সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হলেন দু’দলের ১৫ জন কর্মী-সমর্থক। বড়জোড়া থানার তাজপুরে সোমবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনায় পুলিশ পরে দু’পক্ষের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে দু’জন তৃণমূল কর্মী ও তিন জন সিপিএম কর্মী। ধৃতদের মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১১ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে পখন্নায় নভেম্বর বিপ্লবের স্মরণে অনুষ্ঠান ছিল। সেখান থেকে সিপিএমের কয়েক জন কর্মী রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। তাজপুরে তাঁরা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গণ্ডগোল বাঁধে। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের কার্যালয়ে তখন কয়েকজন তৃণমূল কর্মী ছিলেন। তাঁরা সিপিএম কর্মীদের উপরে ‘বিনা প্ররোচনায়’ চড়াও হয়ে মারধর করে। এমনকী সিপিএমের দু’জন কর্মীকে তাদের দালীয় কার্যালয়ের ভিতরে বেশ কিছু ক্ষণ আটক করে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে ওই দুই সিপিএম কর্মীকে উদ্ধার করে। |
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা তাজপুরে তাদের দলীয় কার্যালয়ের পাশ গিয়ে যাওয়ার সময়ে সেখানে তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী ছিলেন। আর সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা ছিলেন প্রায় ২০০ জন। তৃণমূলের কার্যালয়ে কম লোক দেখে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা হামলা চালায়। দু’পক্ষের মধ্যে মারপিটের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে রাতেই পৌঁছয়। তৃণমূলের দাবি ওই ঘটনায় তাদের আট জন ও সিপিএমের দাবি, তাদের সাত জন জখম হয়েছেন। পুলিশ জখমদের উদ্ধার করে প্রথমে বড়জোড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে হায়দর মণ্ডল, জব্বর মিদ্যা ও অরুণ বাউরি নামের তিন জন তৃণমূল কর্মীকে পরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের বড়জোড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক তরুণ রাজ অভিযোগ করেন, “আমাদের দলের কর্মীরা যাতে দলীয় কর্মসূচীতে অংশ না নেয় সে জন্য তৃণমূলের কর্মীরা অনের দিন আগে থেকেই হুমকি দিচ্ছিলেন। সোমবার আমাদের কর্মীরা নভেম্বর বিপ্লবের স্মরণের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার সময় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে পরিকল্পনা করে ওদের উপরে হামলা করা হয়। তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে।” বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল নেতা অলোক মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, “আমরা হামলা করিনি। সিপিএমের কর্মীরাই আমাদের দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায়। আমাদের কর্মীদের মারধর করে সিপিএম এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রাজু মণ্ডল ও আইনুর মণ্ডল নামে দু’জন তৃণমূল কর্মী এবং বিজয় সিং, কার্ত্তিক বাগদি ও হারু বাগদি নামে তিন জন সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই তাজপুরের বাসিন্দা। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। |