|
|
|
|
দুর্নীতি দমনই বড় প্রশ্ন মনমোহন, অণ্ণা, আডবাণীর |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সব প্রসঙ্গ ছাপিয়ে দুর্নীতিই এখন জাতীয় রাজনীতির প্রধান বিষয়।
অণ্ণা হজারের টিম, বিজেপি বা কংগ্রেস সকলেরই জমি দখলের মূল অস্ত্র এখন দুর্নীতির মোকাবিলা। বা তার দাবিতে মুখর হওয়া। কিন্তু একই সঙ্গে তাদের দুর্বলতাও আবার দুর্নীতিই।
তাঁর নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বিব্রত হতে হচ্ছে, সরকারের ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলি নিয়ে। অণ্ণা শিবির কালো টাকা আর দুর্নীতির প্রশ্ন তুলে যে রাজনৈতিক পরিসর পেয়েছে, সেটাই ফিরে পেতে রথযাত্রায় নেমেছেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। দুই শিবিরের মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীও আজ মুখর হলেন দুর্নীতি মোকাবিলার প্রশ্নেই। রাজ্যপালদের দু’দিনের সম্মেলনের শেষ দিনে মনমোহন আজ স্পষ্ট বার্তা দিলেন যে, বিরোধীরা যতই সমালোচনা করুক, তাঁর সরকার কড়া হাতেই দুর্নীতির মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। তা সে লোকপাল বিলই নিয়েই হোক বা অন্যান্য ক্ষেত্রে। তাঁর কথায়, “আম-জীবনযাত্রায় দুর্নীতির রমরমা রোখাই এই মুহূর্তে সব চেয়ে বেশি জরুরি। দৃঢ়তার সঙ্গে এগোতে হবে সেই লক্ষ্যে। একমাত্র তাতেই দ্রুত সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের যাবতীয় চেষ্টার সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে।” সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ২২ নভেম্বর। সেখানে দুর্নীতির প্রশ্নেই সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা হবে। তার মাসখানেক আগেই প্রধানমন্ত্রী আজ ঘোষণা করলেন যে, দুর্নীতির মোকাবিলা করে সরকারি কাজে স্বচ্ছতা আনা ও দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় কোনও ফাঁক রাখবে না তাঁর সরকার।
যদিও দুর্নীতিরই প্রসঙ্গে লালকৃষ্ণ আডবাণী আজ কংগ্রেস ও মনমোহন সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন বেঙ্গালুরুতে। আস্থা ভোটে ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, “এমন দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার দেখিনি।” একই সঙ্গে তাঁকে বলতে হয়, (রাজ্যে রাজ্যে) বিজেপি-র সরকারেও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। নৈতিকতার প্রশ্নে দলকে এগিয়ে রাখতে ইয়েদুরাপ্পার নাম না করে বেঙ্গালুরুর সভায় তিনি বলেন, “লোকায়ুক্তের নির্দেশ অনুযায়ীই সব সময় ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্যের সরকার।”
দুর্নীতির বিরুদ্ধে রথযাত্রায় বেরিয়ে ইস্তক নিজের দলেরই দুর্নীতি নিয়ে বারাবার বিব্রত হতে হচ্ছে তাঁকে। বস্তুত, কর্নাটক-কাঁটা সামলাতে গিয়েই রথযাত্রার প্রথম পর্বে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সে ভাবে আক্রমণাত্মক হতে পারেননি তিনি। দলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা জেলে। প্রাক্তন মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। কাল আবার লোকায়ুক্ত পুলিশ সদানন্দ গৌড়া সরকারের বড় ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী মুরুগেশ আর নিরানি ও তাঁর ভাই-সহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করার পর আর কোচিতে সাংবাদিকদের সামনেই আসেননি আডবাণী। আজও সারা দিন সাংবাদিকদের এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। আজ সকালে তাঁর বেঙ্গালুরুতে সাংবাদিক বৈঠক করার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। শুধু সন্ধের সভায় বক্ততা দেন আডবাণী। সেখানে মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কড়া আক্রমণ করলেও, সঙ্গে ছিল কর্নাটক-কাঁটা সামলানোর সতর্ক চেষ্টা। ইয়েদুরাপ্পাকে চটিয়ে কর্নাটকে দল বা সরকার চালানো সহজ নয় জেনেও তাঁর শিবিরকে প্রচ্ছন্ন বার্তা দিতে আডবাণী এ দিন বলেন, “সদানন্দ গৌড়ার সরকার ঠিক পথেই চলছে।” বৃষ্টির জন্য সভা তাড়াতাড়ি শেষ করতে হওয়ায় আডবাণীকে অবশ্য বেশি বলতে হয়নি। তাঁর রথযাত্রার গোটা পথে এই রাজ্য ঘিরেই তাঁর অস্বস্তি সব চেয়ে। রাজধানী বেঙ্গালুরুর পর্বটা সাংবাদিক বৈঠক বাতিল করে আর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সেরে ফেলার পরে এ বার তাঁর রথ যাবে ম্যাঙ্গালোর। |
|
|
|
|
|