ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ওয়াঘার মতো তিনবিঘাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষমীয় করে তোলার দাবি তুললেন এলাকার বাসিন্দারা। ওই ব্যাপারে সরব হয়েছেন ডান-বাম, দুই শিবিরের রাজনৈতিক নেতারা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে তিনবিঘা করিডরে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জিতেন্দ্র প্রসাদ সিংহকে এই ব্যাপারে আর্জি জানান মেখলিগঞ্জ মহকুমা কংগ্রেস নেতৃত্ব। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ তিনবিঘাকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার জন্য রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড নেতারাও অনেকেই মনে করেন, তিনবিঘাকে কেন্দ্র করে পর্যটন পরিকাঠামো গনে তোলা হলে মেখলিগঞ্জের অর্থনৈতিক মানচিত্র বদলে যাবে। বাংলাদেশের আঙ্গাপোঁতা-দহগ্রাম ছিটমহলকে মূল ভূখণ্ড পাটগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করেছে ভারতের তিনবিঘা। ওই করিডর দিয়ে বাংলাদেশি ওই ছিটমহলের বাসিন্দা ২৪ ঘণ্টা যাতায়াত করতে পারেন। করিডরের দু’পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। দিনরাত পাহারায় রয়েছেন বিএসএফ জওয়ানরা। পাহারার একই রকম ব্যবস্থা রয়েছে বাংলাদেশেরও। প্রতিদিন সকালে ও বিকালে দু’দেশের পক্ষ থেকে জাতীয় পতাকা তোলা হয়। পতাকা তোলা এবং করিডর দিয়ে যাতায়াত দেখতে এখনই বহু লোক সেখানে যান। তাঁদের দাবি মেনে এক সময়ে তিনবিঘায় পার্ক, রেঁস্তোরা-সহ নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়। একটি পার্ক ছাড়া কিছুই হয়নি। মেখলিগঞ্জ থেকে তিনবিঘা হয়ে কুচলিবাড়ি পর্যন্ত যাতায়াতের রাস্তাও বেহাল। পুজোর মরসুমে ডুয়ার্স জুড়ে পর্যটকেরা রয়েছেন। অনকেই তিনবিঘা সম্পর্কে আগ্রহী। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না-হওয়ায় অবেলিত হয়ে রয়েছে এইএলাকাটি। কুচলিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জিতেন রায় বলেন, “ভাল হোটেল, রেঁস্তোরা-সহ পর্যটকদের প্রয়োজন, এমন কিছুই তিনবিঘায় নেই। পরিকল্পনা করে এগোলে পর্যটকদের যথেষ্ট ভিড় হতে পারে।” মেখলিগঞ্জ মহকুমা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি মায়াশঙ্কর সিংহ বলেন, “আগের রাজ্য সরকারের ব্যর্থতায় তিনবিঘায় পর্যটন সম্ভাবনা উপেক্ষিত হয়েছে। না-হলে এখানেও ওয়াঘার মতোই ভিড় হত। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে এই ব্যাপারে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছি।” উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান বলেন, “বামফ্রন্টের অবহেলায় তিনবিঘার এই হাল। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলব।” ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা উদয়ন গুহের বক্তব্য, এলাকায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী একটি পার্ক তৈরি করেছেন। আর কিছু হয়নি। কেন্দ্র ও রাজ্য, দু’পক্ষের উচিত তিনবিঘায় পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলা। রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায় বলেন, “পার্ক ছাড়া তিনবিঘা নিয়ে অন্য কোনও প্রস্তাব কখনও ছিল না। ওখানে সত্যিই পর্যটন পরিকাঠামো দরকার।” |