দীপাবলি আসিয়া গেল। আলোয় টের না পাওয়া গেলেও শব্দে মালুম হইতেছে। সরকার নিষেধ করুক, আর পুলিশ কান মলিয়া দিক, শব্দবাজির আকর্ষণ পশ্চিমবঙ্গবাসী কাটাইয়া উঠিতে পারে নাই। যেই বাজিতে শুধু আলোর রোশনাই হয়, শব্দে প্রতিবেশীর পিলে চমকাইয়া যায় না, তাহাতে আর আনন্দ কী? টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন বহু পূর্বেই শিখাইয়াছিল, আপনার গর্ব, পড়শির ঈর্ষা। ইহা কূটভাষ। ব্যাখ্যা করিলে দাঁড়ায় যাহাতে পড়শির ঈর্ষা হইবে না, তাহাতে আপনার গর্ব হওয়ার কোনও কারণ নাই। দীপাবলিতে হাজার হাজার টাকা খরচ করিয়া বাজি কেনা কেন? যথেষ্ট ফুর্তি না হইলে টাকা উসুল হইবে? ফুর্তির প্রধানতম উৎস পড়শির ঈর্ষা। আলোর বাজি কিনিয়া চোখ ধাঁধাইয়া দিবেন ভাবিলে ভুল হইবে। পড়শিও বুদ্ধিমান, বাড়ির দরজা-জানালা আঁটিয়া বাংলা সিরিয়ালে সন্ধ্যা কাটাইয়া দিবে। ব্যস, টাকা জলে। কোন দরজা-জানালার সাধ্য শব্দবাজির আওয়াজ ঠেকাইয়া রাখে! শব্দ আলোর ন্যায় ভদ্র নহে, বন্ধ দরজা ভেদ করিয়া মরমে প্রবেশ করিয়া তবে থামিবে। ফলে, আপনি যে দীপাবলির ফুর্তিতে বহু টাকা ব্যয় করিয়াছেন, এই কথাটিও পড়শির মরমে চিরস্থায়ী। অতএব ঈর্ষা। ততঃপর, আনন্দ। |