জ্ঞাতিদের সঙ্গে পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হল এক জনের। গুরুতর জখম হয়েছেন তাঁর দাদা-সহ তিন জন। এক পক্ষ তৃণমূল সমর্থক এবং অন্য পক্ষ সিপিএম সমর্থক হওয়ায় হুগলির দাদপুরের মুসর গ্রামের এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রঙও।
নিহতের নাম আবুল কালাম মল্লিক (৪০)। সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে। গুরুতর জখম অবস্থায় আবুল কালাম এবং তাঁর দাদা নাসিরুল হককে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে আবুল কালামকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানেই শনিবার বিকালে তিনি মারা যান। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, পারিবারিক গোলমাল থেকেই ওই ঘটনা। একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিরুল এবং আবুল কালাম সিপিএম সমর্থক। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই দু’জনে ঘরছাড়া ছিলেন। শুক্রবার তাঁরা ফেরেন। জমিজমা নিয়ে জ্ঞাতিদের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফের বিবাদ বাধে। তা থেকে মারামারিও শুরু হয়ে যায়। নাসিরুলদের জ্ঞাতিরা তৃণমূল সমর্থক। সংঘর্ষের সময়ে হঠাৎই বহিরাগত বেশ কিছু যুবক লাঠি-রড নিয়ে নাসিরুলদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। নাসিরুল এবং আবুল কালামকে ঘর থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে। নাসিরুলদের জ্ঞাতিদের তরফেও দু’জন আহত হন। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। ইমামবাড়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিরুলের দু’টি হাত ভাঙে। আবুল কালামেরও ডান হাত এবং ডান পা ভেঙে যায়। কোমরেও চোট লাগে।
নাসিরুলের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, “জ্ঞাতিদের সঙ্গে বিবাদ দীর্ঘদিনের। কিন্তু আমরা সিপিএম করি বলে ওদের রাগ ছিল। তাই পরিকল্পিত ভাবে বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হল। দু’ভাইকে ও ভাবে মারা হল।” সিপিএমের দাদপুর লোকাল কমিটির সদস্য দীপালি মাঝিও বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে আমাদের দুই সমর্থকের উপরে হামলা চালাল তৃণমূল। ওরা মহিলাদেরও রেয়াত করেনি।” ঘটনাটি রাজনৈতিক নয় বলে দাবি করেছেন ধনেখালির তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্র। তিনি বলেন, “পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই ঘটনা। এতে দলের কোনও যোগ নেই।” |