ক্লিয়ারিং এজেন্টদের সঙ্গে শুল্ক দফতরের কিছু কর্মীর দুর্ব্যবহারের অভিযোগকে কেন্দ্র সোমবার বহির্বাণিজ্য বন্ধ থাকল বনগাঁর পেট্রাপোলে। ফলে এদিন এ পার থেকে কোনও পণ্যবোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে ঢোকেনি। সে দেশ থেকেও এ পারে ঢোকেনি কোনও ট্রাক।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রাপোলে প্রায় দেড়শো ক্লিয়ারিং এজেন্ট রয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তীর অভিযোগ, “শুল্ক দফতরের কর্মীদের একাংশ ক্লিয়ারিং এজেন্টদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই খারাপ ব্যবহার করছিলেন। |
নানা অজুহাতে কাগজপত্র আটকে রাখছিলেন। ফলে বাণিজ্যের পরিমাণ কমে গিয়েছিল। শুল্ক দফতরকে আমরা মৌখিকভাবে সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। উল্টে দুর্ব্যবহার বাড়ছিল। তাই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।” বনগাঁর মহকুমাশাসক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ দিন পেট্রাপোলে পণ্য আমদানি রফতানির কাজ বন্ধ ছিল। ক্লিয়ারিং এজেন্টরা শুল্ক দফতর নিয়ে তাঁদের কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সমস্যা মেটাতে শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব।” এ দিন বাণিজ্য বন্ধের জেরে সীমান্তের কাছে এ পারে যশোহর রোডে সার সার দাংড়িয়ে পড়ে পড়্যবোঝাই ট্রাক। ফলে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটে নাকাল হল নিত্যযাত্রীরা। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গোপাল শেঠ বিষয়টি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষকে জানিয়েছেন। |
যশোহর রোডে পণ্যবোঝাই ট্রাকের সারি। |
এদিকে ক্লিয়ারিং এজেন্টদের এ হেন অভিযোগ নিয়ে শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, এ নিয়ে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি। কেন তাঁরা লিখিত ভাবে তাঁদের সমস্যার কথা জানাননি জানতে চাওয়া হলে কার্তিকবাবু বলেন, “বিষয়টি আমাদের মূল সংগঠন ক্যালকাটা কাস্টমস হাউস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। যেহেতু আমরা তাঁদের কর্মচারী। লিখিত অভিযোগ করা হয়নি কারণ, শুল্ক দফতরের অভ্যন্তরীন ব্যাপার আমরা প্রকাশ্যে আনতে চাইনা। মূল সংগঠনকে জানিয়েই আমাদের এই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত।” এদিকে এ দিন ক্লিয়ারিং এজেন্টদের কর্মবিরতির জেরে প্রায় তিন থেকে চার হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক যশোহর রোড এবং বনগাঁ-চাকদহ রোডে দাঁড়িয়ে পড়ায় পেট্রাপোল থেকে বনগাঁর মিলিটারি রোডের মুখ পর্যন্ত যান চলাচাল কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। শুধু এ দিনই নয়, বাণিজ্যের গতি কমে যাওয়ায় সম্প্রতি বনদাঁ-চাকদহ সড়কের দু’ধারে পণ্য বোঝাই ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের অভিযোগ, নতুন ঝাঁ চকচকে রাস্তা করেও কোনও লাভ হয়নি। এমনিতেই ওই রাস্তা দুর্ঘটনা প্রবণ। তার উপর রাস্তার দু’ধারে সারি সারি ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখায় দুঘর্টনার আশঙ্কা আরও বেড়ে গিয়েছে। |