বন্ধ ঘরে মায়ের নলিকাটা দেহ, খুন ছেলেও
শোওয়ার ঘরের ভিতর থেকে মিলল মা ও ছেলের রক্তাক্ত দেহ। গুরুতর জখম অবস্থায় মেঝেয় পড়েছিলেন বাবা। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মহম্মদবাজার থানার বসন্তপুর গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, শোওয়ার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ফলে কী ভাবে খুন হলেন মা-ছেলে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
নিহতেরা হলেন চন্দনা পাল (৩০) ও তাঁর ৯ বছরের ছেলে শৌভিক। চন্দনাদেবীর স্বামী উত্তম পালকে সিউড়ি
চন্দনাদেবীর স্বামী উত্তম পাল
সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চন্দনাদেবীকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে। শৌভিকের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। উত্তমবাবুর মাথায়ও ৫-৬ জায়গায় ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার নিশাত পারভেজ বলেন, “কী ভাবে মা-ছেলে খুন হলেন, উত্তমবাবুই বা কী ভাবে জখম হলেন পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। যে ঘরে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে কোনও ধারালো অস্ত্র পাওয়া যায়নি।” ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ কার্যত অন্ধকারে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এখন অনেক কিছু নির্ভর করছে উত্তমবাবুর বয়ানের উপরে। কিছুটা সুস্থ হলেই তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে। তার পরে স্পষ্ট হবে, রাতে ঠিক কী হয়েছিল।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বসন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা উত্তমবাবুরা চার ভাই, এক বোন। বোনের আগে বিয়ে হয়েছে। মেজদা অনিল পাল উত্তমবাবুর সঙ্গে থাকেন। সেজোভাই সপরিবার কিছুটা দূরে থাকেন। সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, উত্তমবাবুদের মাটির দেওয়াল, টিনের ছাউনি দেওয়া দোতলা বাড়ির সামনে পড়শিদের জটলা। নীচের বারান্দায় গ্রিল। বাড়ির উঠোনও পাঁচিলঘেরা। যে ঘরে খুন হয়েছে, সেখানে চাপচাপ রক্ত। বিছানা এলোমেলো। খাটের পায়া ভাঙা। পড়শিদের দাবি, রবিবার রাতে উঠোনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। গ্রিলের গেটে তালা দেওয়া, দোতলায় উত্তমবাবুদের শোওয়ার ঘরও ভিতর থেকে বন্ধ ছিল।
ঘর থেকে উদ্ধার হয় চন্দনা পাল ও তাঁর ৯ বছরের
ছেলে শৌভিকের দেহ। ঘর জুড়ে ছড়িয়েছিল রক্ত।
নীচের ঘরে ছিলেন অনিলবাবু। পুলিশকে তিনি জানান, গভীর রাতে চন্দনাদেবীর আর্ত চিৎকার শুনে তাঁর ঘুম ভাঙে। তিনি উপরে ছুটে যান। শোওয়ার ঘর বন্ধ থাকায় তিনিও চিৎকার শুরু করেন। অনিলবাবুর দাবি, “চন্দনা ‘আমাকে মেরো না, বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিল। ভেবেছিলাম, চোর এসেছে। আমিও চেঁচাই।” প্রতিবেশী বিষ্ণুপদ পাল, দেবাশিস পাল বলেন, “মাঝ রাতে ‘চোর, চোর’ চিৎকার শুনে অনেকে ছুটে যাই। অনেক ডাকাডাকিতেও সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে দেখি বীভৎস দৃশ্য।” উত্তমবাবুর খুড়তুতো ভাই সঞ্জয় পাল বলেন, “থানায় খবর দিই। কাকা বেঁচে আছে বুঝতে পেরে দ্রুত একটা গাড়িতে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই।” উত্তমবাবুর শ্বশুরবাড়ি স্থানীয় আঙ্গারগড়িয়া গ্রামে। তাঁর শ্যালক মৃত্যুঞ্জয় পাল বলেন, “জামাইবাবুর ৪০টি সেলাই পড়েছে। আমাদের ধারণা, জামাইবাবুদের পরিচিত কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।” ঘটনার খবর পেয়ে মহম্মদবাজার থানার ওসি কল্যাণপ্রসাদ মিত্র এবং সিউড়ি সদরের সিআই সঞ্জীব দে তদন্তে যান। পুলিশের দাবি, ঘর তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনও ধারালো অস্ত্র মেলেনি। ঘরে দু’টি জানলা। দু’টিরই রড আস্ত রয়েছে। ওই জানলার নীচেও খুঁজে অস্ত্রের সন্ধান পায়নি পুলিশ।

ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.