প্রায় একশো বুনো হাতি। দাঁতাল রয়েছে ১০-১৫টি। শাবক ২২-২৫টি। ওই পালের পিছনে ছুটে নাজেহাল হচ্ছেন কার্শিয়াং ও দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগের কর্মীরা। দিনের বেলা বনকর্মীরা হাতির পাল খেদিয়ে যদি বা নকশালবাড়ি থেকে বামনপোখরির জঙ্গলে ঢুকিয়ে দিতে পারেন, সন্ধে নামলেই ফের দলটি হাজির হয়ে যাচ্ছে বাগডোগরা, নকশালবাড়ি কিংবা শিবমন্দির এলাকায়। পাকা ধানের খেতে নেমে বিঘার পর বিঘা শস্য নষ্ট করছে। শুক্রবার রাতভর দলটিকে তাড়া করে বনকর্মীরা বালাসন নদী লাগোয়া টাটারির জঙ্গলে তাড়িয়ে নিয়ে যান। শনিবার সন্ধ্যায় দলটি ফের নকশালবাড়ির পথে রওনা হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কার্শিয়াঙের ডিএফও ওয়াই টি এডেন বলেন, “১০-১২ দিন ধরে এমন চলছে। তরাইয়ে পাকা ধান খাওয়া ছাড়া বুনো হাতির পালটি নেপালে ঢুকতে চায়। তাহলে ফের বড়মাপের গোলমাল হতে পারে। সুকনা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের সাহায্য নিয়ে দলটিকে মহানন্দার জঙ্গলে ফেরানো চেষ্টা হচ্ছে।” ধান পাকলে বুনো হাতির পালের তরাইয়ের জঙ্গলে জমা হওয়া প্রতি বছরের চিত্র। এ বছরেই এই এলাকায় বুনো হাতির হামলায় মৃত্যুর ঘটনা দাঁড়িয়েছে ৪। পাকা ফসল ঘরে তোলার আগের হাতির পাল নেমে পড়ায় কৃষকদের মাথায় হাত। তার উপরে দফতর থেকে হাতি তাড়ানোর পটকা, সার্চ লাইট বা মশাল না-মেলায় ক্ষোভ আরও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত দলটিকে মহানন্দায় ফেরানোর দাবি তুলেছেন কৃষকেরা। নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ সুনীল ঘোষ বলেন, “হাতির অত্যাচার নিয়ে প্রতিদিনই নানা এলাকা থেকে অভিযোগ আসছে। সবচেয়ে সমস্যা হল, ক্ষতিপূরণের টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় ক্ষোভ বেড়েছে। বনকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।” কার্শিয়াঙের ডিএফও জানান, হাতি তাড়াতে আজ, সোমবার বৈঠকে বসছেন তাঁরা। জুন মাসে নেপালে চাষিদের ছোঁড়া গুলিতে ২টি বুনো হাতির মৃত্যুর পরে বনকর্মীরা প্রথম থেকে সতর্ক ছিলেন। নেপালে হাতির পাল ঢুকতে না-পেরে হামলা করছে, নকশালবাড়ির উত্তমছাট, পাহাড়গুমিয়া, কেষ্টপুর, হাতি ঘিষা, বাগডোগরার তারাবাড়ি-সহ নানা এলাকায়। সুকনা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি বা দুটি হাতিকে সহজেই তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরানো যায়। একশো হাতির পাল সামাল দেওয়া কঠিন।” |