ট্রেড ইউনিয়নগুলির ঐক্যবদ্ধ ‘জেল ভরো’ আন্দোলনে ফাটল বাড়ল আরও। রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়ে গেল সিপিএম ও সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে।
ট্রেড ইউনিয়নগুলি ৮ নভেম্বর জেল ভরো আন্দোলনের ডাক দিয়েছে জাতীয় স্তর থেকে। কিন্তু সিটু তাতে পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসের বিষয়টি জুড়ে দেওয়ায় সিপিআই(এমএল) এবং এসইউসি-র শ্রমিক সংগঠন আপত্তি তুলেছে আগেই। কলকাতায় তারা আলাদা ভাবে কর্মসূচি নেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। একই কারণে কংগ্রেসের আইএনটিইউসি-র যোগদানও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সিটুর কারণে আন্দোলনের ঐক্যে এ ভাবে ফাটল ধরায় ক্ষুব্ধ সিপিআইয়ের এআইটিইউসি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্ত আজ এই প্রসঙ্গে বলেন, “যে বিষয়ে সহমতে ব্যাঘাত ঘটছে, তা সর্বভারতীয় আন্দোলনের কর্মসূচিতে ঢোকানোর কোনও প্রয়োজন ছিল না। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে তা নিয়ে আলাদা করে রাজ্য স্তরে আন্দোলন হতে পারত।”
সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু-র রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, “কথা বলেই রাজ্য স্তরে এই বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। তখন কেউ আপত্তি তোলেননি।” কিন্তু গুরুদাসবাবুর দাবি, এআইটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক খোদ রঞ্জিৎ গুহ এতে আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু তা শোনা হয়নি। রাজ্যের নেতারা যদি রাজি হয়েও থাকেন, তা হলেও তিনি একমত নন। শ্যামলবাবুর জবাব, “আমি সব বৈঠকেই উপস্থিত ছিলাম। কেউ কোনও আপত্তি করেছেন বলে তো শুনিনি।”
অন্য সংগঠনগুলি আপত্তি তুললেও তাঁরা যে রাজ্যের সন্ত্রাস নিয়ে নিজেদের অবস্থান থেকে নড়ছেন না, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন শ্যামলবাবু।
তিনি বলেন, “কেউ যদি মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাস নেই, হিংসা নেই, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা যুক্তিসঙ্গত নয়, তা হলে তাঁরা আন্দোলন করবেন না।” পরোক্ষে তিনি এই প্রশ্নও তুলেছেন, সিপিআই কি পশ্চিমবঙ্গের সন্ত্রাস নিয়ে সহমত নয়? গুরুদাসবাবুর জবাব, “হিংসার বিষয়ে সহমত নই, তা আমি বলিনি। কিন্তু একটা স্থানীয় বিষয়, তা যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, সেটা আমরা সর্বভারতীয় কর্মসূচিতে আনব কেন? বিশেষত অন্য অনেকে যেখানে এর বিরোধিতা করছেন!” সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন আবার বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর যুক্তি, “কেন্দ্রীয় স্তরে গৃহীত কর্মসূচি রাজ্য বা জেলা স্তরেও কার্যকর হবে।” তপনবাবু মনে করেন, রাজ্য স্তরে দু’একটা জায়গায় অল্পবিস্তর মতপার্থক্য হলেও জাতীয় স্তরের আন্দোলনে এর তেমন প্রভাব পড়বে না। |
জমির সব তথ্য দেবে ‘বাংলার ভূমি’ সাইট
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সারা বাংলার কোথায় কোন জমি কার হাতে কী অবস্থায় আছে? উত্তর মিলবে ‘বাংলার ভূমি’ ওয়েবসাইটে। জমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য রাজ্য সরকার ওই ওয়েবসাইট চালু করছে। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের ৩৪১টি ব্লকের ৩৮০০০ মৌজার যে-কোনও জমির শেষ তথ্য জানা যাবে ওই ওয়েবসাইটে। তার জন্য আর ব্লকের ভূমি সংস্কার অফিসে যেতে হবে না। বিভিন্ন এলাকায় রোজকার জমি কেনাবেচার তথ্যও থাকবে ওয়েবসাইটে। শুক্রবার ভূমি সংস্কার দফতরে ওয়েবসাইটটি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে জমির মালিকানা-সহ সমস্ত তথ্য কম্পিউটারে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার পাঁচ বছর আগে দেশে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রকল্পের নাম ‘জাতীয় ভূমি তথ্য আধুনিকীকরণ কর্মসূচি’। এর জন্য কেন্দ্র বেশ কিছু বছর ধরে রাজ্যকে তাগাদা দিলেও ফ্রন্ট সরকারের আমলে তা শেষ করা যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর হওয়ার পরেই এই প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। কর্মসূচি দ্রুত রূপায়ণের জন্য সম্প্রতি ভূমি সংস্কার দফতরের সচিবকে কড়া চিঠি পাঠায় কেন্দ্র। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়। রাজ্য ভূমি সংস্কার দফতর থেকে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে জমির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য কম্পিউটারে তোলার কাজ শুরু হয় বাম আমলে। কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ও প্রশাসনিক বাধায় তা কার্যকর হয়নি বলে দফতরের একাংশের অভিযোগ। কারা বাধা দিয়েছিল? অভিযোগকারীদের বক্তব্য, মূলত বাধা এসেছিল বিভিন্ন ব্লকের ভূমি দফতরের অফিস থেকেই। |