|
|
|
|
|
নজর রাখো |
রাজ্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের বিভিন্ন ধরনের পড়াশোনার দায়িত্ব সামলায়
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। তাদেরই স্বীকৃত কিছু পাঠ্যক্রম ততটা প্রচারের আলোয়
না থাকলেও, পেশার দুনিয়ায় যথেষ্ট আকর্ষণীয়। লিখছেন কৌলিক ঘোষ। |
বদলটা ঘটেছিল গত ২০০৩ সালে। রাজ্যে চিকিৎসা শাস্ত্রের স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচ ডি-সহ গবেষণার সমস্ত পাঠ্যক্রম তো বটেই, সঙ্গে দাঁতের চিকিৎসা, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, ইউনানি, নার্সিং, ফার্মাসি, ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি এবং বাকি সব প্যারামেডিক্যাল পাঠ্যক্রমেরও যাবতীয় দায়িত্ব তুলে নিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় (ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সায়েন্সেস)। ফলে এক দিকে কার্যত বিভেদ ঘুচেছে কলকাতা ও জেলাগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে। কারণ সমস্ত কলেজেই বিষয়গুলি পড়ানোর ক্ষেত্রে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি, খাতা দেখা, ফল প্রকাশ ইত্যাদি সামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ই। আর অন্য দিকে উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি অভিনব ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা পাঠ্যক্রম। যেগুলি পড়ায় বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃত হওয়ায় পেশার দুনিয়ায় পাঠ্যক্রমগুলি স্বাভাবিক ভাবেই যথেষ্ট ওজনদার। যেমন, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, মেডিক্যাল বায়োটেকনোলজি, স্পিচ থেরাপি ইত্যাদি। |
|
এখন এক ছাতার নীচে সকলেই |
আগে কলকাতার সব মেডিক্যাল কলেজই ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। যেমন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় বা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। এখন সেই বিভেদ মিটেছে। সকলে একই ছাদের তলায়। রাজ্যের সরকারি বা বেসরকারি প্রতিটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ যেমন রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত, তেমন প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজ এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পাঠ্যক্রম পরিচালনা করে এমন সব প্রতিষ্ঠানই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত।
ফলে এম বি বি এস, এম ডি, এম এস থেকে শুরু করে হোমিওপ্যাথি পড়ার জন্য বি এইচ এম এস, ইউনানি পড়ার জন্য বি ইউ এম এস, বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নার্সিং, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, বা ফিজিওথেরাপি-র মতো বহু পাঠ্যক্রম চলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধীনে।
১০+২ স্তর পেরনোর পর রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে এমবিবিএস, ইউনানি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, নার্সিং ইত্যাদি পাঠ্যক্রমে মেডিক্যাল কলজে বা নার্সিং কলেজে ভর্তি হওয়া যায়। যেটির আয়োজক রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রাস বোর্ড। এর পর দফায় দফায় বিভিন্ন পাঠ্যক্রমের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি, পরীক্ষা নেওয়া, খাতা দেখা, ফলাফল প্রকাশ, কনভোকেশন-সহ একাধিক দায়িত্ব সামলায় রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়টি পাশ করার পর সার্টিফিকেটও দেয় তারাই।
|
উঠে এসেছে বেশ কিছু ভাল পাঠ্যক্রম |
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য প্রবীর শূর-এর কথায়, “এম বি বি এস-এর পর যে এম এস কিংবা এম ডি পড়ানো হয়, আবার নার্সিং-এ বি এসসি-র পর এম এসসি, এ তথ্য কারও অজানা নয়। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি নিয়ে বহু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন অনেক পাঠ্যক্রমই চলে, যেগুলি সম্পর্কে বেশির ভাগ পড়ুয়াই অন্ধকারে।” এই রকমই কয়েকটি পাঠ্যক্রম সম্পর্কে জানালেন তিনি।
১) ডিপ্লোমা ইন হেল্থ এডুকেশন: চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক উত্তীর্ণরা ছাড়াও কলা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, এডুকেশন এবং নার্সিং-এ স্নাতকরা এই কোর্সে ভর্তির যোগ্য। পাঠ্যক্রমটি চালু রয়েছে কলকাতার অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ-এ। ভর্তির জন্য ৮০ মিনিটের একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়। পূর্ণমান ১০০ নম্বর।
২) ডিপ্লোমা ইন ডায়েটেটিক্স: এক বছরের এই পাঠ্যক্রমটিতেও ফিজিওথেরাপি, কেমিস্ট্রি, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিক্স এবং নার্সিং-এ স্নাতক ডিগ্রিধারীরা ভর্তি হতে পারবে। পড়ানো হয় কলকাতার অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ-এ। এটির প্রবেশিকা পরীক্ষাও ১০০ নম্বরের। মোট সময় ৮০ মিনিট।
অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘আলি ইয়াবর জং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপ্ড’-এর পূর্বাঞ্চলীয় শাখাটি অবস্থিত বনহুগলির ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দ্য অর্থোপেডিক্যালি হ্যান্ডিক্যাপ্ড’-এর চত্বরেই। আর ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপ্ড’-এর বেশ কয়েকটি পাঠ্যক্রম রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃত। এর অন্যতম হল ব্যাচেলর ইন অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি এবং মাস্টার ইন অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি কোর্স দুটি।
