শ্মশানে রীতিমতো মালাবদল করিয়ে ‘বিয়ে’ দেওয়া হল মৃত প্রেমিক-প্রেমিকার। পরে একই চিতায় দাহ করা হল ‘নব দম্পতি’কে। শুদ্ধ বাগদি (২১) ও মৌমিতা বাগদি (১৬) নামে ওই তরুণ-তরুণীর বাড়ি নানুরের বড়া গ্রামে। গ্রাম লাগোয়া মাঠে তাঁদের দেহ উদ্ধার হয় রবিবার সকালে। বোলপুর হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে রবিবার বিকেলে কঙ্কালীতলা শ্মশানে তাঁদের ‘বিয়ে’ দেন পরিবারের লোকজন।
শনিবার রাতে কালীপুজো উপলক্ষে কলকাতার যাত্রার আসর বসেছিল বড়া গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘বন্ধুদের সঙ্গে যাত্রা দেখতে যাচ্ছি’ বলে শুদ্ধ ও মৌমিতা বাড়ি থেকে বেরোন। কিন্তু যাত্রা শেষের পরেও তাঁরা বাড়ি ফেরেননি। সকালে গ্রাম লাগোয়া মাঠে তাঁদের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল থেকে কীটনাশকের শিশি পেয়েছে পুলিশ। বীরভূমের পুলিশ সুপার নিশাত পারভেজ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রণয়ঘটিত কারণে ওই যুগল আত্মঘাতী হয়েছেন। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।” গ্রামবাসীরা জানান, শুদ্ধ-মৌমিতা খুব ভাল ‘বন্ধু’ ছিল। কয়েক বছর ধরে তাঁদের ঘনিষ্ঠতা। শুদ্ধর দাদা জিতেন বাগদির দাবি, “দু’জনের ঘনিষ্ঠতার কথা জানার পরেই আমরা মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দিই। কিন্তু মেয়ের বাড়ির লোকেরা রাজি হননি। তার পরিণতি যে এমন হতে পারে, ভাবতে পারিনি।” মৌমিতার মা সাদেশ্বরী দেবী অবশ্য বলেন, “প্রথম দিকে আমরা ওদের ঘনিষ্ঠতার কথা জানতাম না। জানার পরেই ঠিক করেছিলাম, কালীপুজোর পরে ওদের বিয়ের ব্যবস্থা করব। তার মধ্যেই যে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।” যদিও মৌমিতার মেসোমশাই বাবলু বাগদি এবং শুদ্ধর ভাই বাপি বাগদি বলেন, “ওদের ঘনিষ্ঠতার কথা জানার পরে দুই পরিবারের কথাবার্তা চলছিল। মেয়েটির বয়স হয়নি বলেই বিয়েটা আটকে ছিল। ওদের প্রেমকে স্বীকৃতি দিতেই শ্মশানে বিয়ে দেওয়া হয়।” ‘বিয়ে’র পুরোহিত পরিতোষ চক্রবর্তী বলেন, “ওই দু’জনের শেষ ইচ্ছে যদি বাড়ির লোক এ ভাবে মেটাতে চান, আপত্তির কী আছে?” |