|
|
|
|
শুভেন্দুর কনভয়ের যাত্রাপথে মাইন, জিলেটিন স্টিক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাওবাদীদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তোলার ডাক তিনি দিয়েছিলেন গত শনিবার। তার ঠিক ছ’দিনের মাথায় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর লালগড় যাওয়ার পথে ঝিটকায় উদ্ধার হল ‘ডিরেকশনাল’ মাইন, বিদ্যুতের তার, জিলেটিন স্টিক ও লোহার বল। আতঙ্ক ছড়াতে এবং নাশকতার উদ্দেশ্যে মাওবাদীরাই সে-সব মজুত করেছিল বলে মনে করছে পুলিশ।
পরে অবশ্য শুভেন্দুবাবু লালগড়ে পৌঁছে পূর্ব-নির্দিষ্ট কর্মসূচিতে যোগ দেন। তাঁর বক্তব্য, “কেউ যদি ভাবে, রাস্তায় তার, জিলেটিন স্টিক ফেলে কোনও কর্মসূচি ভেস্তে দেবে, তা হলে ভুল করছে। জঙ্গলমহলের মানুষই এ সবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন।”
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শান্তনু সেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন।
গোয়ালতোড়ের পিংবনিতে এক জনসভায় ‘প্রতিরোধের পথে’ জঙ্গলমহল থেকে মাওবাদীদের ‘উৎখাত’ করার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তার জবাবে ইতিমধ্যেই ‘পাল্টা প্রতিরোধে’র হুঁশিয়ারি দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন মাওবাদীদের লালগড় আঞ্চলিক কমিটির নেতা। এ দিন মেদিনীপুর থেকে শালবনি হয়ে ঝিটকার পথে শুভেন্দুবাবুর যাওয়ার কথা ছিল লালগড়ে। সেখানে একটি ক্লাবের উদ্যোগে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ছিল। রুটিন তল্লাশির বাইরেও সাংসদের যাতায়াতের জন্য এ দিন বিশেষ নজরদারি চলছিল। |
|
ঝিটকার জঙ্গলে উদ্ধার এই সন্দেহজনক বস্তুটিকে ‘ডিরেকশনাল’ মাইন বলে সন্দেহ পুলিশের।-নিজস্ব চিত্র |
ঝিটকা এমনিতেও পুলিশের কাছে ‘অতি-স্পর্শকাতর’। বছর পাঁচেক আগে এখানেই ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। সাংবাদিক-চিত্র সাংবাদিকরা আহত হয়েছিলেন।
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ শালবনির পিরাকাটায় যখন সাংসদের কনভয় পৌঁছয়, সেই সময় ঝিটকার রাস্তা থেকে কিছু দূরের জঙ্গলে প্রথমে প্রায় তিনশো মিটার বিদ্যুতের তার দেখতে পায় যৌথ বাহিনী। শুভেন্দুবাবুকে আর না এগোতে অনুরোধ করে পুলিশ। শালবনির ভীমপুর পঞ্চায়েত অফিসে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করেন সাংসদ। খবর পেয়ে পৌঁছয় বম্ব-স্কোয়াড।
এর পর তল্লাশিতে একে একে উদ্ধার হয় ডিরেকশনাল মাইন, কিছু জিলেটিন স্টিক এবং লোহার বল। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছ থেকে সবুজ-সঙ্কেত পেয়ে ফের শুভেন্দুবাবু রওনা হন লালগড়ের পথে। কর্মসূচি সেরে ফেরার সময় অবশ্য মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া, চাঁদড়ার পথ ধরে তাঁর কনভয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠির বক্তব্য, “আতঙ্ক ছড়াতে ও নাশকতার উদ্দেশেই এ সব মজুত করা হয়েছিল। আরও তল্লাশি চলছে।”
বস্তুত, মাওবাদীদের তরফে নাশকতার আশঙ্কা বাড়ায় ইদানীং নিয়মিতই জঙ্গলে ও জঙ্গল লাগোয়া রাস্তায় টানা তল্লাশি চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। বৃহস্পতিবার এমন তল্লাশির সময়েই মেদিনীপুর সদর ব্লকের শিরষি এলাকার একটি খাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ৬০ কেজি বিস্ফোরক। যা ল্যান্ডমাইন তৈরির জন্যই মজুত করা হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|