৩) ব্যাচেলর ইন অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি: রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত এবং আলি ইয়াবর জং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপ্ড অনুমোদিত চার বছরের ব্যাচেলর ইন অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি কোর্সে ভর্তির জন্য পরীক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং ইংরেজি নিয়ে ১০+২ পাশ করতে হবে। পাঠ্যক্রমটিতে ভর্তি হতে প্রথমে বসতে হবে একটি সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায়। প্রবেশিকাটিতে যে সব বিষয় রয়েছে সেগুলিও ওই পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং ইংরেজি। মার্চ-এপ্রিল নাগাদ এই বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। পরীক্ষা হয় জুন নাগাদ। মুম্বই ও কলকাতাতেই প্রবেশিকাটি হয়। কলকাতায় এই বিষয়টিতে আসন রয়েছে ৩৩টি।
|
(বাকি অংশ পরবর্তী সপ্তাহে)
|
|
খেয়াল রাখুন |
|
এ দেশে এখন অনেক বেশি অ্যানিমেশন ও ভিস্যুয়াল এফেক্ট নির্ভর সিনেমা তৈরি হয়। ফলে বাড়ছে দক্ষ পেশাদারের চাহিদাও। অ্যানিমেশনের কাজ জানার পাশাপাশি যাদের সিনেমার খুঁটিনাটি সম্পর্কে জ্ঞান থাকাটাও জরুরি। সেই চাহিদা পূরণের লক্ষ্যেই অ্যানিমেশন এবং সিনেমার বিবিধ বিষয়ের মেলবন্ধন ঘটিয়ে স্নাতকস্তরে একটি নতুন পাঠ্যক্রম চালু করল বিগ এইমস। ১০+২ পাশের পর ভর্তি হওয়া যাবে। আগামী শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ৩০ অক্টোবর। দেখে নাও www.bigaims.in ওয়েবসাইটটি।
|
কলকাতার দ্য অ্যাকাডেমিক্স ইনস্টিটিউট কলেজ শিক্ষকতা বা গবেষণার জন্য আয়োজিত নেট ও রাজ্য স্তরে সেই মাপের পরীক্ষা সেট-এর ১০টি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তাদের নতুন শিক্ষা মরসুম চালু হচ্ছে ডিসেম্বরে। ভর্তির জন্য নাম নথিভুক্তিকরণ চলছে। দেখে নাও www.academicskolkata.com ওয়েবসাইটটি।
|
আপনার প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞের উত্তর |
|
|
প্রশ্ন: একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওয়ার্কশপে কাজ করি। আংশিক সময়ের জন্য মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা কোথায় পড়ানো হয়?
বিষ্ণুপদ ঘোষ, বিষ্ণুপুর
উত্তর: ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন অনুমোদিত যে সমস্ত পলিটেকনিক কলেজে পার্ট-টাইম ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়, সেগুলি হল নর্থ ক্যালকাটা পলিটেকনিক, আই সি ভি পলিটেকনিক, হুগলি ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, আসানসোল পলিটেকনিক, সেন্ট্রাল ক্যালকাটা পলিটেকনিক, এমপ্লয়ি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার অফ এন টি পি সি (ফরাক্কা)। দেখে নাও www.wbscte.org ওয়েবসাইটটি।
প্রশ্ন: ইংরেজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মিস্লেনিয়াস সার্ভিসেস পরীক্ষার মাধ্যমে কোন কোন সরকারি পদে চাকরি পাওয়া যায় এবং এই পরীক্ষার বসার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী জানতে চাই।
অভীকশুভ্র হালদার, ডায়মন্ডহারবার
উত্তর: ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশন আয়োজিত মিস্লেনিয়াস সার্ভিসেস রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্য সরকারি যে সমস্ত পদের জন্য নিয়োগ করা হয় সেগুলি হল অ্যাসিসটেন্ট চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অফিসার, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অফিসার বা ব্লক ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অফিসার, ব্লক ইউথ অফিসার বা মিউনিসপ্যাল ইউথ অফিসার অথবা বোরো ইউথ অফিসার, সাব ইন্সপেক্টর অফ এক্সাইজ, বুক ওয়েলফেয়ার অফিসার/ ওয়েলফেয়ার অফিসার, ইন্সপেক্টর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস ওয়েলফেয়ার, অ্যাসিসন্ট্যাট এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং অফিসার, অ্যাসিসট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার, কন্ট্রোলার অফ কারেকশনাল সার্ভিসেস, ইনস্পেক্টর অফ এগ্রিকালচারাল ইনকাম ট্যাক্স, কনজিউমার ওয়েলফেয়ার অফিসার, সেভিং ডেভেলপমেন্ট অফিসার, ওয়েস্ট বেঙ্গল সাব-অর্ডিনেট লেবার সার্ভিস, অডিটর অফ কো-অপারেটিভ সোসাইটিজ, অ্যাসিসটান্ট অডিটর (বোর্ড অফ রেভিনিউ), এক্সটেনশন অফিসার (মাস এডুকেশন এক্সটেনশন) ইত্যাদি।
যে কোনও বিষয়ে স্নাতক হলেই এই মিস্লেনিয়াস সার্ভিসেস পরীক্ষায় বসা যায়। তবে পরীক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ২০ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।
প্রশ্ন: ২০১২ সালে সর্বভারতীয় হোটেল ম্যানেজমেন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষায় বসতে চাই। এই পরীক্ষা দিয়ে কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পড়া যায়?
তন্ময় বসু, বেলুড়
উত্তর: কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কেটারিং টেকনোলজি (এনসিএইচএমসিটি) আয়োজিত প্রবেশিকার মাধ্যমে ৩৩টি সরকারি ও ১৯টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যায়। এর মধ্যে ২৮টি কেন্দ্রীয় সরকারের ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট (আইএইচএম) এবং পাঁচটি রাজ্য সরকারের ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট রয়েছে। এই রাজ্যে দু’টি প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে এনসিএইচএমসিটি-র হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাঠ্যক্রম করানো হয়। একটি হল সরকারি প্রতিষ্ঠান, তারাতলার ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট ও অন্যটি বেসরকারি, পানিহাটির গুরুনানক ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট। |
|
|
|
|
|