চিকিৎসকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের এখন এমনই অবস্থা। পরিস্থিতি এমনই যে শিশু ও মেডিসিন বিভাগের বহির্বিভাগ এখন সপ্তাহে চার দিনের বদলে দু’দিন করে খোলা থাকছে। আপাতত, আরও দু’সপ্তাহ এই অবস্থা চলবে। সংশ্লিষ্ট দু’টি বিভাগের দু’জন চিকিৎসক ছুটিতে থাকার কারণেই সপ্তাহে চার দিন বহির্বিভাগ খোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। এক আধিকারিকের কথায়, “এখন এক জন ছুটি নিলেই পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসকের অভাবেই এই অবস্থা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক থাকলে এমন অবস্থা হত না।”
সমস্যার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছেন হাসপাতালের সুপার দেবাশিস পাল। তাঁর কথায়, “পরিষেবা সচল রাখার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্রের বক্তব্য, “দু’জন চিকিৎসক ছুটিতে থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছে। দু’জন মেডিক্যাল অফিসারকে খড়্গপুর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।” এতে অবস্থা খানিক স্বাভাবিক হবে বলে ধারণা তাঁর।
হাসাপাতালে চিকিৎসকদের যাওয়া-আসা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালও এর ব্যতিক্রম নয়। সময়মতো বহির্বিভাগে চিকিৎসকের না-আসা, ন্যূনতম পরিষেবা না-মেলার মতো অভিযোগ রয়েইছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে থেকেই যে ভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব, এখানে সে ভাবেই পরিষেবা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। তবে সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে শিশু ও মেডিসিন বিভাগের পরিষেবা দারুণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিশু বিভাগে দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। বহির্বিভাগ খোলা থাকার কথা সোম, মঙ্গল, বুধ ও শনিবার। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক ছুটিতে থাকায় সোম ও বুধবার বহির্বিভাগ খোলা রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
একই পরিস্থিতি মেডিসিনে। দু’জন চিকিৎসকের মধ্যে এক জন অসুস্থতার জন্য ছুটিতে রয়েছেন। ফলে সোম, মঙ্গল, শুক্র ও শনি---এই চার দিনের মধ্যে শুক্র ও শনিবার বহির্বিভাগ খোলা যাচ্ছে না। ডেবরা, নারায়ণগড়, কেশিয়ারি-সহ বিস্তীণর্র্ এলাকার মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পেতে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন। পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। এক রোগীর পরিজনের কথায়, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত বিকল্প ব্যবস্থা করা। কোন বহির্বিভাগ কবে খোলা থাকে, তা প্রায় সকলেই জানেন। এখন দু’দিন করে সংশ্লিষ্ট বহির্বিভাগ বন্ধ থাকলে অনেকেই সমস্যায় পড়বেন। দূর থেকে এসেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখা না-পেয়ে তাঁদের ফিরতে হচ্ছে।” হাসপাতাল সুপার বৃহস্পতিবার নিজে দীর্ঘক্ষণ জরুরি বিভাগে ছিলেন। তাঁর কথায়, “প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না-থাকার ফলেই এমন সমস্যা। বিষয়টি স্বাস্থ্যভবনেও জানানো হয়েছে।” |