বাঁশে বেঁধে টেনে নিয়ে গিয়েই বিসর্জন দেবীর
রাতভর পুজোর পরে দেবীকে বাঁশে বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জনের জন্য। কাটোয়ার নলাহাটি গ্রামে এমন রেওয়াজ দীর্ঘদিনের।
কথিত রয়েছে, নবদ্বীপের বাসিন্দা রুদ্রদাস বাগীশ কয়েকশো বছর আগে নলাহাটি গ্রামে তন্ত্রসাধনায় বসেন। তখনই তিনি দেবীর পুজো শুরু করেন। সেই পুজোই এখনও চলে আসছে। জনশ্রুতি, পুজোর প্রতিষ্ঠাতা পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে তন্ত্রধারকের কাজ করতেন। এখনও দেবীর পুজোয় সে রকম আসনেই বসেন তন্ত্রধারক। দেবীর মন্দির তৈরি করে দিয়েছিলেন সম্রাট আকবরের সেনাপতি মানসিংহ। পরবর্তী কালে ব্যান্ডেল-কাটোয়া রেললাইন তৈরির সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মন্দিরের গায়ে ভক্তদের বসার জন্য বারান্দা তৈরি করে দিয়েছিলেন।
এখানে দেবী বড় ঠাকরুন নামে পরিচিত। এখানকার দেবীর মতো একই রকম মূর্তি দেখা যায় কিছু দূরে মুস্থূলি ও দাঁইহাটের পাইকপাড়ায়। তাঁরা মেজো ও ছোট ঠাকরুন নামে পরিচিত। নলাহাটি গ্রামের বড় ঠাকরুন সারা বছর পূজিত হন। এখানকার প্রধান পুরোহিত বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঘট ছাড়াই দেবীর পুজো হয়। ঘট থাকে না বলে দেবীকে আবাহন করারও কোনও পদ্ধতি নেই।”
—নিজস্ব চিত্র।
নলাহাটিতে পুজোর দিন সকালে এলাকার সধবা মহিলারা চালভাজা-সহ পাঁচ রকমের ভাজা দিয়ে দেবীর কাছে পুজো দেন। তার পরে সকলে মেতে ওঠেন সিঁদুরখেলায়, যা এলাকায় ‘এয়োজাত’ পুজো বলে পরিচিত। এখানে রাতভর পুজো হয়। পুরোহিত দীপল মুখোপাধ্যায় জানান, অন্য জায়গার সঙ্গে এখানে পুজোর নিয়মনীতি কিছুটা আলাদা। পুজোর পরে ভোগ, বলিদান, হোম, সব শেষে আরতি হয়। তিনি বলেন, “দেবীর পায়ে অঞ্জলি দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। সে জন্য কোনও ভক্তই অঞ্জলি দেওয়ার সুযোগ পান না।” পুজোর সময়ে নহবতও বসে। নিয়ম অনুযায়ী পুজোর আগের দিন রঙ করা হয় প্রতিমা।
পুজোর সময়ে দু’দিন ধরে মেলা বসে নলাহাটি গ্রামে। ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ এই উপলক্ষে জড়ো হন এই গ্রামে। বিসর্জনের সময়ে পুকুরপাড়ে প্রতি বছর আতসবাজির প্রদর্শনী হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দেবীকে কাঁধে চাপিয়ে বা গাড়িতে করে বিসর্জন দিতে নিয়ে যাওয়া হয় না। প্রতিমা বাঁশে বেঁধে মাটির রাস্তা দিয়ে টানতে টানতে পুকুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক প্রস্থ পুজোর পরে বিসর্জন দেওয়া হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.