কর্তাদের পরিদর্শনে থমকাল ট্রেন, হয়রান যাত্রী
যাত্রী সুরক্ষা ব্যবস্থার তদারকিতে আসা পরিদর্শক দলের পাঁচ কামরার বিশেষ ট্রেনের যাতায়াত ‘সুরক্ষিত’ করতে যাত্রী বোঝাই আস্ত একটা ট্রেনকে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে নিমতিতা স্টেশনে আটকে রাখল উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালমুখী রোগী থেকে জরুরি কাজে গাঁ-গঞ্জ থেকে জঙ্গিপুরে পাড়ি দেওয়া কয়েকশো গ্রামবাসীকে নিয়ে ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ রেলপথে ৫৩০৩০ ডাউন ভাগলপুর-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি তাই মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে অতঃপর প্রায় তিন ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে থাকল। রেল কর্তারা লাইন পরিদর্শনের পরে ফিরে গেলে বেলা পৌনে দু’টো নাগাদ ট্রেনটি ‘ছাড়পত্র’ পেলে অবশেষে তা এসে পৌঁছয় জঙ্গিপুরে। তবে দীর্ঘক্ষণ থমকে থাকা ট্রেনের বহু যাত্রীই নিমতিতা স্টেশন নেমে বিক্ষোভ দেখান। আর রেলকর্তাদের খামখেয়ালিপনার তোয়াক্কা না করে ততক্ষণে মরণাপন্ন রোগীকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে জঙ্গিপুর হাসপাতালে পাড়ি দিয়েছেন জিয়াউর রহমান কিংবা সাগরপাড়ার ইকবাল আলি তাঁর চাকরির দরখাস্ত জমা দেওয়ার জন্য ধরেছেন বেসরকারি বাস।
যাত্রী সুরক্ষা ব্যবস্থার তদারকিতে আসা পরিদর্শক। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
জিয়াউর বলেন, “সাঁকোপাড়া হল্ট থেকে পাড়ার এক রোগীকে নিয়ে ট্রেনে উঠেছিলাম। জঙ্গিপুর হাসপাতাল আর কতদূর, বড়জোর মিনিট চল্লিশের রাস্তা। ট্রেন থমকে দেল দেখে শেষে রাস্তায় নেমে নিমতিতার স্থানীয় লোকজনকে জিঝ্ঞাসা করে একটা অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে হাসপাতালে ছুটি।” আর ইকবালের কথা, “ঠায় বসে থাকা যায়। চাকরির দরখাস্ত জমা দেওয়ার সোমবারই ছিল শেষ তারিখ। তাই প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে বাস ধরে নিলাম বলে রক্ষে!”
আর রেলকর্তারা কী বলছেন? মালদহের এডিআরএম অমরেশ গুপ্তা ভাবলেশহীন গলায় বলছেন, “হ্যাঁ, যাত্রীদের একটু অসুবিধা হয়েছে ঠিকই, তবে সিঙ্গল লাইন তো, ট্রেনটা আটকে না রেখে উপায় ছিল না।”
‘যাত্রী সুরক্ষার’ কথা মাথায় রেখেই এ দিন সকাল থেকে উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলের মুখ্য সুরক্ষা আধিকারিক প্রেমচন্দ্র-সহ পদস্থ রেলকর্তাদের নিয়ে ওই বিশেষ ট্রেনটি এ দিন সকালে মালদহ থেকে রওয়ানা দেয়। রেলকর্তাদের নিয়ে ট্রেনটি জঙ্গিপুরে পৌঁছতেই নিমতিতায় আটকে দেওয়া হয় ওই প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে। অনেকে নেমে গেলেও নামার উপায় ছিল না অনেকেরই। ট্রেনটি কখন ছাড়বে সে ব্যাপারেও নিমতিতা স্টেশন মাস্টার কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। ফলে ঠায় বসে থাকা রোদে তেতে থাকা কামরায় প্রায় নির্জলা কাটাতে হয় যাত্রীদের। খানিক পরেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে তাঁদের। শুরু হয় বিক্ষোভ স্টেশন চত্বর জুড়ে ক্রমেই বাড়তে থাকে উত্তেজনা। ব্যাপারটা যে ‘ভাল’ হয়নি তা অবশ্য মেনে নিয়েছেন প্রেমচন্দ্রও। তিনি বলেন, “এ ভাবে যাত্রীদের আটকে রাখা ঠিক হয়নি। আমি এ ব্যাপারে এডিআরএম-কে (মালদহ) খোঁজ নিতে বলেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.