নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিএড কলেজের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ‘ফি’ আদায়ের অভিযোগ তুললেন ছাত্রছাত্রীরা। শুক্রবার কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। অবস্থান বানচাল করতে কলেজের কয়েক জন কর্মী ছাত্রছাত্রীদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। তার পরই ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পরই তড়িঘড়ি ৭ দিন কলেজ ছুটি বলে ঘোষণা করেছেন। এ বিষয়ে কলেজের ডিরেক্টর মুকুল রায় বলেন, “ইউজিসি-র নিয়ম মেনে কলেজ চালাতে গেলে এত কম ফি-তে চালানো সম্ভব নয়। তাই আমরা ফি চেয়েছি। এই টাকা তো বিনা রসিদে বা লুকিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। নোটিস দিয়েই নেওয়া হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা প্রয়োজনে আদালতেও যেতে পারে। আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু ফি দিতেই হবে। তবে এটা বলতে পারি, এ বার ১০ হাজার টাকা দিলে এই শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আরও কোনও ফি নেওয়া হবে না।”
বি-এডের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কত টাকা ‘ফি’ নেওয়া হবে তা নিয়ে ভর্তির শুরু থেকেই আন্দোলনে নেমেছিলেন বেসরকারি বিএড কলেজের মালিকেরা। এমনকী ‘কাউন্সেলিং’ও বয়কট করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিশ্ববদ্যিালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় কলেজগুলি আর কিছু করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত মেনেই ৩৫ হাজার টাকায় ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করতে বাধ্য হন। যদিও কিছু ক্ষেত্রে ৩৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ৪০ হাজার বা তারও কিছু বেশি নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। ‘মেদিনীপুর ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন’-এর বিএড কলেজটি মেদিনীপুর আইন কলেজ-লাগোয়া। আইন কলেজের কয়েক জন ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ জনেরাই এই কলেজটিও তৈরি করেছেন। ভর্তির সময়ে দু’টি রসিদে প্রথমেই ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। একটি রসিদে ৩৫ হাজার টাকা ও অন্য রসিদে ৫ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার ফের কলেজের অধ্যক্ষ অখিলচন্দ্র বিশাল একটি নোটিস দিয়ে ছাত্র পিছু আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। কলেজের উন্নয়নের জন্য এই টাকা দিতে হবে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে। তা দেখে ছাত্রছাত্রীরা হতবাক। হঠাৎ করে কেন বাড়তি অর্থ চাওয়া হচ্ছে তা জানতে চেয়েই অবস্থানে বসেন সকলে।
ছাত্রছাত্রীদের দাবি, “ভর্তির সময় যে টাকা নেওয়া হয়েছিল তার পর আর কোনও অর্থ নেওয়া হবে না বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন। সেই মতো চুক্তিও হয়েছিল। তার পর আবার টাকা চাইছেন কর্তৃপক্ষ।” ছাত্রছাত্রীরা তা দিতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। অবস্থানে কলেজ কর্তৃপক্ষ হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। তার পর তড়িঘড়ি কলেজ বন্ধেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলেজের ডিরেক্টর অবশ্য জানিয়েছেন, “এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলছে। আমাদের কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। আন্দোলন চললে পরীক্ষা নেওয়া কঠিন বলেই কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” সেই সঙ্গে ডিরেক্টরের অভিযোগ, “ছাত্রছাত্রীদের উপর আমাদের কেউ হামলা করেনি। ছাত্রছাত্রীরাই আমাদের ঘেরাও করে রাখে। কলেজের নানা সামগ্রী ভাঙচুরও করে।” |