গাফিলতির নালিশ, বিক্ষোভ হাসপাতালে
সাপের ছোবলে অসুস্থ এক শিশুর মৃত্যুর জেরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, শিশুটির নাম স্বপ্না চৌধুরী (৫)। বাড়ি বাগডোগরার গোঁসাইপুরের চণ্ডাল জোতে। পরিবারের লোকদের অভিযোগ, স্বপ্নার ডান পায়ে এ দিন একটি গোখরো সাপ কামড়ায়। তখনই পায়ে যেখানে ছোবল রয়েছে তার উপর শক্ত করে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অথচ জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলেও দায়িত্বে থাকা নার্স সেই ব্যবস্থা করেননি বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকেরা জানান, পায়ে বাঁধন খুলে দায়িত্বে থাকা নার্স মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকেন। বারবার তাঁকে চিকিৎসার দিকে নজর দিতে বলা হলেও তিনি শুনতে চাননি। চিকিৎসকও দেরিতে পৌঁছন। সময় মতো সমস্ত ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি। তাতেই শিশুটি মারা যায়। শিশুটির মৃত্যুর পর সন্ধ্যায় মৃত সাপ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে এবং সুপারের দফতরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিবারের লোকজন এবং এলাকার বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ যায়। হাসপাতালের সুপার শিশু বিভাগে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
অভিযোগ পেয়ে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে ৪ জনের কমিটি গড়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে কর্তব্যরত অবস্থায় নার্স, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা যাতে মোবাইল ফোন ব্যবহার না করেন সে জন্য সোমবার-ই নোটিশ জারি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শৈবাল গুপ্ত বলেন, “মৃত শিশুর পরিবারের লোকেরা অভিযোগ করেছেন নার্স মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন বলে সময় মতো চিকিৎসা শুরু হয়নি। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহ এ দিন ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চিকিৎসা করার সময় ফোনে কথা বলা নিয়ে অভিযোগ ওঠায় ওয়ার্ডের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে বাড়িতে খেলা করার সময় স্বপ্নার ডান পায়ে ছোবল দেয় একটি গোখরো সাপ। ছোবলের জায়গার উপরে শক্ত করে বেঁধে মা দুলালীদেবী এবং এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা তখনই স্বপ্নাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সাপটিকে মেরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যাতে সাপটি কতটা বিষধর তা বুঝে চিকিৎসা করা যায়। অথচ শিশু বিভাগে দায়িত্বে থাকা নার্স, চিকিৎসকরা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্বপ্নাকে ভর্তি করানোর পরেই চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। তাকে ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। পেশায় দিনমজুর স্বপ্নার বাবা মাননবাবু হাসপাতালের সুপারের কাছে এবং থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। গোসাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আনন্দ ঘোষ বলেন, “খবর পেয়েই আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। পায়ের বাঁধন খুলে নার্স মোবাইলফোনে কথা বলছিলেন। তারও অনেক পরে ইঞ্জেকশন স্বপ্নাকে দেওয়া হয়। তাতে শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকও আসতে দেরি করেছেন। সময় মতো সমস্ত ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি। সে কারণেই স্বপ্নাকে বাঁচানো যায়নি। মরে যাওয়ার পরও স্বপ্নাকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। দোষী নার্স, চিকিৎসকদের শাস্তি দিতে হবে।” মৃতার বাবা মাননবাবু জানান, চিকিৎসার গাফিলতির জন্যই স্বপ্না মারা গেল। নার্স, চিকিৎসকরা গুরুত্ব দিয়ে সময় মতো চিকিৎসা করলে তিনি মেয়েকে হারাতেন না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.