“ছিয়ানব্বইয়ের সেই বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে টিমের সিদ্ধান্ত মোটেই বদলে দেয়নি আজহার। টস জিতে ফিল্ড করার সিদ্ধান্তটা টিমেরই ছিল।”
‘‘কাম্বলি যা বলছে, তার কোনও মাথামুণ্ডু নেই। রাবিশ।”
“ও যদি সব কিছু জেনেই থাকবে, তা হলে পনেরো বছর ধরে অপেক্ষা করল কেন?”
“পনেরো বছর বাদে টেলিভিশনে হঠাৎ করে এ সব বলছে কেন? প্রমাণ আছে ওর কাছে? এ রকম অভিযোগ করার আগে ওর ভাবা উচিত ছিল টিমের উপর কী প্রভাবটা পড়তে পারে।”
বেঙ্কটপতি রাজু। মহম্মদ আজহারউদ্দিন। অজিত ওয়াড়েকর। এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথম জন ’৯৬ বিশ্বকাপে টিমের সদস্য। দ্বিতীয় জন অধিনায়ক। তৃতীয় ব্যক্তি তৎকালীন ভারতীয় টিমের ম্যানেজার। আর চতুর্থ জন ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। আর শুধু সৌরভ-আজহার কিংবা রাজু নন, বিনোদ কাম্বলির ইডেনে ছিয়ানব্বই বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে দেশের ক্রিকেটমহলে। টিমের সদস্যদের আরও দু’একজন সদস্য মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, এ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লও পুরো ব্যাপারটাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন। বলেছেন, “এ নিয়ে কী বলব আমি? কেউ পনেরো বছর বাদে, কেউ সতেরো বছর বাদে যা ইচ্ছে তাই বলে যাবে আর আমাকে তার প্রতিক্রিয়া দিতে হবে? কোনও প্রশ্নই ওঠে না।” আর আমজনতা? কাম্বলির দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে, হাতে প্রমাণ থাকলে কাম্বলি তা নিয়ে বেরিয়ে আসুন। নইলে চুপচাপ থাকুন। |
চব্বিশ ঘণ্টা আগে কাম্বলি বলেছিলেন, ছিয়ানব্বই বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ গড়াপেটা হয়েছিল। টস জিতে ভারতের ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত দেখে তিনি প্রবল আশ্চর্য হয়ে যান। কাম্বলির কথায়, “ওই ম্যাচের পরই আমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবন শেষ হয়ে গিয়েছিল। টিম থেকে বাদ পড়েছিলাম আমি। সে দিন টস জিতে আমাদের টিমকে প্রথমে ফিল্ড করতে দেখে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম।”
যা শোনার পর আজহার ফুঁসছেন। বলেছেন, “কাম্বলি যা বলছে তার কোনও মানেই নেই। কাম্বলি জানেই না ও কী বলছে। এ ওর চরিত্রেরই পরিচয় রেখেছে এই জঘন্য মন্তব্যটা করে। ওর মতো এক জন লোক, যার কি না চরিত্র বা শিক্ষা বলে কিছু নেই, সে যদি টিভির সামনে টিমের সমস্ত ক্রিকেটারের সম্পর্কে অসম্মানজনক কথাবার্তা বলে যায় তার চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু নেই।” এখানেই না থেমে আজহার আরও বলেছেন, “টস জিতে সে দিন ফিল্ড করার সিদ্ধান্তটা টিম ম্যানেজমেন্টের ছিল। আমরা ঠিকই করে রেখেছিলাম সেটা। ওর উচিত মুখে সেলোটেপ এঁটে বসে থাকা।” রাজু বলছেন, “এত দিন পর এ সব কথা বলার মানে কী?” সঞ্জয় মঞ্জরেকর টুইট করে লিখেছেন, “সে দিন প্রথমে ফিল্ড করার সিদ্ধান্তটা ভুল হলেও সেটা সৎ ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত ছিল।”
কাম্বলি আবার জড়িয়েছেন ওয়াড়েকরকেও। বলেছেন, “উনি সবই জানতেন।” যা শুনে ওয়াড়েকর চুপ করে থাকেননি। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “ফিল্ড করার সিদ্ধান্তটা গোটা টিমের ছিল। আর ও আজ এ সব কথা বলছে কেন?” আজহার আবার পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ভারতীয় দলে যথেষ্ট সুযোগ পাওয়ার পরেও কাম্বলি কিছু করে দেখাতে পারেননি। তাই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কাম্বলির দাবি অনুযায়ী, মোটেই তাঁকে ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়নি বলেও পাল্টা দাবি তুলেছেন আজহার। “সবাই জানে কাম্বলি কী ভাবে ক্রিকেটটা খেলত। তাই কাম্বলি বলতে পারে না যে, ওকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। আর আটানব্বই সালেও তো ওকে একবার জাতীয় দলে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু চোট পাওয়ায় ওর খেলা হয়নি।” কাম্বলিকে কটাক্ষও করতে ছাড়েননি বিশ্বকাপে সর্বাধিক বার দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়ক। খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “ক্রিকেটটা যদি কাম্বলি মন দিয়ে খেলত, তা হলে আজ ও এই অবস্থায় এসে দাঁড়াত না।” |