|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি ২... |
|
জোট সরকার |
টালিগঞ্জের বিপরীতমুখী দুই স্রোতের প্রতীকী। এক সময়ে পরস্পরের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। আকস্মিক ঘূর্ণাবর্তে
এখন তাঁরা পাশাপাশি। শতাব্দী রায় আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। প্রথম জন এ বার পরিচালক। দ্বিতীয় জন তাঁর
ছবির নায়িকা। কী করে সম্ভব হল এমন রসায়ন? খোঁজ দিল একমাত্র পত্রিকা |
পত্রিকা:আপনারা কাছাকাছি এলেন এটাই আশ্চর্যের। কী করে ঘটল এটা?
শতাব্দী: গল্পটা আমার। নায়িকার চরিত্রটা একজন অত্যন্ত দৃঢ় চরিত্রের মহিলার। আমার মনে হয়েছিল ঋতু-ই একমাত্র সেটার প্রতি জাস্টিস করতে পারবে। তাই ওকে অ্যাপ্রোচ করেছিলাম।
পত্রিকা: আর আপনাদের পুরনো প্রতিযোগিতা? তার কোনও ছাপ পড়বে না? দু’জনেই হাসেন।
শতাব্দী (হাসি): প্রতিযোগিতাই ছিল না, তো তার আবার কীসের ছাপ পড়বে?
ঋতুপর্ণা: আসলে আমি যে সময় এসেছিলাম সে সময় শতাব্দীদি অলরেডি বড় স্টার। আর শতাব্দীদি এত ছবি করেছে...রেকর্ড দেখলে মনে হয় নায়িকা হিসেবে ও বোধহয় সবথেকে বেশি সংখ্যক ছবি করেছে।
শতাব্দীর খুশির হাসি...
ঋতুপর্ণা:... সুতরাং এখানে কোনও প্রতিযোগিতার ব্যাপার নেই। আমার মনে আছে, ও যখন প্রথম বার পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিল আমি ফোন করে ওকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। (শতাব্দীকে) ডু ইউ রিমেম্বার?
শতাব্দী: হ্যাঁ, হ্যাঁ, মনে আছে...
পত্রিকা: ছবির নাম তো ‘ওঁ শান্তি’। অর্থাৎ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন জোট...
দু’জনেই আবার প্রাণ খুলে হাসেন।
পত্রিকা: শতাব্দী, আপনি ঋতুপর্ণার নায়িকাসুলভ ইগো সামলাতে পারবেন?
শতাব্দী: সেটা কোনও ব্যাপার নয়। খালি একটু সময় মতো আসতে হবে...
ঋতুপর্ণার হা হা হাসি।
শতাব্দী: (সেই হাসির রেশ টেনে) এটা আমাকে অনেকে বলেছে....
পত্রিকা: তখন মনে হবে না তো, যে ধুর এ সবের থেকে রাজনীতি-ই তো ভাল ছিল...
শতাব্দী: না, মনে হবে না। তার কারণ, রাজনীতি আমার একটা অন্য জগৎ। আমার জায়গা, বীরভূম... ওখানে আমায় কারও জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। আমি যা করব সেটাই শেষ কথা। কিন্তু ছবিটা তো সবাইকে নিয়ে কাজ। সবার সঙ্গে সবার সহযোগিতাটা খুব দরকার। |
|
পত্রিকা: আর দেরি করলে কি করবেন? ঋতুপর্ণা: (হাসতে হাসতে) খুব বকবে আমাকে...
শতাব্দী: না, অল্প বকব। (পরিচালকের খল গাম্ভীর্য নিয়ে) দেরি করা যাবে না। ওটা প্রথম শর্ত। (হেসে ফেলে) দেখুন, আমি যখন কাজ করব ওকে আমি পুরো সম্মান দেব। ও-ও সেটা দেবে। আসলে এত চাপ থাকে...তাই দেরি করে আসা মানে পুরো শু্যটিংটাই পিছিয়ে যাওয়া। আরেকটা ব্যাপার হল, ডেট কম, কাজ বেশি।
পত্রিকা: শতাব্দী, আপনি কি আদৌ আপনার নায়িকা-সত্তা থেকে পরিচালক-সত্তায় যেতে পেরেছেন? শতাব্দী একটু চুপ। তার পর হাসি।
ঋতুপর্ণা: নিশ্চয়ই পেরেছে। এটা তো তোমার পরিচালনায় চতুর্থ ছবি, তাই না?
