কাশিমবাজার স্টেশনের খুব কাছে মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরের উচ্চতম মন্দির ব্যাসপুরের শিবমন্দিরের সম্প্রতি ২০০ বছর পূর্ণ হল। ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে কাশিমবাজারের বিখ্যাত পণ্ডিত রামকেশব দেবশর্মন ওই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর পুত্র কৃষ্ণনাথ ন্যায় পঞ্চানন বিখ্যাত পণ্ডিত ছিলেন। কৃষ্ণনাথ ন্যায় পঞ্চানন এক সময় নবদ্বীপের প্রধান স্মার্ত, শ্রীভারত ধর্মমহামণ্ডলের ব্যবস্থাপক এবং ‘মহামহোপাধ্যায়’ উপাধি প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল ‘স্মৃতিসিদ্ধান্ত’ ‘শ্যামাসন্তোষ’ ইত্যাদি। বিখ্যাত নীলদর্পণ নাটক প্রণেতা দীনবন্ধু মিত্র তাঁর ‘সুরধনী’ কাব্যে কৃষ্ণনাথ ন্যায় পঞ্চানন সর্ম্পকে লিখেছেন, “কাশিমবাজারে তাঁর ছিল বাসস্থান/ মরিয়ে জীবিত শ্রেষ্ঠ বিদ্যা করি দান।” কৃষ্ণনাথের পিতা রামকেশবের প্রতিষ্ঠিত ওই মন্দিরের নির্মাণ শৈলি অভিনবত্বের দাবিদার। বর্গাকার ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ওই মন্দিরের প্রথম অংশের উপরিভাগ বাঁকানো কার্নিসযুক্ত। তার উপরে রয়েছে উল্টানো পদ্মপাপড়ির মতো ৮টি অংশ। তার উপরে রয়েছে ছোট ছোট পদ্মপাপড়ির মতো নির্মাণ শৈলি। সর্বোচ্চ অংশে রয়েছে আটকোনা গম্বুজসম চূড়া। ওই চূড়া দেখতে অনেকটাই উল্টানো পদ্মপাপড়ির মতো। চূড়ার ৮টি কোনে ৮টি উপবিষ্ট মূর্তি দেখা যায়। মন্দিরের বর্হিভাগের তিন দিকের দেওয়ালে রাধাকৃষ্ণ, কালী, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও দুর্গার মূতি রয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহের প্রবেশপথে দোচালা জাতীয় একটি বারান্দা সংযুক্ত রয়েছে। তাতে রয়েছে উৎকৃষ্ট টেরাকোটার কাজ। গর্ভগৃহে রয়েছে কষ্টিপাথর নির্মীত প্রায় ৫ ফুট উচ্চতার বিরলদৃষ্ট বৃহৎ শিবলিঙ্গ। মন্দিরটি জীর্ণ হয়ে পড়লে ১৯১৮ সালে ব্যাপক সংস্কার করে দেন লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়। ওই কাজের তত্তাবধায়ক ছিলেন বিশিষ্ট জাতীয়তাবাদী নেতা রায়বাহাদুর বৈকুণ্ঠনাথ সেন। তার পর ১৯৯৫ সালে মহারাষ্ট্র নিবাসী অমিতকুমার ভোঁসলে ওরফে বালুবাবু পুনরায় মন্দির সংস্কার করে দেন। বৈশাখে, শ্রাবণে ও শিবরাত্রিতে মন্দিরে বিশেষ উৎসব পালিত হয়। তবে মন্দিরের চারপাশে নতুন করে স্তম্ভ নির্মাণের ফলে মন্দিরের সৌন্দর্যহানি হয়েছে। দু’শো বছরের প্রাচীন ওই মন্দির বহরমপুরের তো বটেই, গোটা জেলারও গর্ব। |
সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মদনমোহন তর্কালঙ্কার’ শিরোনামের চিঠির প্রেক্ষিতে এই চিঠি। মদনমোহন সর্ম্পকে আরও আলোচনা চেয়ে তিনি চিঠিটি শেষ করেন। মদনমোহন তর্কালঙ্কার (১৮১৭-১৮৫৮)-এর জন্ম নদিয়ার বিল্বগ্রামে। পিতার নাম রামধন চট্টোপাধ্যায়। মদনমোহন ছিলেন কবি, পণ্ডিত, নব আন্দোলনের পূর্বসূরী এবং মিল, বেন্থাম, কোঁৎ ও জেরেমি টেলরের ভাবশিষ্য সমাজ বিপ্লবী বিদ্যাসাগরের মনের দোসর। তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি নিয়েছিলেন। মদনমোহন নিরীশ্বরবাদী ও প্রগতিশীল মনের অধাকারী হয়েও বাংলা কাব্যে কোনও যুগান্তর আনতে সক্ষম হননি। বাঙালি রেনেসাঁসের নান্দীপাঠ না করে তিনি পুরাতন ও গলিত আদর্শকে আঁকড়ে ধরে সৃষ্টি করেন ‘রসতরঙ্গিনী’ (১৮৩৪) ও ‘বাসবদত্তা’ (১৮৩৬)। দু’টি কাব্যেই তিনি রায় গুনাকর ভারতচন্দ্রকে অনুসরণ করেন। অন্নদা মঙ্গলের কবি ভারতচন্দ্রের সঙ্গে মদনমোহনের প্রতিভা ও সৃষ্টির আত্মীয়তা প্রতীয়মান হয়। ‘শিশুশিক্ষা’ নামে তাঁর লেখা তিন খণ্ডের পুস্তকটি অত্যধিক জনপ্রিয় হয়। পরবর্তী সময়ে রেনেসাঁস ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন বাংলা গঠনের জন্য শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে তিনি মনোনিবেশ করেন। |
মুসলিমদের বিশেষ দু’টি উৎসব ঈদ-উল ফিতর ও ঈদুজ্জোহা। অথচ বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায়, ঈদের আগের অথবা পরের দিন পরীক্ষা থাকে। আমি কৃষ্ণনগর হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। এ বছরও ‘বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চ’ আয়োজিত আমাদের ‘ভূগোল মেধা অনুসন্ধান’ পরীক্ষাটি রয়েছে ঈদুজ্জোহার আগের দিন। এবং দু’ দিন পরেই রয়েছে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। প্রায় প্রতি বছরই এ রকম হয়। প্রতিটি ঈদে দাদু আমাদের গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য বলেন। প্রতি বারই তাঁকে ‘পরীক্ষা আছে’ বলতে খুব খারাপ লাগে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, “ঈদের জন্য কম পক্ষে তিন দিন ছুটি বরাদ্দ করুন। তা হলে আমরা উৎসব উপভোগ করতে পারব। পরীক্ষাও দেওয়া যাবে।” |
কৃষ্ণনগরের কালেক্টরি মোড়ে রয়েছে নদিয়া জেলার কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবন। সেখানে রয়েছে অধিকাংশ সরকারি দফতরের কার্যালয়। ওই লাগোয়া এলাকায় রয়েছে পুলিশ সুপারের বাংলো, তাঁর কার্যালয়, রেজিস্ট্রি অফিস, ডি আই বি অফিস, ডি ই বি অফিস-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কার্যালয়। ফলে স্বাভবিক নিয়মেই ওই এলাকায় কাজের প্রয়োজনে সারা জেলা থেকে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে যেতে হয়। কিন্তু ওই এলাকায় সাধারণের ব্যবহার করার মতো শৌচালয় না থাকায় সবাইকেই, বিশেষত মহিলাদের নিদারুণ বিপাকে পড়তে হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে সুলভ শৌচালয় নির্মাণ করে দিলে বিপাকে পড়া মানুষ ভীষণ উপকৃত হয়।
|