|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা
উদ্বেগ |
জল ‘পাচার’ |
অনুপ চট্টোপাধ্যায় |
কলকাতা পুর এলাকার কাশীপুর থেকে দৈনিক হাজার হাজার লিটার জল ‘পাচার’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে ওই এলাকার বাড়িগুলিতে সরবরাহ করা জলের চাপ কমে যাচ্ছে।
কাশীপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। টালা পাম্পিং স্টেশন থেকে জল সরবরাহ করা হয় ওই এলাকায়। পাশেই এক দিকে বরাহনগর ও অন্য দিকে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। ওই দু’টি পুর এলাকায় টালার জল যায় না। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি দিনই একদল লোক কাশীপুর এলাকা থেকে গ্যালন গ্যালন জল নিয়ে বিক্রি করছেন পাশের পুর এলাকায়।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তনু সেন। তিনি বলেন, “ভোর ৩টে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একদল লোক এলাকার বিভিন্ন রাস্তার স্ট্যান্ড পাইপ থেকে ক্রমাগত জল নিয়েই চলেছে। এর পরিমাণ দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ হাজার লিটার। মিনিডর, ম্যাটাডরে করে জারিকেন ভর্তি জল চলে যাচ্ছে অন্য পুরসভা এলাকায়।” তিনি জানান, পাঁচ লিটার জল চার থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ভাবে অবাধে জল ‘পাচার’ হওয়ায় চিন্তিত শান্তনুবাবু। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় খাস কাশীপুর এলাকায় সরবরাহ করা জলের চাপ অত্যন্ত কমে যাচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে কাশীপুরে জলসঙ্কট দেখা দেবে। বিষয়টি মেয়রকেও জানিয়েছি।” মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অসুবিধার বিষয়টি দেখা হবে। |
|
এ ভাবে জল ‘পাচার’ এখনই বন্ধ করা দরকার বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রতাপ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাস্তার কল থেকে জল নেয় ওরা। তাই প্রতিবাদ করার কেউ থাকে না।” ডি গুপ্ত লেন, কালীচরণ ঘোষ লেন, পঞ্চাশ ফুট রাস্তা, রাজাবাগান লেন, বিশ্বনাথ পার্ক, সেন্টার সিঁথি ও সাউথ সিঁথি রোডে থাকা স্ট্যান্ড পাইপ থেকে জল নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
তাঁদের অভিযোগ, এ ভাবে ডি গুপ্ত লেনের এক বাসিন্দা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে জল বিক্রির কারবার চলছে। একাধিক বার বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছে। এক বার তো দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির উপক্রম হয়। বাসিন্দারা জানান, পুলিশকে জানানো হলেও কোনও ফল হয়নি। জল নেওয়া তো কমেইনি, বরং বেড়েই চলেছে। কাশীপুর থানা সূত্রে অবশ্য বলা হয়, অভিযোগ পেলেও কিছু করার নেই। এটা পুরসভার সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কাউন্সিলর শান্তনুবাবু বলেন, “কিছু করতে গেলেই মানবিকতার কথা বলা হয়। বলা হয়, পানীয় জল না দেওয়া কি ঠিক হবে? কিন্তু যাঁরা প্রচুর খরচ করে জলের লাইন নিয়েছেন, তাঁরা জল না পেলে কী হবে সেটাও তো ভাবা দরকার।” |
|
যদিও বরাহনগরের মণ্ডলপাড়ার এক বাসিন্দা গৌতম দাসের কথায়: “আমরা টালার মিষ্টি জল পাই না। তাই ওখান থেকে যাঁরা জল নিয়ে আসেন, তাঁদের কাছ থেকে কিনি।”
এ ব্যাপারে কলকাতা পুরসভার ডিজি (জল সরবরাহ) বিভাস মাইতি বলেন, “কেউ যদি রাস্তা থেকে জল নিয়ে বিক্রি করেন তা হলে আমাদের করার কিছু নেই। তবে স্থানীয় কাউন্সিলর চাইলে আমরা বড়জোর স্ট্যান্ড পাইপ বন্ধ করে দিতে পারি।”
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “বিষয়টা জানি। জল না দেওয়া অমানবিক কাজ। তাই তা বন্ধ করা যায় না। তবে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেটাও দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|