এক একরের গেরোয় আটকে ছিল পলিটেকনিক কলেজ। জমি দান করে সমস্যা মিটিয়ে দিলেন দুই ভাই।
পুরুলিয়ার মাওবাদী উপদ্রুত বাঘমুণ্ডিতে রাজ্য সরকার পলিটেকনিক কলেজের অনুমোদন দিলেও স্রেফ এক একর জমি না মেলায় তা আটকে ছিল। জানতে পেরে স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ী দু’ভাই এক একর জমি ওই কলেজ তৈরির জন্য দান করেছেন। শাহরিয়ার খান ও আসাদ খান শুক্রবার পুরুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রারের অফিসে এসে নিজেদের জমিটি কারিগরি শিক্ষা দফতরের সচিবের নামে দানপত্র করে দেন। বাঘমুণ্ডিতে খাসজমি লাগোয়া ওই জমি পেয়ে যাওয়ায় প্রস্তাবিত পলিটেকনিক কলেজ তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেল বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। |
পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ এ দিন বলেন, “এত দিন পলিটেকনিক কলেজ তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জমি পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই দুই ভাই জমি দান করায় সে সমস্যা মিটল। কলেজ তৈরির কাজ শুরু করতে কারিগরি দফতরকে অনুরোধ জানাব।” রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জমি জটে কলেজ তৈরি করা যায়নি বলে শুনেছিলাম। বাঘমুণ্ডির দুই ভাই জমি দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ বার কলেজ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা করব।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে এই এলাকায় কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য পলিটেকনিক কলেজ তৈরির অনুমোদন করে রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতর। বাঘমুণ্ডি-ঝালদা সড়কের পাশে সরকারের চার একর এক ডেসিমেল খাসজমি ছিল। কিন্তু পলিটেকনিক কলেজ তৈরির জন্য আরও প্রায় এক একর জমির প্রয়োজন ছিল। বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতোর কথায়, “কারিগরি শিক্ষা দফতর জানিয়েছিল, এ ধরনের কলেজ তৈরির জন্য ন্যূনতম পাঁচ একর জমির প্রয়োজন। বাঘমুণ্ডিতে চার একরের সামান্য বেশি খাস জমি রয়েছে। বাকি জমি পেলেই দফতর কলেজ গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে।” তিনি জানান, ওই জমি লাগোয়া ব্যক্তিগত জমির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর কাছে জমি দানের প্রস্তাব শুনে ওই দুই ভাই এক একর জমি দিতে রাজি হয়ে যান।
শাহরিয়ার ও আসাদ বলেন, “নেপালবাবুর কাছে শুনলাম জমির অভাবে পলিটেকনিক কলেজ হচ্ছে না। রাস্তার ধারে আমাদের ওই জমির দাম অনেক হলেও তা সরকারকে দান করার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করিনি। এতে বাঘমুণ্ডির উন্নয়ন হবে। এলাকার ছেলেমেয়েরা কারিগরি শিক্ষা পেয়ে চাকরি পেলেই আমরা খুশি হব।” তাঁরা জানিয়েছেন, বাবা ঔরঙ্গজেব খান তাঁদের উচ্চ শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা মাধ্যমিকের বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। এখন বাঘমুণ্ডি মোড়ে তাঁরা ওষুধের ছোট দোকান চালান।
পুরুলিয়ার সাংসদ ফরওয়ার্ড ব্লকের নরহরি মাহাতো বলেন, “আজকের দিনে এতটা জমি দান নিঃসন্দেহে প্রশংশনীয়। এ বার আশা করি সরকার কলেজ তৈরিতে এগিয়ে আসবে।” |