মোটরবাইকের পিছনে গাড়ির ধাক্কা মেরে উল্টে আরোহীকেই চড় কষানোর অভিযোগ উঠল চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে।
ঘটনা সোমবার দুপুরের। হুগলির আরামবাগে গৌরহাটি মোড়ের কাছে একটি বাইকে ধাক্কা দেয় বিধায়ক তপন মজুমদারের গাড়ির। তা নিয়ে বাইক আরোহীর সঙ্গে তকাতর্কি বাধে চালকের। তখনই গাড়ি থেকে নেমে বিধায়ক বাইক আরোহীকে চড় কষান বলে অভিযোগ।
আরামবাগের নতুনবাজারে এ দিন তৃণমূলের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। তারই উদ্বোধন সেরে গাড়ি নিয়ে কলকাতার দিকে রওনা দেন তপনবাবু। একই রাস্তায় মোটর বাইক যাচ্ছিলেন গোঘাটের কাঁঠালি গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন সেনাকর্মী অজয় নন্দী। তখনই ধাক্কা লাগে। তবে বিধায়কের দাবি, তাঁর গাড়ির চালককেই থাপ্পড় মেরেছেন বাইক আরোহী। দুপুরেই দু’পক্ষ থানায় অভিযোগ করে। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরামবাগের এসডিপিও আকাশ মাগাড়িয়া। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলা ১২টা নাগাদ গৌরহাটি মোড়ের কাছে অজয়বাবুর বাইককে পিছন থেকে ধাক্কা মারে তপনবাবুর গাড়ি। অজয়বাবু জানান, সামনে ট্রাফিক জ্যাম থাকায় বাইক দাঁড় করিয়েছিলেন। পিছন থেকে একটি গাড়ি এসে ধাক্কা মারে। ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীর কথায়, “গাড়ির চালক বলেন, পিছন থেকে তাঁকে অন্য গাড়ি ধাক্কা মারায় এমনটা ঘটে গিয়েছে। কিন্তু সে সময়ে ওই গাড়ির পিছনে অন্য কোনও গাড়ি ছিল না। আমি বলি, আপনি ভুল করেছেন। গাড়ি থেকে নেমে এসে ক্ষমা চান।” অজয়বাবুর অভিযোগ, এ কথা শুনে গাড়িতে বসে থাকা এক ব্যক্তি নেমে এসে সটান তাঁর গালে চড় কষিয়ে দেন। হম্বতম্বি করে বলতে থাকেন, আমি কে জান?” ওই গাড়িতে আরও কয়েক জন ছিলেন। তাঁরাও নেমে এসে অজয়বাবুকে ধাক্কাধাক্কি করেন বলে অভিযোগ। বাইকের চাবি ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
অজয়বাবু পরে বিধায়কের পরিচয় জানতে পারেন। গোলমালের সময় তপনবাবু তাঁকে আরামবাগের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিনয় দত্তের ‘দালাল’ বলে কটূক্তি করেন বলেও অভিযোগ অজয়বাবুর। ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীর কথায়, “রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। এক জন জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে অদ্ভূত অভিজ্ঞতা হল।” ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নাসিরুল ইসলাম, চিরঞ্জিত রায়, নাজির মল্লিক, সরিফুল ইসলামদের বক্তব্য, বিধায়কের গাড়িই অন্যায় ভাবে ধাক্কা মেরেছিল বাইকের পিছনে। উল্টে তাঁরাই আবার হেনস্থা করলেন বাইক আরোহীকে। স্থানীয় কয়েক জন প্রতিবাদ করতে গেলে বিধায়কের নিরাপত্তীরক্ষীরা তাঁদের সরে যেতে বলেন।
অন্য দিকে তপনবাবুর দাবি, “আমি বাইক আরোহীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলাম, ‘কিছু ক্ষতি হয়ে থাকলে বলুন। আমি ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেব।’ কিন্তু উনি আমার গাড়ির চালককে মারধর শুরু করলেন।” অজয়বাবুকে চড় মারা কিংবা বাইকের চাবি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। তাঁর কথায়, “ওই ব্যক্তিকে আমি পুলিশের হাতে তুলে দিতেই পারতাম। তা করিনি। আমার ভালমানুষীর সুযোগ নিয়ে অপদস্থ করতে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।”
|