রাসের শোভাযাত্রা। আজ শুক্রবার, দাঁইহাটবাসীর কাছে সম্মান রক্ষার লড়াই। আর এই সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে ধর্ম-রাজনীতি মিলেমিশে একাকার দাঁইহাটে। পাশের শহর কাটোয়ার কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রাকে মাত করতে প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।
দাঁইহাট রাস উৎসব কমিটির সম্পাদক অঞ্জন দত্ত বলেন, “এক সময় দাঁইহাট ছিল জেলার গর্ব। এখন কাটোয়ার কাছে আমাদের সে গরিমা অনেকটাই হারিয়েছে। রাসের শোভাযাত্রায় দাঁইহাট শহরকে ফের জেতাতে চাই।”
দাঁইহাটের বাসিন্দা সহদেব দাস কিংবা দেবু পোদ্দাদের কথায়, “দাঁইহাটের রাসকে ভাল করতেই হবে। কারণ, এটা আমাদের কাছে ‘প্রেস্টিজ ফাইট’।” পুর-সদস্য অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলছিলেন, “রাস উৎসবের শোভাযাত্রা অনেক গুণে কাটোয়ার কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রার থেকে ভাল হয়। শোভাযাত্রার দিন আলোয় ডুবে যায় গোটা শহর।” শোভাযাত্রায় দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য পাঁচ জায়গায় পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং ছ’টি জায়গায় প্রাথমিক চিকিৎসা শিবির করছে পুরসভা ও দাঁইহাট রাস উৎসব কমিটি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ দাঁইহাট বাজার হয়ে সুভাষ রোড, স্টেশন রোড, চামপচা রোড, সমাজ বাড়ি দিয়ে শোভাযাত্রা যাবে। ওই রাস্তার নর্দমাগুলি অস্থায়ী ভাবে ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থাও হয়েছে। দর্শনার্থী সামলাতে প্রায় ৩০০ জন পুলিশের ব্যবস্থা থাকছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। |
নাটক-ভাঙরা-হানাবাড়ি দেখা যাবে দাঁইহাটে রাসের শোভাযাত্রায়। চন্দননগরের একটি দল নাটকের মাধ্যমে প্লাস্টিক বর্জন করা উচিত বলে দাঁইহাটবাসীকে সচেতনতার বার্তা দেবে। বৌদ্ধ সঙ্ঘের উদ্যোগে শোভাযাত্রায় এই নাটক পরিবেশিত হতে চলেছে। বড়কালী পুজো কমিটি দূষণ মুক্ত শহর গড়ে তোলার আহ্বান জানাবে। আলোকসজ্জার মাধ্যমে গণপতি ক্লাব তাদের শোভাযাত্রায় তুলে আনবে হানাবাড়ি। মহাপ্রভু, খামখেয়ালী-সহ বহু পুজো উদ্যোক্তাই এ বার আলোকসজ্জায় নজর কাড়বে বলে দাবি।
রাসে দাঁইহাট কেমন শোভাযাত্রা বের করে, সে দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে কাটোয়ার কার্তিক পুজোর উদ্যোক্তারাও। মুখে স্বীকার না করলেও চাপা উত্তেজনা টের পাওয়া গেল। দুই উদ্যোক্তা অমিত দাঁ, বিজয় অধিকারীদের কথায়, “দাঁইহাটকে টেক্কা দিতে কাটোয়া তৈরি আছে। কে সেরা, আগামী সপ্তাহেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
আপাতত বাগ্যুদ্ধ দিয়েই শুরু সেরার লড়াই। |