ট্রেনে চড়ে সকাল বেলা নেমেছি ওড়িশার বালুগাঁও স্টেশনে। সেখান থেকে অটোয় পাঁচ কিমি দূরে বরকুল। চিলিকা হ্রদের ধারে ওড়িশা পর্যটন উন্নয়ন নিগমের (ওটিডিসি) অতিথিশালা ‘পান্থনিবাস’-এ ব্যাগপত্র রেখে সোজা হ্রদের ধারে। দরদাম করে শ’তিনেক টাকায় ভটভটি ভাড়া করেছি কালীযাই যাওয়ার জন্য। ওটিডিসি-র স্পিড বোট এবং শিকারাও মেলে। তবে দরটা একটু বেশি।
নীল জলে দুলতে দুলতেই এক সময় পৌঁছে গেলাম কালীযাই মন্দির। জলের মাঝে ছোট্ট একটা দ্বীপ, নারকেল গাছে ঘেরা। ওড়িশার বহু মন্দিরের চেনা শৈলীতেই হলুদ, সবুজ, নীল রঙ করা মন্দির। প্রবেশ দ্বারে বড়সড় একটা ঘোড়া। গর্ভগৃহে টিমটিম করে জ্বলা প্রদীপের আলোছায়ায় কালী ও যাই দেবীর মূর্তি দেখলে বেশ ভয়ই লাগে। কথিত আছে, মা লক্ষ্মীর দুই সহচরী জয়া ও বিজয়া এখানে যথাক্রমে কালী ও যাই নামে পূজিতা। বেরিয়ে এসে দাঁড়ালাম চাতালে। চারদিকে অথৈ জল যেন সমুদ্র। তার রং কোথাও নীল, কোথাও সবুজ, আবার কোথাও বা গেরুয়া। এখানে না এলে চিলিকার বিস্তৃতিটাই বোঝা যায় না।
দেশ তথা এশিয়ার বৃহত্তম, পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্ুদ্র সন্নিহিত উপহ্রদ। জল ঈষৎ লবণাক্ত। যার আয়তন গ্রীষ্মে ন’শো থেকে ভরা বর্ষায় প্রায় এগারোশো বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়া-কমা করে। গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে পরিযায়ী পাখিদের বৃহত্তম শীতকালীন আশ্রয় চিলিকা। হ্রদের তিন দিকে ওড়িশার তিন জেলা পুরী, খুর্দা ও গঞ্জাম। জলে ভেসে থাকা ছোট ছোট দ্বীপগুলি তার প্রাণভ্রমরা। কী সুন্দর সুন্দর নাম তাদের হানিমুন, নগজকৃষ্ণপ্রাসাদ, রাজহংস, কালীযাই। এই সবে দ্বীপে ছড়ানো ১৩২টি গ্রামে প্রায় লাখখানেক পরিবার বাস করে। তারা মাছ ধরে, জাল বোনে, চিংড়ি চাষ করে। হ্রদ ঘিরেই তাদের জীবনে সুখ-দুঃখ, আশা-ভরসা আবর্তিত হয়। |
লিখুন অনধিক ৩০০ শব্দে। খামে ‘পুজো এক্সপ্রেস’ লিখে পাঠিয়ে দিন
আনন্দবাজার পত্রিকা,
এ ১০, ডক্টরস কলোনি, সিটি সেন্টার,
দুর্গাপুর - ৭১৩২১৬।
অবশ্যই দেবেন ছবি (নিজেদের বাদে)। ছবি মেল করতে চাইলে: durgapuredit@abp.in
(লেখা নির্বাচনে সম্পাদকীয় বিভাগের বিবেচনাই চূড়ান্ত) |
|