অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে গুলি চলল হোয়াইট হাউসের বাইরে! আর সেই ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গেল বারাক ওবামার নিরাপত্তা নিয়েই। ওবামা দম্পতি যদিও এখন ওয়াশিংটনে নেই। তবু ঘটনাটির গুরুত্ব যে অপরিসীম, হাজার সাফাই দেওয়ার পরেও তা মানতে বাধ্য হয়েছে শহরের পুলিশ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ওয়াশিংটনে, হোয়াইট হাউস চত্বরের বাইরের রাস্তায় গুলির শব্দ পান কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীরা। কে গুলি চালিয়েছে, লক্ষ্য কে ছিলপ্রশ্ন রয়েছে সব কিছু নিয়েই। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের কাছে গুলি চলার ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছে মার্কিন প্রশাসন। কারণ এই ঘটনা দেশের মধ্যে ও বহির্বিশ্বে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। শনিবারই এর তদন্তভার দেওয়া হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইকে। তবে এটা ষড়যন্ত্র না বিচ্ছিন্ন ঘটনা, সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ গোয়েন্দারা।
মার্কিন পার্ক পুলিশের এক মুখপাত্র যদিও প্রাথমিক তদন্তে দাবি করেছেন, যে বা যারাই গুলি চালাক, তাদের লক্ষ হোয়াইট হাউস ছিল না। দু’টি গাড়ির আরোহী নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরে গুলি চালিয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। অ্যাপেক সম্মেলনে যোগ দিতে ওবামা দম্পতি এখন হাওয়াইয়ের পথে। তা ছাড়া, ঘটনাটি হোয়াইট হাউসের সীমানার বাইরে ঘটেছে। তাই প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। |
শুক্রবার এই রাস্তাতেই গুলি চলে। |
কিন্তু এ সব সাফাইয়ে যে চিঁড়ে ভিজবে না, সে কথাও ভাল ভাবে জানে মার্কিন পুলিশ। কারণ, বাড়িটা যখন দেশের প্রেসিডেন্টের, তখন তার কাছাকাছি কেউ অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে গুলি চালায় কী ভাবে, উঠেছে সেই প্রশ্নও। পুলিশি সাফাইয়ে যা চাপা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই যাবতীয় দাবিদাওয়ার পরেও পার্ক পুলিশের মুখপাত্রের সতর্ক বক্তব্য, “কারণ যাই হোক, হোয়াইট হাউসের এত কাছে গুলি চলার ঘটনা বিরল। সেই জন্যই আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”
মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসের কাছে কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউ থেকে গুলির আওয়াজ পান কর্তব্যরত অফিসারেরা। রাস্তাটি বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের বাইরে হলেও ‘ওয়াশিংটন মনুমেন্ট’ ও হোয়াইট হাউসের প্রধান সংযোগকারী পথ হওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীদের নজরের বাইরে নয়। গুলির শব্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা দেখেন, দু’টি গাড়ি কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউ দিয়ে কাছাকাছি রুজভেল্ট ব্রিজের দিকে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে জারি হয় রেডিও সতর্কবার্তা। আটকানো হয় রাস্তাটি।
পরে রুজভেল্ট ব্রিজের কাছেই একটি পরিত্যক্ত গাড়ি দেখতে পায় পুলিশ। ভিতর থেকে উদ্ধার হয় একটি অ্যাসল্ট রাইফেল। মার্কিন পুলিশের এক সূত্রের দাবি, রাইফেলটি একে-৪৭। পোড়া কার্তুজের খোল মেলে কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউতেও। প্রথমে পুলিশ কর্তারা জানিয়েছিলেন, শব্দটা গুলির কি না স্পষ্ট নয়। পরে জানান, গুলিই চলেছে। তবে উদ্ধার হওয়া অ্যাসল্ট রাইফেল থেকেই গুলি চলে কি না, তা নিয়ে ধন্দে প্রশাসন ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কর্তারা।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মুখপাত্র এডউইন ডোনোভানকে উদ্ধৃত করে একটি মার্কিন ওয়েবসাইট জানায়, প্রত্যক্ষদর্শীরা দুটি গাড়ির চালককে কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউয়ের কাছে পরস্পরকে লক্ষ করে গুলি চালাতে দেখেছে। একটি গাড়ি রাত ১১টা নাগাদ ওই রাস্তা থেকেই উদ্ধার হয়। পুলিশের ধারণা, রুজভেল্ট ব্রিজের কাছে উদ্ধার দ্বিতীয় গাড়িটি কিছু দিন আগেই চুরি করা হয়েছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গাড়িটি ব্রিজের উপর দাঁড় করিয়েই চালক নেমে ভার্জিনিয়ার দিকে দৌড়ে পালায়। |