সেচ দফতর বরাদ্দ করল দেড় কোটি
ময়াগ্রাম ভাঙছে, পদ্মায় তলিয়ে গেল ২৫টি বাড়ি
তৈরির তিন মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়ল রাজ্য সেচ দফতরের বাঁধানো পদ্মার পাড়ের পাথরের ‘স্পার’। মুর্শিদাবাদের লালগোলা ব্লকের ময়া গ্রামে রবিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে এই ভাঙন। জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “২৫টি বাড়ি পদ্মার ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। আরও ১৫টি বাড়ি যে কোনও সময়ে ভাঙনের গ্রাসে পড়তে পারে। ওই এলাকা থেকে ৪০টি পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এই এলাকার ভাঙন মোকাবিলায়। রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “ময়ার পরিস্থিতি ভয়াবহ। ৪১৮ মিটার বাঁধানো ‘স্পার’-এর মধ্যে ১০০ মিটার পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাকি অংশও। রাজ্য সেচ দফতর ইতিমধ্যেই একটি দেড় কোটি টাকার পরিকল্পনা বরাদ্দ করেছে। বস্তায় বালি ভরে নদীতে ফেলা হবে।”
তিনি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে কাজটি করতে। তবে রাজ্য সেচ দফতরের কর্মীরাও তৈরি রয়েছেন।”

পদ্মার গ্রাস। সোমবার ময়াগ্রামে ছবিটি তুলেছেন অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
মানসবাবু বলেন, “ওই এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এলাকার মানুষজনও এই নিয়ে ক্ষুব্ধ। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমি জঙ্গিপুরের সেচ দফতরকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে আর কোনও ঘরবাড়ি না ভাঙে।” তাঁর বক্তব্য, “যে সব ঠিকাদার এই সব কাজ করেছেন, দরকার হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলাশাসকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আপাতত ভাঙন রুখতে জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ করতে বলা হয়েছে জেলাশাসককে।”
ভাঙন দুর্গতদের অবশ্য প্রধান ক্ষোভ, ইতিমধ্যে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও ত্রাণ পাওয়া যায়নি। সোমবার দুপুর পর্যন্ত কোনও খাবার মেলেনি। মেলেনি ত্রিপলও। জেলাশাসক বলেন, “আমি বিডিওকে নির্দেশ দিয়েছি, ভাঙন দুর্গতদের চিঁড়ে চাল ত্রিপল দিতে।”
ভাঙনরোধের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসনও। জেলাশাসক বলেন, “ভাঙনরোধের কাজে ওই এলাকায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আমি সেচ দফতরের পদস্থ কর্তাদের বারবার ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারপরেও ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি পাথরের স্পারের অংশ যে ভাবে ভেঙে পড়ল, তাতে মানুষের ক্ষোভ স্বাভাবিক।

জেলাশাসককে ঘিরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।

ঘর হারিয়ে অস্থায়ী আশ্রয়ে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলা হবে ওই এলাকায়। প্রাথমিক ভাবে যা পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে সাড়ে ৪ লাখ বালি বোঝাই বস্তা লাগবে। এই দিন জেলাশাসক ময়ার পদ্মাপাড়েই ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন। তখনই তিনি সেচ দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্তার উদাসীনতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই দিন জেলাশাসকের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন লালগোলা পঞ্চায়েতের সভাপতি সাজাহান আলিও। তাঁর অভিযোগ, “তিন মাসের মধ্যে স্পার ভেঙে পড়ার পিছনে রয়েছে দুর্নীতি। বর্ষাকালে কাজ করার ফলেই এই অবস্থা।” এলাকার বিধায়ক কংগ্রেসের আখরুজ্জামান বলেন, “দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়ার ব্যাপারে তৎপরতার অভাব রয়েছে। তার সঙ্গে ভাঙন রোধে দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক সক্রিয়তার অভাবও ক্ষোভের কারণ।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.