ভাঁড়ার প্রায় শূন্য। এই অবস্থায় কালীপুজোয় রাজ্যকে আলো ঝলমলে রাখতে মঙ্গল ও বুধবার অন্য রাজ্য থেকে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ কিনল রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। দিন থেকে রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ ৫০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াটের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬ হাজার ২৪৫ মেগাওয়াট। তবে রাজ্যের কোথাও কোনও বিদ্যুৎ ঘাটতি হয়নি বলে দাবি বিদ্যুৎ কর্তাদের। বুধবার চাহিদা ছিল মঙ্গলবারের থেকে কিছুটা কম। কারণ অফিস, শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিল বন্ধ। কিন্তু কালীপুজোয় আলো দিতে বুধবারেও বাইরে থেকে মঙ্গলবারের মতোই বিদ্যুৎ আমদানি করতে হল বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকে। বিদ্যুৎ কর্তারা জানাচ্ছেন, আমদানি করা বিদ্যুতের বাজার মূল্য ২ কোটি টাকার মতো।
কিন্তু এত ঝুঁকি নিয়ে অন্য রাজ্য থেকে বিদ্যুৎ কিনে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে তো বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি? রাজ্যের এক শীর্ষ বিদ্যুৎ কর্তা বুধবার বলেন, “দুর্গাপুজোয় আমাদের বিদ্যুৎ আমদানি করতে হয়েছিল। কালীপুজোতেও তাই। মঙ্গলবার, বুধবারের পরে বৃহস্পতিবারেও আমাদের বাড়তি বিদ্যুৎ আমদানি চালিয়ে যেতে হবে। উৎসবের মরসুম বলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখতে আমরা অন্য রাজ্য থেকে বিদ্যুৎ কেনার ঝুঁকি নিয়েছি। নভেম্বর মাসে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে টাকা মেটাতে গিয়েই তার ফলটা আমরা বুঝতে পারব।”
ওই বিদ্যুৎ-কর্তার মন্তব্য, নভেম্বর মাসের ১২ তারিখ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের বিল মেটানোর কথা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির। কিন্তু বণ্টন কোম্পানি পুরোটা দিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। বণ্টন কোম্পানি নিগমের বিল না মেটালে আবার নিগম কয়লা কিনতে পারবে না। উৎপাদন আরও কমে যাবে। বাইরের রাজ্য থেকেও বিদ্যুৎ কেনার মতো টাকা হাতে থাকবে না। সুতরাং লোডশেডিং করা ছাড়া গতি থাকবে না।
প্রতি মাসে রাজ্য এখন গড়ে কম-বেশি ২০০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ কেনে অন্য রাজ্য থেকে। বিদ্যুৎ কর্তারা দাবি করেন, মঙ্গলবার বিদ্যুতের গড় দাম ছিল তুলনায় বেশ কম। আগে ইউনিট-প্রতি ৮-৯ টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ কিনতে হয়েছে। মঙ্গলবার গড় দাম ছিল পাঁচ টাকা।
এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী? বিদ্যুৎ কর্তারা বলছেন, আর এক বার রাজ্যের কাছে মাসুল বৃদ্ধির সুপারিশ পাঠাবেন। মাসুল না বাড়ালে রাজ্যকে ভর্তুকি দিতে হবে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকার ভর্তুকি চেয়ে রেখেছে নিগম। এ বার ভর্তুকি চাইতে হবে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিকেও।
|
ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিবাদ, সতর্ক করলেন বিমান
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিবাদ যাতে কোনও ভাবেই জেলা সম্মেলনে ছাপ না ফেলে, তার জন্য কলকাতা জেলার নেতাদের সতর্ক করলেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। মূলত সম্মেলন প্রক্রিয়া নিয়ে বুধবার কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই বিমানবাবু নেতাদের সতর্ক করে দেন। সম্মেলন প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটি এড়াতে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে আলিমুদ্দিন। কলকাতা জেলা সিপিএমে কম-বেশি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে। এবং তার বেশির ভাগই ব্যক্তিগত কারণে। বিমানবাবু বলেন, সম্মেলনে দলিল, মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিবাদ যেন ছাপ না ফেলে, তার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জোনাল লোকাল ও জেলা কমিটিতে যাতে পরিচ্ছন্ন, সৎ, সক্রিয় ও দক্ষ নেতা-কর্মীরা নির্বাচিত হন, সে ব্যাপারেও জোর দেন বিমানবাবু। তিনি বলেন, নেতা-কর্মীদের সক্রিয়তা আরও বাড়াতে হবে। কর্মীদের মানুষের কাছে যেতে হবে। তাঁদের আন্দোলনমুখী হতে হবে। নভেম্বর মাস জুড়ে বামফ্রন্টের নানা কর্মসূচি আছে। সেগুলি সফল করার জন্য কলকাতা জেলার নেতা-কর্মীদের পথে নামার নির্দেশও দেন বিমানবাবু। |