চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই পেট্রোলের দাম বাড়ানো নিয়ে নিজের অবস্থান আমূল বদলে ফেললেন ইন্ডিয়ান অয়েলের চেয়ারম্যান আর এস বুটোলা।
আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমলে এবং ডলারের সাপেক্ষে টাকা শক্তিশালী হলে, পেট্রোলের দাম কমবে বলে গতকালই আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই অবস্থান প্রায় ১৮০ ডিগ্রি বদলে ফেলে আজ (বুধবার) তাঁর দাবি, দাম কমানো তো দূর অস্ৎ। একমাত্র কেন্দ্র ভর্তুকি দিলে, তবেই আগামী দিনে পেট্রোলের দাম আর না বাড়ানোর কথা ভাবতে পারবেন তাঁরা। বুটোলার কথায়, “সরকার পেট্রোলকেও ভর্তুকির তালিকায় ঢুকিয়ে নিলে খুশি মনে আর দাম বাড়াব না আমরা।”
পেট্রোলের দাম এখন সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত। তাই সেখানে কেন্দ্রের ভর্তুকি দেওয়ারও প্রশ্ন নেই। তাই মনে করা হচ্ছে যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পেট্রোলের দাম বাড়ানো ছাড়া কার্যত কোনও উপায় নেই বলেই বার্তা দিতে চাইলেন বুটোলা।
এ দিনই চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর)-এর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করল ইন্ডিয়ান অয়েল। অন্য দুই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার মতো এই সময়ে বিপুল লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে তারাও। মোট ক্ষতির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৭,৪৮৫ কোটি টাকা।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষের দাবি, আর্থিক দশা এতটাই বেহাল যে, কিছু তেল শোধনাগার বন্ধ করার কথা ভাবতে হচ্ছে। টান পড়ছে তেল আমদানির টাকায়। তার উপর সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম পড়ে গিয়েছে প্রায় চার টাকা। এ দিনও টাকার বিনিময় মূল্য প্রায় ৭০ পয়সা কমায় ডলারের দাম ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। পৌঁছেছে গত ৩০ মাসের সর্বোচ্চ অঙ্কে (১ ডলার= ৫০.১৭/১৮ টাকা)। সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, ডলারের বিনিময় মূল্য মাত্র এক টাকা বাড়লেই আমদানি খাতে তাদের ব্যয় বাড়ে ১,৮০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে রয়েছে ডিজেল, কেরোসিন ও রান্নার গ্যাসে প্রতি দিন ১৮০ কোটি টাকা ‘আন্ডার রিকভারি’ (আমদানি খরচের তুলনায় ভর্তুকি দিয়ে কম দামে বিক্রি)-র বোঝা। যার জেরে চলতি বছরে সংস্থার দেনা দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই সব তথ্য তুলে ধরে বুটোলার ইঙ্গিত, অবস্থা সামাল দিতে প্রয়োজনে ফের পেট্রোলের দাম বাড়াতে বাধ্য হবেন তাঁরা। |