প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কূটনৈতিক চালেও কাজ হল না। ভারতকে বাণিজ্যে সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ বা এমএফএন মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করল না পাকিস্তান। উপরন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসূফ রাজা গিলানি জানিয়ে দিলেন বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে দু-দেশের সম্পর্ক ভাল করার চেষ্টা হচ্ছে বলে এমন ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই যে পাকিস্তান কাশ্মীর ইত্যাদি প্রশ্নে অবস্থান পরিবর্তন করছে।
পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করতে কাল মনমোহন পাকিস্তানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তা সত্ত্বেও গিলানি আজ জানিয়ে দিয়েছেন ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, “দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করার জন্য পাক বাণিজ্য মন্ত্রককে পরামর্শ দিয়েছে পাক মন্ত্রিসভা। পরিস্থিতি অনুকূল হলে ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করা হবে।”
পাকিস্তান অস্বীকার করলেও চাপ বজায় রাখতে ভারত আজও তাতে তেমন আমল দিতে চায়নি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব রঞ্জন মাথাই আজ বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক স্থাপন করতে চায় পাকিস্তান। এ নিয়ে ওঁদের মন্ত্রিসভার সম্মতি আছে। ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়া তো তারই অঙ্গ।”
গত বুধ বার পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফিরদৌস আওয়ান ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সে কথা পাকিস্তানের সরকারি ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেই সংশ্লিষ্ট অংশটি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই বিভ্রান্তি। এ দিকে, সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধিতায় নেমে পড়েন পাকিস্তানের চরমপন্থীরা। বিশেষ করে ক্ষুব্ধ হন পঞ্জাবের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়া হলে এ দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং ও রাসায়নিক শিল্পে বড়সড় ধাক্কা লাগবে। সে জন্যই গিলানি ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়ার কথা জানাতে পারছে না বলে মনে করছেন অনেকে।
সেনাবাহিনীও এই সিদ্ধান্তে সম্মত কি না সে প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। গিলানি বলেছেন, “বাণিজ্য মন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভারতকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য। দিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে তা কার্যকর করা হবে।” ভারত-পাক বাণিজ্যিক সম্পর্কে খোলা হাওয়া এলে তাতে পাকিস্তান লাভবান হবে বলেই মনে করছেন গিলানি। চিনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “সীমান্ত নিয়ে চিনের সঙ্গে ভারতের যথেষ্ট বিবাদ রয়েছে। কিন্তু এর প্রভাব দু-দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নষ্ট করেনি।” |