বদলের ফিল্ম উৎসবে
জনতার ‘দূত’ শাহরুখ

শহরের সঙ্গে বারবার অদ্ভুত ভাবে যোগসূত্র রচিত হয়ে যায় তাঁর।
কখনও মেগাস্টার হিসেবে অনিবার্য উপস্থিতি।
কখনও ছবির প্রচারের কাজে দৌড়োদৌড়ি। কখনও বা ক্রিকেট টিমের মালিক হওয়ার দায়। আবার কখনও সম্মাননীয় অতিথি।
শেষোক্ত অবতারে আগামী ১০ নভেম্বর শাহরুখ খান আবির্ভূত হচ্ছেন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-মঞ্চে। স্থানকেন্দ্র: নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। যেখানে আজ পর্যন্ত চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন হয়নি। নন্দনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পারতেন মাত্র হাজারখানেক মানুষ। নেতাজি ইন্ডোরে এর চেয়ে অন্তত ছ’গুণ বেশি লোক দেখতে পারবেন। উৎসবকে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই উদ্যোক্তারা ‘ভেনু’ বদল করেছেন। উদ্বোধনী মঞ্চের সেই নতুন ঠিকানায় শাহরুখের আগমন যেন এই সংখ্যাধিক্য দর্শকের মনোভাবনারই প্রতীক। মুম্বইয়ে শাহরুখের ঘনিষ্ঠ শিবির বৃহস্পতিবার আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, শাহরুখের কলকাতা আসার খবরটা সত্যি। এ ব্যাপারে তাঁর অফিস থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়কে সরকারি ভাবে সম্মতি জানানো হয়েছে।
উদ্বোধনী সন্ধ্যার মুখ্য আকর্ষণ শাহরুখ নিশ্চয়ই। কিন্তু তিনি যদি গ্ল্যামারের কেন্দ্রবিন্দু হন, তা হলে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রয়োজনীয় আভিজাত্য ও গাম্ভীর্যের প্রতীক হতে চলেছেন শর্মিলা ঠাকুর। সরকারি ভাবে অনুষ্ঠানের কুলপুরোহিত শর্মিলা। ফিল্মোৎসবের উদ্বোধন করবেন তিনিই। গত ২২ সেপ্টেম্বর স্বামী মনসুর আলি খান পটৌডির প্রয়াণের পর থেকে কোনও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে শর্মিলাকে দেখা যায়নি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই আবার তিনি পাবলিক ফোরামে দেখা দেবেন এই প্রথম।
শাহরুখ যদি গ্ল্যামার হন, শর্মিলা যদি আভিজাত্যের প্রতীক হন, তা হলে সেই সন্ধ্যার তৃতীয় অতিথি সুপ্রিয়া দেবী হলেন বাংলা ছবির সাবেকি ঐতিহ্যের মৌতাত বহনকারী। উদ্বোধনী মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির থাকবেন সুপ্রিয়াও। থালি গার্ল কোয়েল মল্লিক। সংযোজনায় জুন মালিয়া।
শাহরুখের কলকাতায় আসার জন্য সময় বার করাটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। কারণ, ‘রা-ওয়ান’-এর মুক্তির পর থেকেই তিনি নাগাড়ে বিদেশে। তা ছাড়াও ১১ নভেম্বর সকাল থেকে তাঁকে হংকংয়ে থাকতেই হবে। তাই
আগের দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য কলকাতায় ঝটিকা সফরে এসে সে রাতেই তিনি মুম্বই ফিরে যাবেন। তার পর মুম্বই থেকে মধ্যরাতে চার্টার্ড ফ্লাইটে হংকং।
এমন ব্যস্ততার মধ্যেও কী ভাবে সময় বার করছেন শাহরুখ?
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এর কারণ দু’টো। প্রথমত, শাহরুখ জানতে পেরেছেন যে চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যথেষ্ট উৎসাহী। দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই তাঁর নিজের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। বাম জমানায় কেকেআরের নানা ব্যাপারে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে অনেক সময় সহযোগিতা পাননি শাহরুখ। তাই নতুন সরকারের সঙ্গে তিনি নতুন করে সম্পর্ক শুরু করতে উৎসাহী। দুবাই থেকে কেকেআর-এর সিইও ভেঙ্কি মাইসোর ফোনে বললেন, “কলকাতার সঙ্গে শাহরুখের গভীর সম্পর্ক। আমরা ভীষণ আনন্দিত যে এত কাঠখড় পুড়িয়েও চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য সময় তিনি বার করতে পেরেছেন।” ভেঙ্কিই শাহরুখের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন।
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই কিন্তু চেয়েছিলেন, এ বারের ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনে আনা হোক দিলীপ কুমার বা দেব আনন্দের মতো বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা আগাগোড়াই শাহরুখকে আনার জন্য উৎসাহী ছিলেন। শাহরুখের আসা কার্যত অসম্ভব জেনেও হাল ছাড়েননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ‘হ্যাঁ’ বললেন শাহরুখও।
আর সেই জন্যই সম্ভব হতে চলেছে দৃশ্যটা এক মঞ্চে সুপ্রিয়া, শর্মিলা আর শাহরুখ। ঐতিহ্য, আভিজাত্য আর জনপ্রিয়তার ত্রিবেণী সঙ্গম।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.