শতাব্দী: হ্যাঁ পেরেছি বলেই মনে হয়।
পত্রিকা: ঋতুপর্ণা, ওঁকে দেখে রাজনীতিতে যাওয়ার কথা মনে হয়েছে কোনও দিন? শতাব্দী: কেন, ও তো রাজনীতি ছাড়াও অনেক কাজ করে।
ঋতুপর্ণা: আমার অভিনয়, পরিবার, নাচ, সব মিলিয়ে এখনও অন্য কিছুর জন্য সময় কুলিয়ে উঠতে পারিনি। এর জন্যেই কত বকা খেতে হয় (হাসি)। আরও কিছু করতে গেলে আরও বকুনি খাব।
পত্রিকা: তা, আপনাদের একে অন্যের কাছ থেকে প্রত্যাশা কী? শতাব্দী: (হাসতে হাসতে) ছবিতে তাপস পাল, ভিক্টর বন্দোপাধ্যায়, রাজেশ শর্মা, খরাজ মুখোপাধ্যায় আছেন। কিছু নতুন মুখ আছে যেমন রোহন, প্রতীক। তাই আসল প্রত্যাশা তো দর্শকের।
ঋতুপর্ণা: একদমই।
শতাব্দী: আমার ছবিতে ঋতু। স্বাভাবিক ভাবেই দর্শক অপেক্ষা করবে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল সেটা দেখতে।
ঋতুপর্ণা: আমাদের জুটিটাই দারুণ ইন্টারেস্টিং। (হাসতে হাসতে) পরিচালক আর অভিনেত্রী হিসেবে আমরা এই প্রথম এক সঙ্গে কাজ করছি। সুতরাং ছবি তৈরির প্রক্রিয়াটা বোধহয় বেশি ইন্টারেস্টিং হবে।
পত্রিকা: কেন? শতাব্দী: আমার খালি একটাই কথা মনে হচ্ছে যে দেরি করলে রাগ হতে পারে। আর রাগ হলে আমার পাশের লোকেরা আমায় বোঝাবে যে তুমি পরিচালক, তুমি রাগলে তোমার ক্ষতি হবে।
ঋতুপর্ণা শুনে হেসে ফেললেন।
শতাব্দী: কারণ আমার রাগ হলে আমি চুপ করে যাই।
ঋতুপর্ণা: (আন্তরিক ভাবে বুঝিয়ে) না, না, সেটা হবে না। তুমি এ রকম বোলো না প্লিজ।
দু’জনেই হেসে ফেললেন।
ঋতুপর্ণা: আমরা এর আগে ‘লাঠি’ করেছি। ‘দেবীপক্ষ’ করেছি...
শতাব্দী: চিরঞ্জিতদা’র ‘সাংসার সংগ্রাম’-ও করেছি।
ঋতুপর্ণা: হ্যাঁ, ওটা খুব হিট করেছিল।
ঋতুপর্ণা: হ্যাঁ, হ্যা। তখন আমি একদমই নতুন। তবে যে ক’টা ছবিতে আমরা এক সঙ্গে কাজ করেছি, সব ক’টাই হিট। তাই মনে হয় এটাও...
শতাব্দী: দারুণ হিট করবে। (খুব হাসতে হাসতে)
ঋতুপর্ণা: সেটাই বলতে যাচ্ছিলাম। শতাব্দীদি এখানে অন্য একটা ভূমিকায়। আর আমার তরফ থেকে আমিও পুরোপুরি চেষ্টা করব যাতে ছবিটা ভাল হয়।
পত্রিকা: আপনাদের জুটিটা তো দারুণ। আরও দুটো জুটি আছে। শতাব্দী-প্রসেনজিৎ। ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিৎ। কোনটা বেশি ভাল? ঋতুপর্ণা চুপ।
শতাব্দী: ওদের জুটিটা বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল। প্রসেনজিতের বেশি ছবি হয়তো আমার সঙ্গে। তার পর আমি অনেক দিন প্রসেনজিতের সঙ্গে ছবি করিনি। সেই সময় ও অনেক ছবি করেছে।
পত্রিকা: আর ঋতুপর্ণা, আপনি?
ঋতুপর্ণা: ওরা দু’জনেও অনেক ভাল ভাল, জনপ্রিয় ছবি করেছে।
পত্রিকা: নায়ক হিসেবে কে বেশি ভাল তাপস পাল? না প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়?
কিছুক্ষনের নিস্তব্ধতা। তার পর দু’জনের দম-ফাটা হাসি।
শতাব্দী: দু’জন দু রকমের। তাপস পালকে আমরা দেখে এসেছি খুব ভাল অভিনেতা হিসেবে। মানুষের কাছে পৌঁছেছেন। আর প্রসেনজিৎ যে ধরনের চরিত্র বেশি করেছে, মানে অ্যাকশন, নাচ, সেগুলোতে ও খুব আকর্ষণীয়।
পত্রিকা: কেউ কারও থেকে বেশি ভাল নয়?
শতাব্দী: দু’জন দুই অর্থে ভাল। কারণ দু’জনে তো এক রকম চরিত্রে অভিনয় করেনি।
পত্রিকা: আর আপনি ঋতুপ...
শতাব্দী: (কথা কেটে) আমাদের ব্যাচে তাপস পালই সবথেকে ভাল অভিনেতা।
ঋতুপর্ণা: তাপসদা নিঃসন্দেহে দারুণ অভিনেতা। শতাব্দীদি যা বলল সেটা একেবারে সত্যি। মানুষের সঙ্গে ওঁর অদ্ভুত একটা কানেকশন আছে।
পত্রিকা: আর প্রসেনজিৎ?
ঋতুপর্ণা: এই ইন্টারভিউতে এটা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। |
|
|
|
|
|