শব্দবাজি রুখতে আজ পথে পরিবেশমন্ত্রীও
জ, বুধবার কালীপুজোর রাতে রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী থাকবেন শহরের রাস্তায়। দীপাবলিতে শব্দবাজির তাণ্ডব রুখতে এই প্রথম রাজ্যের কোনও মন্ত্রী পথে নামছেন। পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার মঙ্গলবার বলেন, “শব্দবাজির চ্যালেঞ্জ একেবারেই খাটো করে দেখা চলবে না। পুলিশ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পষর্দের আধিকারিকেরা তো সারা রাত শহরে টহল দিচ্ছেনই। পাশাপাশি, শহর ও শহরতলির সবচেয়ে বিপজ্জনক কিছু জায়গায় আমি নিজেও গিয়ে দেখতে চাই, শব্দবাজি বন্ধে কী ব্যবস্থা করা গেল।”
সুদর্শনবাবু জানান, তিনি মূলত দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি বহুতল বাড়িতে গিয়ে দেখতে চান সেখানে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য কমেছে কি না। বহুতলের ছাদে শব্দবাজি ফাটানো এবং ছাদ থেকে তা নীচে ছোড়া হয় বলে প্রতি বছরই অভিযোগ আসে। তা বন্ধ করতে এ বার বিশেষ তৎপর হয়েছেন মন্ত্রী। বহুতলগুলিতে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে পুলিশকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “ক্যামাক স্ট্রিট, লেক টাউন, বাঙুর এবং সল্টলেকের মতো যে সব জায়গা থেকে বেশি অভিযোগ আসে, সেই এলাকাগুলিতেও যাব।”
পরিবেশকর্মীদের আশঙ্কা, এ বছর শব্দবাজির তাণ্ডব বাড়বে। কারণ, অন্যান্য বার শব্দবাজির উৎপাদন এবং মজুত নিয়ন্ত্রণে জুলাই মাস থেকে তৎপরতা শুরু করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। বাজি যে সব জায়গায় মজুত হয়, সেখানে পর্ষদের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো, উৎপাদকদের সঙ্গে আলোচনা এবং পুলিশকে চিঠি দিয়ে সব কিছু জানানোর কাজ শুরু হয়। তার ফলে কালীপুজোর অনেক আগে থেকেই শব্দবাজি বাজেয়াপ্তও শুরু হয়ে যায়। এই বছর সেই প্রক্রিয়া কার্যত শুরু হয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। ফলে শব্দবাজির উৎপাদক এবং মজুতদারেরা হাতে বিস্তর সময় পেয়েছেন। তবে দেরিতে হলেও পরিবেশমন্ত্রী স্বয়ং শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণের রাশ শক্ত হাতে ধরার চেষ্টা করেছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে পর্ষদ।
মন্ত্রী স্বয়ং পথে নামার ফলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকেরা এবং পুলিশ নিঃসন্দেহে নজরদারির কাজ আরও সতর্কতার সঙ্গে করবেন। আজ, কালীপুজোর রাতে পর্ষদের আধিকারিকদের ৩০টি দল শহর ও শহরতলির রাস্তায় ঘুরে নজরদারি চালাবে। প্রত্যেকটি দলে থাকবে পুলিশও। তাঁরা কোনও অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। ওই বাহিনী শুক্রবার এবং শনিবার রাতেও রাস্তায় টহল দেব। কারণ, কালীপুজোর পরের দু’দিন প্রচুর বাজি ফাটে। পর্ষদ এবং পুলিশের পাশাপাশি নাগরিক উদ্যোগে গঠিত ‘সবুজ মঞ্চ’-এর কর্মীরাও রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শব্দবাজি সংক্রান্ত অভিযোগ নেবেন। মঞ্চের তরফে নব দত্ত জানান, মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই শব্দবাজি বিক্রি ও ফাটানোর ১৭টি অভিযোগ এসেছে। সেই অভিযোগ পুলিশকে জানাচ্ছেন তাঁরা। লেকটাউন ও বাগুইআটিতে পুলিশ তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নিয়েছে।
এ দিকে, গত সাত দিনে প্রায় ৭০ কেজি শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে বাগুইআটি থানা। নিষিদ্ধ বাজি বিক্রির অভিযোগে চার জন গ্রেফতারও হয়েছে। লেকটাউনে ৪৫ কেজি শব্দবাজি আটক করেছে পুলিশ। নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রির অভিযোগে ধরা পড়ে এক জন। প্রতি বছর কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকে লেকটাউন, বাঙুর, দমদম পার্কে দেদার শব্দবাজি ফাটে। পুলিশের তরফে বলা হয়, “আমরা বিশেষ সতর্ক। নজর রাখব বহুতলে। সন্ধ্যা থেকেই টহলদারি চলবে।”
শব্দবাজির তাণ্ডব রুখতে হাওড়ায় এ বার কড়া পাহারার ব্যবস্থা করেছে সেখানকার পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে জানান, কোথাও শব্দবাজির তাণ্ডবের বিষয়ে ১০০ ডায়ালে ফোন করে অভিযোগ জানালে দ্রুত সেখানে পৌঁছে যাবে রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড বা অ্যান্টি সাবোটাজ স্কোয়াড। এ বার শহরের বহুতলগুলিতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ, অভিযোগ রয়েছে বহুতল থেকে বেশি শব্দবাজি ফাটানো হয়। তাই বহুতলগুলির অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সাহায্যও চাওয়া হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.