পুজো থেকে ভাঙারাস, দুয়ার খুলেছে পর্যটনের
বাদকুল্লার দুর্গাপুজো, বগুলার কালী, কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী, নবদ্বীপের রাস কিংবা শান্তিপুরের ভাঙারাসবৃত্তটা প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে এল।
আর মাস দুয়েকের এই উৎসব-বৃত্ত ঘিরে সামান্য হলেও হালে পানি পেয়েছে নদিয়ার পর্যটন শিল্প। এক দিন এক রাতের ট্যুরে বেড়াতে আসা মানুষের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। ফলে নানা ভাবে উপকৃত হচ্ছে সেই সব এলাকার ছোট-বড় প্রায় সব ধরণের বাণিজ্য। এলাকার রিকশা চালক, অটো চালক থেকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হোটেল-রেঁস্তোরা, এমনকী ওই এলাকার খুচরো বা পাইকারি বাজারসকলেই উৎসব পর্যটনের সুবাদে লাভের কড়ি ঘরে তুলছে।
নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সাধারণ সম্পাদক গোকুলবিকাশ সাহা বলছেন, “কিছু দিন ধরে বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় উৎসবগুলোতে প্রচুর বাইরের মানুষ আসছেন। এটা সব ধরণের ব্যবসায়ীদের কিছু না কিছু বাণিজ্যের সুযোগ করে দিচ্ছে। বিশেষ করে মফস্সলের ভঙ্গুর অর্থনীতির পক্ষে এটা অত্যন্ত শুভ ইঙ্গিত।” শুরুটা হয়েছিল সেই দুর্গাপুজো দিয়ে। তার পর উৎসবের মরশুম যত গড়িয়েছে, ততই জমে উঠেছে উৎসবকে ঘিরে এই পর্যটন-বাণিজ্য।
রাজ্য হেটোলে ব্যবসায়ীদের সংগঠন বেঙ্গল হোটেলিয়ার্স-এর রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, “উৎসব পার্বণে হোটেল-লজ ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট উপকৃত হচ্ছেন। বিশেষ করে চলতি মরশুমে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী বা নবদ্বীপ-শান্তিপুরের রাসে ব্যবসা বেশ ভাল। আগেও মানুষ আসতেন। তবে তাঁরা গ্রামের মানুষ। চাষের মরশুম শেষ করে মেলা দেখতে বের হতেন। সেই ভিড়ের থেকে খুব দারুণ লাভ হত না। কেননা, তাঁরা চাল-ডাল বা চিঁড়ে-মুড়কি নিয়ে আসতেন। পথের ধারে, স্টেশনে যাত্রী শিবিরে রাত কাটিয়ে ফিরে যেতেন। এখন কিন্তু মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের কাছে সপ্তাহ শেষের ছুটি কাটানোর মত হয়ে উঠেছে এই সব উৎসব। অনেকেই আসছেন দূরের শহরগুলি থেকে। কলকাতা থেকেও পর্যটক আসছেন। ফলে বাণিজ্য হচ্ছে ভালই।”
মঙ্গলবার থেকেই নবদ্বীপ বা মায়াপুরের কোনও হোটেল, লজ বা ধর্মশালা ফাঁকা নেই। স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী নিখিল কুণ্ডু বলেন, “এখন মাথা কুটলেও হোটেলে ঘর মিলবে না। ঘরের জন্য যত দামই দিতে চান না কেন!” অন্য সময়ে যে ঘরের ভাড়া ২০০ টাকা, এখন সেখানে ৫০০-৬০০ টাকা ভাড়া। ৪০০ টাকার ধঘর ৭০০-৮০০ টাকা। দামী ঘর ১২০০ থেকে দেড় হাজার। প্রসেনজিৎবাবুর কথায়, “এই সব উৎসবের দিনে কোনও নির্দিষ্ট ভাড়া হয় না। চাহিদার কথা মাথায় রেখে হোটেল মালিকরা যেমন পারেন ঘরের দর হাঁকেন।”
ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম সাহা বলেন, “আগে মানুষ এত সহজে কিছুতেই বেরিয়ে পড়তেন না। এখন উৎসব পর্যটনের পিছনে প্রচার মাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। ফলে বহিরাগত মানুষও আসছেন সেই এলাকার উৎসবকে উপভোগ করার জন্য। যত মানুষ আসবেন, ততই বাড়বে উৎসবকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা। আর হচ্ছেও তাই।” উৎসব পর্যটনের প্রভাব অবশ্য ভালই বুঝতে পারছেন নবদ্বীপের রাসে বেড়াতে আসা মানুষগুলো। নবদ্বীপ ধাম স্টেশন থেকে পোড়ামা-তলা যাওয়ার রিকশা ভাড়া রাতারাতি দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গিয়েছে। ২০ টাকা ভাড়া এখন ৪০-৫০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। নবদ্বীপ ধাম থেকে গঙ্গার ঘাট রিকশা পিছু ১০০টাকা ভাড়া হাঁকছেন রিকশা চালকরা। ব্যবসার ভাল-মন্দ দু-দিকই তো আছে!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.