আবার বারো বছরে একশো কোটি! আগামিকাল বিশ্বের জনসংখ্যা পৌঁছবে সাতশো কোটিতে। এবং বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, সাতশো কোটিতম শিশুটি ভারতে জন্মাবে। ভারতে গড়ে এক মিনিটে ৫১টি শিশু জন্মায়। তাই সাতশো কোটিতমের জন্য কোনও নির্দিষ্ট জায়গা করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে কেউ কেউ মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশের কোথাও জন্ম নেবে এই ‘বিশেষ’ শিশুটি। উল্লেখ করা যায়, ১৯৯৯ সালে ছ’শো কোটির ঘরে ঢুকেছিল বিশ্বের জনসংখ্যা। তার পর থেকে বারো বছরে তা বাড়ল একশো কোটি। বিশ্বের জনসংখ্যার পাঁচশো থেকে ছ’শো কোটিতে পৌঁছতেও সময় লেগেছিল বারো বছর। ১৯৮৭ সালের ১১ জুলাই পাঁচশো কোটিতে পৌঁছেছিল বিশ্বের জনসংখ্যা।
তার পর থেকে প্রতি বছর ১১ জুলাইকে ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’ হিসেবে উদ্যাপন করা হয়। গত শতকের আশি বা নব্বইয়ের দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ ছিল ভারতে। কিন্তু একুশ শতকে সেই উদ্বেগ যেন অনেকটাই চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে। খোদ রাষ্ট্রপুঞ্জও এই নিয়ে একটি কর্মসূচি প্রকাশ করেছে। যার শিরোনাম ‘৭০০ কোটি কাজ’। গানও বাঁধা হচ্ছে এই নিয়ে। রাষ্ট্রপুঞ্জ এখন এক দিকে মনে করছে, মানুষ বাড়লে সকলের বেঁচেবর্তে থাকার জন্য বাড়তি সুযোগসুবিধাও তৈরি করতে হবে। আবার অন্য দিকে তাদের বক্তব্য, জনসংখ্যা ৭০০ কোটি হওয়াটা মোটেই উদ্বেগের বিষয় নয়। সেটা বরং মানবজাতির সাফল্যেরই নিদর্শন।
মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। তাতেই জনসংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে আরও বলা হয়েছে, অনেক দম্পতিই এখন সন্তানের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। তাই ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে জনসংখ্যা বাড়া নিয়ে যে ধরনের আতঙ্ক দেখা যেত, এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না। বিশ্বের সব চেয়ে জনবহুল দু’টি দেশ চিন ও ভারত জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে। পাশাপাশি, পশ্চিমের উন্নত দেশগুলিতে জন্মহার কমে যাওয়ায় কমে যাচ্ছে তরুণ-তরুণীর সংখ্যা। যা তাদের অর্থনীতির পক্ষে আদৌ মঙ্গলজনক নয়। কর্মী সংগ্রহের জন্য তাই অনেক ক্ষেত্রেই ভারত আর চিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় উন্নত দুনিয়াকে। ভোগ্যপণ্যের ভবিষ্যৎ বাজার হিসেবেও এই দেশগুলি তাই এখন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। |