রাত পোহালেই রাস। তাই শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত নবদ্বীপ শহর। এক দিকে প্রতিমার শেষ রূপটান। অন্য দিকে, গোটা শহরের ২৪টি ওয়ার্ডককে চকচকে চেহারা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা। এক কথায়, যুদ্ধকালীন তৎপরতা।
পুরসভা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, খেয়াঘাট, পুলিশ-প্রশাসনের সব দফতরে এখন সাজো সাজো রব। বর্ষায় নষ্ট হয়ে যাওয়া রাস্তায় নতুন পিচের প্রলেপ। নদীপাড়ের ঝোপঝাড় কেটে সাফ। নর্দমার ধারে ব্লিচিং-এর সদ্য ফেলা সাদা গুঁড়ো। বাতাসে ঘোর উৎসব গন্ধ। |
এ বারের রাসে শহরের রাস্তা মেরামতে পুরসভা এক কোটি টাকা খরচ করেছে। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “শহরের রাস্তাঘাট প্রবল বর্ষায় যে ভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার সংস্কার সম্পূর্ণ হয়নি। এ বার রাসের আগে এক কোটি টাকা ব্যয় করেছি পথঘাট সারাতে। যে টুকু হয়নি তা পরে হবে।”
পুরসভার তরফে রাসের শোভাযাত্রার দিন শহরের বিভিন্ন নিষ্প্রদীপ এলাকায় আলোর ব্যবস্থা করতে ৫০টি জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বহিরাগত তীর্থযাত্রীদের জন্য ৪টি বড় ত্রাণশিবির তৈরির কাজও শেষ। নিরঞ্জনের সমস্যা মেটাতে পুরসভা তৈরি করেছে নিরঞ্জনের একটি নতুন ঘাট। পুরপ্রধান বলেন, “প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা ওই নিরঞ্জনের ঘাট দূষণমুক্ত রাখতে ক্রেন-সহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ৮টি স্বাস্থ্য শিবির।” মঙ্গলবার বিকালে নদিয়ার সদর মহকুমাশাসকের সভাপতিত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করা হয়। মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “আমরা এখন উৎসবের শেষ মূহুর্তে। শেষ মূহুর্তের অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |
নবদ্বীপের বিভিন্ন পাড়ার ছবি |
যাত্রী ভিড় সামলাতে নবদ্বীপ জলপথ পরিবহন সমবায় সমিতির তরফে মুরারি হালদার বলেন, “এ বার ১৭টি বড় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই সব নৌকায় ৩০০-৪০০ জন যাত্রী বহন ক্ষমতা রয়েছে। নবদ্বীপ, মায়াপুর, স্বরূপগঞ্জের মধ্যে ওই সব নৌকা যাতায়াত করবে। উৎসবের কয়েকটা দিন কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই, যতক্ষণ লোক থাকবে নৌকা চলাচল করবে ততক্ষণ।”
তবে শোভাযাত্রার দিন শহরের বিদ্যুত সরবরাহ অক্ষুন্ন থাকবে কি? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বিদ্যুৎ বন্টন দফতর। বিদ্যুৎ দফতর, কেন্দ্রীয় রাস উৎসব কমিটি, পুজোর উদ্যোক্তরা একে অন্যের দিকে আঙুল দেখাচ্ছেন। তবে মহকুমাশাসক বলেন, “আমরা বিদ্যুত দফতরের সঙ্গে কথা বলে আরও বেশি এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ করার চেষ্টা করছি।”
|
ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। |