পটনা বইমেলায় হু হু করে বিকোচ্ছে সাধারণ জ্ঞানের বই। ব্যাপার কী? প্রকাশক থেকে পুস্তক বিক্রেতা, সকলেরই এক উত্তর: সুশীল।
সুশীল কুমার। ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-তে পাঁচ কোটি টাকা জেতা বিহারি যুবক। আর এক যুবক অনিল ওই একই অনুষ্ঠানে ৯০ ভাগ সঠিক উত্তর দিয়ে জিতেছেন এক কোটি টাকা। সুশীল আর অনিলই আপাতত বিহারের নতুন নায়ক, তারুণ্যের নতুন মুখ। তাঁদের অনুসরণ করার হিড়িকেই বইমেলার প্রথম দিন থেকেই সাধারণ জ্ঞানের বই সংগ্রহের ঝোঁক।
মেলা কমিটির উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, প্রতিবার বইমেলায় সাধারণত সাহিত্যের বইয়ের চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু এ বার সাধারণ জ্ঞান এবং সাম্প্রতিক খবরাখবর নিয়ে লেখা বইয়ের চাহিদা অনেক বেশি। তবে এ কথা ঠিক যে, এই জাতীয় বইয়ের একটা বাঁধা বাজার কিন্তু বিহারে সব সময়ই আছে। প্রকাশকদের বক্তব্য, এমনিতেও এই ধরনের বইয়ের বিক্রি ভালই হয়। তার বড় কারণ হল, বিহারের ছেলেমেয়েরা নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বিপুল ভাবে অংশ নেয়। কিন্তু এ বারের বিক্রিবাটা সেই রেকর্ড ভেঙে দিতে চলেছে।
উপকার প্রকাশন এবং রমেশ প্রকাশক সংস্থা নানা ধরনের সাধারণ জ্ঞানের বই প্রকাশ করে। তাদের দাবি, এ বারের মেলায় প্রচুর সংখ্যক কমবয়সীরা আসছেন। তাঁদের বেশির ভাগই এই ধরনের বই কিনছেন। ভারতীয় অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ের চাহিদাও কম নয়। সুশীল-অনিলের সাফল্যই কমবয়সীদের মধ্যে এই জাতীয় বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে। উপকার সংস্থার কর্তা বিকাশ সিংহ বলেন, “কেবিসি-তে জয়ী দু’জন এই রাজ্যের প্রতিনিধি। এর জন্য কেবিসিকে ধন্যবাদ।” রমেশ প্রকাশন
সংস্থার এক কর্তা বলেন, “আগামী ছ’মাসের মধ্যে নানা ধরনের চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা আছে। তার জন্য এই ধরনের বই বেশি বিক্রি হওয়া একটা কারণ। তবে বড় কারণ অবশ্যই কেবিসি।”
বিহারের ছেলেমেয়েরা কি তবে দলে দলে এ বার কেবিসি-তেই যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন? কমার্স কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুধীর রঞ্জনের কথায়, “সাধারণ জ্ঞান বাড়িয়ে আমরা কেবিসি থেকে টাকা জিতে আনব এমন ভাবছি না। কিন্তু জিকে-কারেন্ট অ্যাফের্য়াস জীবনে খুবই দরকার।” সুধীরের বন্ধু ব্রিজমোহন দুবে বলেন, “ওঁরা দু’জনে প্রমাণ করে দিয়েছেন, এই দুই বিষয়ের উপর দখল থাকলে জীবনে ওঠার সিঁড়িতে পা ফেলতে কতটা সুবিধে হয়। চাকরির পরীক্ষাতেও তো অনেকটা এগিয়ে যাওয়া যায়।” অর্থাৎ কেবিসি-তে যোগ দেওয়াটা বড় কথা নয়। সাধারণ জ্ঞানের উপযোগিতার দিকটাই ছাত্রছাত্রীদের মনে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন সুশীল-অনিলরা। প্রণব কিশোর নামে আর একজন ছাত্রের কথায়, “ঠিকই এ বার আমরা এই ধরনের বইয়ের দিকে একটু বেশি ঝুঁকেছি। কারণ সুশীল এবং অনিল বিহারের প্রতিনিধি হিসেবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক বিষয়ের উপর ওঁদের কতটা দখল। আর, সেটা কতটা কার্যকরী।” |