চলে গেলেন ভারতীয় ক্রিকেটের শেষ নবাব মনসুর আলি খান পটৌডি। ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটে এক মর্যাদা ও আভিজাত্যপূর্ণ অধিনায়কত্ব দিয়ে তিনি এক ধাপে বিশ্ব ক্রিকেটে সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন। তুখোড় ব্যাট করতেন, ফিল্ডিং করতেন দুর্দান্ত। আর সে জন্য ‘টাইগার’ ডাকনামটা অর্জিত। জন্ম ভোপালে ৫ জানুয়ারি ১৯৪১-এ, টেস্ট খেলেছেন ৪৬টি, ৬টি শতরান-সহ মোট রান ২৭৯৩। সর্বোচ্চ ২০৩ নট-আউট। ব্যাট করেছেন এখনকার মতো সর্বাঙ্গে বর্ম না-পরে, এক চোখে। এক মোটর দুর্ঘটনায় পটৌডির ডান চোখ চিরকালের জন্যে নষ্ট হয়ে যায়। ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলেছেন অক্সফোর্ড বিদ্যালয় এবং সাসেক্স কাউন্টির হয়ে। সে সময়ে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেট অধিনায়ক ছিলেন। বিদেশের মাটিতে টেস্টে ভারতের প্রথম জয় নিউজিল্যান্ডের ডুনেডিনে তাঁরই অধিনায়কত্বে। ভারতের টেস্ট ক্রিকেটকে সাবালকত্বে পৌঁছে দিয়ে পটৌডি স্বেচ্ছায় ছেড়ে এসেছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। |
কোচবিহার রাজবাড়ির সামনে রাজার কামানের পাশে তোলা পটৌডির ১৯৬৯ সালের ছবি। |
ছবি: বৃন্দাবন ঘোষ |
বাংলার ঘরে ঘরে কোজাগরি পূর্ণিমার দিনে সাড়ম্বরে নিষ্ঠাভরে লক্ষ্মীদেবীর পুজো হয়ে থাকে। উত্তর দিনাজপুর জেলার বিশেষ করে পূর্বভাণ্ডার, কমলপুর, মালকোট প্রভৃতি গ্রামে বহুদিন থেকে কোজাগরি পূর্ণিমার দিনে লক্ষ্মীপুজো ও মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কালিয়াগঞ্জ শহর থেকে উত্তর-পশ্চিম কোণে দুই কিলোমিটার দূরে পূর্বভাণ্ডার গ্রাম। অতীতে সেখানে প্রচুর শস্য উৎপাদন হত। ঘরে ঘরে শস্য মজুত করার গোলা বা ভাণ্ডার পরিলক্ষিত হত। সম্ভবত সেই ভাণ্ডার থেকে পূর্বভাণ্ডার গ্রামের উৎপত্তি। ঐশ্বর্য, সুখ, সমৃদ্ধির জন্য সেখানে একটি সুউচ্চ মন্দিরে প্রাচীন কালো পাথরের শিব-দুর্গার মূর্তিকে লক্ষ্মীনারায়ণ রূপে পুজো করা হয়ে থাকে। মানুষের সংসারে অসুখবিসুখ-অশান্তি লেগেই থাকে। দেশে হাজার হাজার মানুষ অশিক্ষা, কুসংস্কারের কারণে নানা বিপদের সম্মুখীন হয়। তাই দেবদেবীকে তুষ্ট করার জন্য নিত্যপুজো ও কোজাগরি পূর্ণিমায় বাৎসরিক পুজো অনুষ্ঠিত হয়। কোজাগরি পূর্ণিমায় ব্রাহ্মণের শুদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণ ভক্তবৃন্দকে আকৃষ্ট করে। এই পুজোকে উপলক্ষ করে সে দিন মন্দির প্রাঙ্গণে বড় মেলা বসে। মেলায় বাউল গানের আসর থাকে। রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদহ, নবদ্বীপ থেকে বহু শিল্পী এসে বাউল গান পরিবেশন করে থাকেন। বাউল গানের টানে বহু শ্রোতার সমাগম ঘটে।
|
কালচিনি ব্লকের গাঙ্গুটিয়ায় রয়েছে বৌদ্ধদের একটি গুম্ফা। যার নামকরণ হয়েছে টাসি ফুন্টসোলিং গুম্ফা। ১৯৩৬ সালে তৈরি এই গুম্ফাটি পরিদর্শন করে গেলেন এক পর্যবেক্ষক দল। কালচিনি থেকে নির্বাচিত জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য রামকুমার লামা জানান, পর্যবেক্ষক দলটি কালচিনি ব্লকের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, গাঙ্গুটিয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ গুম্ফা ও সেখানকার পিপুলগাছটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তিনি জানান, এই বিষয়টি বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামার গোচরেও আনা হয়েছে।
|
জনজাতীয়দের নিজস্ব উৎসব হল ছাতা উৎসব বা ছাতা পরব। গত ১৭ অক্টোবর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার হরসুরা গ্রামের আদিবাসী সমাজের উদ্যোগে পালিত হল ছাতা উৎসব। এ দিন সকাল থেকেই আদিবাসী সমাজের মহিলা ও পুরুষ দলে দলে হরসুরা মাঠে উপস্থিত হন। ঐতিহ্য অনুসারে একটি বাঁশের মাথায় একটি কাগজের ছাতা তৈরি করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়, তারপর তার তলায় ধূপধুনো দিয়ে চলে পুজো-আর্চা। পুজোর পাশাপাশি সারাদিন ধরে চলে মেলা ও নানা প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩২টি নৃত্যদল প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে। তা ছাড়া, ৮ দলের ফুটবল প্রতিযোগিতা ছিল উল্লেখযোগ্য। মেলা কমিটির সম্পাদক সুরেশ টুডু বলেন, আদিবাসী সমাজের এটি একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এ দিন আদিবাসী সমাজের সব মানুষ এই ছাতার তলায় হাজির থাকি সমাজের মঙ্গলের জন্য। |