|
|
|
|
|
খেলার খবর |
ফুটবল লিগ নিয়ে সমস্যা শ্রীরামপুরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
|
মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে একটি ক্লাবের রেষারেষির জেরে লিগ পরিচালনা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে শ্রীরামপুরে।
শ্রীরামপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের প্রথম ডিভিশন ফুটবল লিগের নকআউট পর্যায়ে একটি খেলা কোথায় হবে, তা নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত। লিগের খেলা থেকে নকআউটে ওঠে ৮টি দল। ক্রীড়া সংস্থা সূত্রের খবর, গত ২৬ সেপ্টেম্বর কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীরামপুর স্পোর্টিং বনাম রিষড়া ক্লাবের খেলা ছিল। খেলার দু’দিন আগে শ্রীরামপুর স্পোর্টিং চিঠি দিয়ে খেলা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করে। দু’টি ক্লাবের সম্পাদককে ডেকে আলোচনার মাধ্যমে ২৮ তারিখ নির্ধারিত হয়। ক্রীড়া সংস্থার দাবি, ওই বৈঠকেই বলে দেওয়া হয়, জয়ী ক্লাবকে পরদিনই সেমিফাইনাল খেলতে হবে চাঁপদানির ইন্দিরা ময়দানে।
২৮ তারিখের খেলায় শ্রীরামপুর স্পোর্টিং জিতে যায়। পরদিনই তাদের সেমিফাইনাল খেলা পরে নবগ্রাম সেবক সঙ্ঘের সঙ্গে। ক্রীড়া কর্তাদের বক্তব্য, ইন্দিরা ময়দানে খেলার চিঠি দু’টি ক্লাবের কাছেই পাঠানো হয়েছিল। সেই মতো নির্ধারিত দিনে সেবক সঙ্ঘ ওই মাঠে পৌঁছলেও শ্রীরামপুর স্পোর্টিং যায়নি। ফলে, সেবক সঙ্ঘ ওয়াকওভার পেয়ে ফাইনালে উঠে যায়। স্পোর্টিং গিয়ে উপস্থিত হয় তাদের ক্লাব সংলগ্ন শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে। তারা দাবি তোলে, ওই মাঠেই খেলার কথা বলা হয়েছিল। যদিও ওই দিন শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে অন্য সেমিফাইনাল খেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রীরামপুর স্পোর্টিং মাঠে হাজির হওয়ায় ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন বনাম ভদ্রকালী যুব সঙ্ঘের মধ্যে সেই খেলাটিও হয়নি। ইন্দিরা ময়দানে খেলা ফেলার কথা আদৌ জানানো হয়নি বলে শ্রীরামপুর স্পোর্টিংয়ের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে গত ১৯ অক্টোবর ক্রীড়া সংস্থার এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক বসে শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে সংস্থার অফিসে। সংস্থার কার্যকরী সভাপতি তথা রিষড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান দিলীপ সরকার এবং সংস্থার সহ সভাপতি তথা শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জগদ্ধাত্রী পুজোর পরে ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন বনাম ভদ্রকালী যুব সঙ্ঘের মধ্যে সেমিফাইনাল খেলাটি আবার হবে। ভদ্রকালী সেবক সঙ্ঘকে ওয়াকওভার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নড়চড় হবে না বলেও সহমত হয় কমিটি। অভিযোগ, এর পরেই সিদ্ধান্ত বদলের দাবিতে শ্রীরামপুর স্পোর্টিংয়ের এক দল যুবক কোলাপসিবল গেট আটকে দেয়। বিক্ষোভকারীরা দাবি তোলে, সেমিফাইনাল খেলার যে ‘ফিক্সচার’ দেওয়া হয়েছিল তাতে স্থান হিসেবে শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামের কথাই লেখা ছিল। এই নিয়ে হই-হট্টগোল শুরু হয়। ক্রীড়া কর্তাদের গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। শ্রীরামপুর স্পোর্টিংয়ের তরফে জানানো হয়েছে, খেলাকে ঘিরে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার জন্য ক্রীড়া সংস্থাই দায়ী। তারা স্পোর্টিংকে আদৌ কোনও চিঠি দেয়নি। এ ব্যাপারে শ্রীরামপুর স্পোর্টিং ক্লাবের সম্পাদকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনারও আবেদন করেছে শ্রীরামপুর স্পোর্টিং। আগামী ১৫ নভেম্বর সাধারণ সভায় বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা করা হবে বলে ক্রীড়া সংস্থা সূত্রের খবর। সংস্থার কার্যকরী সভাপতি দিলীপ সরকার বলেন, “মাঠের খেলায় যে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা, বহু ক্ষেত্রেই কারণে-অকারণে তা মাঠের বাইরে চলে আসছে। এতে খেলার ক্ষতি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলির এ ব্যাপারে নমনীয় হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রেও একটি ক্লাব ভুল করল। আবার গোলমালও করল।” ‘ক্লাবের দখল এক রাজনৈতিক নেতার হাতে চলে যাওয়ায় ক্লাবের ক্ষতি হচ্ছে’ বলে ক্লাবের অন্দরেই গুঞ্জন রয়েছে। এর মধ্যেই আবার ক্রীড়া সংস্থার এক যুগ্ম সম্পাদকের নামে ‘দুর্নীতি’ ও ‘অসচ্ছতা’র অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়েছে। কিন্তু ওই পোস্টারের নীচে কারও নাম দেওয়া হয়নি। মাঠের গণ্ডী ছাড়িয়ে রাস্তাতেও ওই পোস্টার সাঁটা হয়েছে এক্সিকিউটিভ মিটিংয়ের দিন গণ্ডগোলের পরে। ক্রীড়া সংস্থার একাংশের বক্তব্য, ব্যক্তিগত রাগ মেটাতেই ওই পোস্টার সাঁটা হয়েছে। তবে, সংস্থারই এক্সিকিউটিভ কমিটির কয়েক জন সদস্যের বক্তব্য, সংস্থার এক কর্তার ‘খারাপ আচরণ’ বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার জন্য দায়ী। |
|
|
|
|
|