উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় ৩টি পৃথক মোটর বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ যুবকের। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি, মালদহ ও দার্জিলিং জেলায় ঘটনাগুলি ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থানার ভুটকি এলাকায়। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শিলিগুড়ির নবগ্রামের বাসিন্দা নির্মল সেন (২২) ধূপগুড়ি থেকে ফিরছিলেন। সেই সময় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সড়কে তাঁর মোটর বাইকের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা লাগে। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজার থানার একবর্ণা এলাকায়। সেখানে কালীপুজোর মেলা দেখে মোটর বাইকে চড়ে ফেরার সময়ে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানায়, তাঁদের নাম তাপস মণ্ডল (২১) ও তুষার মণ্ডল (১৮)। তাঁরা সম্পর্কে মামাতো-পিসতুতো ভাই। ওই মোটর বাইকের তৃতীয় আরোহী বন্ধন মণ্ডলকে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাপস মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও তুষার সাট্টারি হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। ট্রাকের চালক পলাতক।” আরোহীদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। |
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া থানার খাপরাইল মোড় এলাকায়। ওই এলাকায় মোটর বাইকে চড়ে তিন বন্ধু কালীপুজো দেখতে শিলিগুড়ি যাচ্ছিলেন। উল্টো দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটর বাইকটি ছিটকে গেলে ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। অন্য জন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মারা যান। মৃতদের নাম হল, উত্তম দাস (২২), সুব্রত ভৌমিক (২৬) ও প্রদীপ মণ্ডল (২০)। সুব্রতর বাড়ি এয়ারপোর্ট মোড়ে। বাকি দু’জনের বাড়ি বুড়ি বালাসন লাগোয়া কলেজপাড়ায়।
মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। শোক জানাতে এলাকার সব দোকানপাট এ দিন বন্ধ হয়ে যায়।
কমবয়সীদের মধ্যে হেলমেট খুলে দুরন্ত গতিতে মোটর বাইক চালানোর প্রবণতা কমবেশি সর্বত্র রয়েছে বলে পুলিশ স্বীকার করেছে। ইতিমধ্যেই কমবয়সীদের হাতে বাইক তুলে দেওয়া নিয়ে বাড়ির লোকজনদের সতর্ক করতে পুলিশ-প্রশাসন ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে কনভেনশনও করেছেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেছেন, “বাইক দুর্ঘটনা এড়াতে আরও কী কী করণীয় তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” পাশাপাশি, ছট পুজোর পরে অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের কথাও জানিয়েছেন গৌতমবাবু। |