নির্মাণের ব্যবসা ছেড়ে হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়তো নতুন কিছু নয়। কিন্তু সেই উদ্যোগী নিজে যদি হন ক্যানসার রোগী?
টেবিল টেনিসে অলিম্পিকের খেতাবও হয়তো কিছুদিনই ঝড় তোলে আড্ডা-আলোচনায়। কিন্তু সেই বিজয়ী যদি হন মানসিক প্রতিবন্ধী?
ওঁরা আসলে ভিড়ের মধ্যেও আলাদা, উজ্জ্বল। কখনও নিজের কৃতিত্বে, কখনও অন্যকে ভাল রেখে। ওদের জন্যই আরও খানিকটা এগিয়ে যায় সমাজ। প্রচারের আড়ালে থাকা সেই মানুষগুলোকে ফের খুঁজে নিল ‘অফিসার্স চয়েস আনন্দলোক সালাম বেঙ্গল’। শিক্ষা, চিকিৎসা, খেলাধুলো ও সাহসিকতা চার বিভাগে গোটা কলকাতার মুখ উজ্জ্বল করা চার সেরাকে স্বীকৃতি দিল শনিবার সন্ধ্যার জি ডি বিড়লা সভাগার। যাঁদের বেছেছেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, অভিরূপ সরকার, দিব্যেন্দু বড়ুয়া ও অগ্নিমিত্রা পাল। রিমঝিম মিত্রের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের বাড়তি পাওনা ইন্দ্রাণী সেন, শ্রীকান্ত আচার্যের গান। |
‘অফিসার্স চয়েস আনন্দলোক সালাম বেঙ্গল’-এর বিজয়ীরা। শনিবার, জিডি বিড়লা সভাগারে। ছবি: সুমন বল্লভ |
চোদ্দো বছর ধরে বঞ্চিত শিশুদের পাশে অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। শিশুশ্রমিক, পথশিশু, যৌনকর্মীদের সন্তানদের শিক্ষার আঙিনায় আনতে নিরন্তর খাটছেন তাঁরা। বাবা-মাদের বুঝিয়ে শিশুদের স্কুলে আনা, বইপত্র জোগানো শিক্ষা বিভাগে সেরা সেই অরিন্দমবাবুই।
১০ বছর বয়সেই অসুস্থতা ঘিরে ফেলেছিল। লিউকেমিয়ার রোগী অরুণ নেওয়াটিয়া দমেননি। নির্মাণের ব্যবসা ছেড়ে জেলায় জেলায় গড়ছেন হাসপাতাল। দুঃস্থদের নিখরচায় ওষুধপত্র ও চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি সেখানে অস্ত্রোপচারও হয়। আগামী ৫ বছরে এক লক্ষ মানুষের কাছে চিকিৎসা পৌঁছনোর স্বপ্ন দেখা অরুণবাবুই নজির গড়েছেন চিকিৎসা বিভাগে।
ক্রীড়া বিভাগে শিরোপা শুভজিৎ নাগের। মানসিক প্রতিবন্ধী শুভজিৎ টেবিল টেনিসে ২০০৮ সালে রাজ্যের সেরা ও ২০০৯ জাতীয় স্তরে রানার্স হন বিশেষ বিভাগে। তার পরে অ্যাথেন্সে স্পেশাল অলিম্পিকে সোনা জেতার স্বপ্নের দৌড়।
সাহসিকতায় এ বছরের উজ্জ্বল মুখ স্বপনকুমার খুটিয়া। রেলের টিকিট পরীক্ষক স্বপনবাবু চাকরির প্রথম দিন থেকেই নিগ্রহের তোয়াক্কা না করে ধরেছেন বিনা টিকিটের যাত্রী, নিয়মবহির্ভূত মালপত্র। ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সুস্থ হয়েই ফের ফিরেছেন কাজে। ওঁদের ‘সালাম’ না জানিয়ে বোধহয় উপায়ও ছিল না! |