|
|
|
|
জামবনিতে সিপিএম নেতা খুন, ধোঁয়াশা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
জঙ্গলমহলে আবার খুন। এ বার এক সিপিএম নেতা। শুক্রবার রাতে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের জামবনি এলাকায়। নিহতের নাম মানিক মান্ডি (৪৪)। তিনি সিপিএমের স্থানীয় আস্তাপাড়া শাখা কমিটির সম্পাদক।
কিন্তু কারা রয়েছে এই খুনের পিছনে, কী-ই বা উদ্দেশ্য, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় দল, পরিবার, পুলিশ---সব মহলই। কোনও রাজনৈতিক নেতা-কর্মী খুনে অবধারিত ভাবে বিরুদ্ধ রাজনৈতিক শিবিরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলার যে রেওয়াজ তৈরি হয়েছে রাজ্যে, মানিকবাবুর খুনের ঘটনায় তেমনটা হয়নি। মাওবাদীদেরও সরাসরি দায়ী করেনি কোনও পক্ষ। খুনের এই ঘটনা আদৌ ‘রাজনৈতিক’ নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতার জের, তা-ও অস্পষ্ট।
জামবনির ধড়সা অঞ্চলের কুকড়াখুপি গ্রামে বাড়ি মানিকবাবুর। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলে আবাসিক স্কুলের পড়ুয়া। চাষাবাদই ছিল জীবিকা। পারিবারিক সূত্রের বক্তব্য, শুক্রবার স্থানীয় লোহাডিহি গ্রামে মামার বাড়ি গিয়েছিলেন মানিকবাবু। সন্ধ্যায় সাইকেলে কুকড়াখুপির দিকে রওনা হন। কিন্তু বাড়ি ফেরেননি। শনিবার সকালে গ্রামের অদূরে ডুলুং নদীর ধারে তাঁর গুলিবিদ্ধ ও কোপানো দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফেরার পথেই তাঁকে খুন করা হয় বলে ধারণা পুলিশের। কাছেই মোরাম রাস্তার ধারে রক্ত এবং কার্তুজের দু’টি খালি খোল দেখে পুলিশের অনুমান, সেখানেই খুন করে দেহটি নিয়ে যাওয়া হয় নদীর ধারে। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার গৌরব শর্মার বক্তব্য, “খুনের কারণ স্পষ্ট নয়। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এ দিন পুলিশ-কুকুরও আনা হয়েছিল ঘটনাস্থলে। |
|
ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
নিহত মানিকবাবুর স্ত্রী-মেয়েরা কথা বলার অবস্থায় নেই। আর তাঁর দল সিপিএমের জামবনি জোনাল কমিটির সম্পাদক অমর বসুও এই ঘটনায় ‘বিভ্রান্ত’। তাঁর বক্তব্য, “কারা খুন করেছে স্পষ্ট নয়। তবে খুনের ষড়যন্ত্রে স্থানীয় লোকজনই রয়েছে বলে মনে হয়। মাওবাদীরা খুন করলে পোস্টার দেয়। তেমন কিছুও মেলেনি। তৃণমূলের লোকজন রয়েছে কি না, তা-ও নির্দিষ্ট নয়। পুলিশি তদন্তেই জানা সম্ভব, কারা, কেন মারল মানিকবাবুকে।” খুনের প্রতিবাদে আজ, রবিবার জামবনি ব্লকে ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিয়েছে সিপিএম।
এলাকায় মাওবাদী প্রভাব থাকলেও ‘জনপ্রিয়’ মানিকবাবুকে কোনও দিনই এলাকা ছাড়া হতে হয়নি বলে সিপিএম সূত্রেই জানা গিয়েছে। ধড়সা অঞ্চলটি ঝাড়খণ্ড পার্টিরও শক্তঘাঁটি। ঝাড়খণ্ড পার্টির স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিধো কিস্কুও বলেন, “মানিকবাবু জনপ্রিয় ছিলেন। কারও সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল না।” ইদানীং তৃণমূলের প্রভাব বাড়ছিল এলাকায়। মানিকবাবু আবার সম্পর্কে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বুদ্ধেশ্বর টুডুর শ্যালক। যিনি কিছু দিন আগে ঝাড়খণ্ড পার্টি ছেড়েই তৃণমূলে এসেছিলেন। সেই বুদ্ধেশ্বরবাবুর বক্তব্য, “আমাকে চাপে ফেলতে বিরুদ্ধ কোনও গোষ্ঠী এই খুন করে থাকতে পারে।” |
|
|
|
|
|