ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু মিছিলের বিরাম নেই।
শনিবার ডুয়ার্সের জলদাপাড়া বনাঞ্চল লাগোয়া মাদারিহাটে ট্রেনের ধাক্কায় ফের হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এ দিন সন্ধে সাতটা নাগাদ গুয়াহাটি থেকে রাঁচিগামী ডাউন রাঁচি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় পূর্ণ বয়স্ক ওই হাতিটি মারা যায়। রাতের অন্ধকারেই বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরাই জানান, হাতিটির বয়স প্রায় ১৫ বছর।
ঘটনার পর দলের অন্য সাতটি হাতি ইঞ্জিনের পাশে রেল লাইনের উপরে উঠে মৃত হাতিটিকে ঘিরে থাকায় আটকে পড়ে ট্রেনটি-ও। বনকর্মীরাও তাই বেশ কিছুক্ষণ কাছাকাছি ঘেঁষতে পারেননি।
উত্তরবঙ্গের বনপাল বিপিন সুদ বলেন, “অন্য হাতিরা ঘিরে থাকায় মৃত হাতিটির সামনে পৌঁছতে বনকর্মীদের বেশ সময় লাগে। আমরা বার বার রেল কর্তৃপক্ষকে ওই রেলপথে নির্দিষ্ট গতিতে ট্রেন চালাতে বলি। জানি না এ ক্ষেত্রে ট্রেনটির গতিবেগ কত ছিল।” রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অলকানন্দা সরকার বলেন, “ট্রেনটি এ দিন রাঁচি যাচ্ছিল। সেই সময় আচমকা লাইনের উপর একটি হাতি উঠে আসে। ট্রেন চালকের তখন কিছু করার ছিল না। ঘটনাস্থলেই হাতিটি মারা যায়।” তিনি জানান, এ ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে ১৫ টি হাতির একটি দল জলদাপাড়া উত্তর রেঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে। প্রতি দিন সন্ধ্যায় হাতির দলটি খাবারের খোঁজে হলং-সহ আশেপাশের গ্রামগুলিতে হানা দিচ্ছে। এ দিনও হাতির দলটি সন্ধ্যা নামতে লাইন পেরিয়ে গ্রামে ঢুকছিল। সে সময় দলের ওই মাদি হাতিটি ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। গত দু-দিন ধরে সিগন্যালিং ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য নিউ কোচবিহারের বদলে ট্রেনগুলি ডুয়ার্সের ভেতর দিয়ে চলাচল করছে। রেল দফতর জানিয়েছে, এই ট্রেনটি অবশ্য বরাবর ডুয়ার্সের জঙ্গলের ভেতর দিয়েই চলাচল করে।
আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “ওই লাইনে এত বেশি ট্রেন যখন যাতায়াত করছে তা হলে বনকর্মীরা কেন হাতির গতিবিধির উপর লক্ষ্য রাখছিলেন না। ঠিক মত নজরদারি করলে হাতির মৃত্যু ঠেকানো যেত।” |