাজতের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়িয়ে দিয়েছে। |
|
|
|
|
|