চুনী গোস্বামীর নতুন জীবন শুরু হতে চলেছে মোহনবাগানে। তিনি টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসর হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করার পর দিনই টেকনিক্যাল কমিটি তৈরি করে দিল মোহনবাগান। চুনীর সঙ্গে তিন সদস্যের অভিনব কমিটিতে রয়েছেন প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র তিন সদস্যের নাম ঘোষণা করে জানিয়ে দিলেন, “এই কমিটির সদস্যরা ১৭ তারিখ থেকে ক্লাবের প্র্যাক্টিসে আসবেন। প্র্যাক্টিস দেখার পাশাপাশি ম্যাচ দেখে টিম ম্যানেজমেন্টকে পরামর্শ দেবেন। শুধু এ বছর নয়, পরের বারও ওঁদের দায়িত্ব থাকছে।” চুনী, প্রশান্ত, সত্যজিৎকে পরের বারের মোহনবাগান দল গঠন নিয়েও মতামত দিতে বলা হচ্ছে।
চুনী গোস্বামীর ইচ্ছের কথা শুনেছেন? সোমবার প্র্যাক্টিস থেকে বেরোনর পরে কোচ স্টিভ ডার্বিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। বাগানের বিদেশি কোচ বলেন, “না। আমি ওঁর নাম শুনিনি।” ইএসপিএনের ধারাভাষ্যকার ডার্বির দাবি, ভারতে আসার আগে ভারতীয় ফুটবল নিয়ে পড়াশোনা করে এসেছেন। কিন্তু সর্বকালের সেরা ভারতীয় ফুটবলারের নাম না শোনায় মাঠে অনেকেই বিস্মিত। |
চুনী-প্রশান্ত-সত্যজিতের নাম ঘোষণা করার আগে তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলে নেন কর্তারা। তিন জনই মোহনবাগানের প্রস্তাবে খুশি। চুনী এ দিন বললেন, “প্রশান্ত নিজে ‘এ’ লাইসেন্স কোচ, ইনস্ট্রাক্টর। সত্যজিৎ আবার নতুন প্রজন্মকে ভাল চেনে। দু’জনেই খুব ভাল প্লেয়ার। মোহনবাগানে দীর্ঘদিন খেলেছে। আমার ভাল লাগবে এদের সঙ্গে কাজ করতে।” প্রশান্তর মন্তব্য: “এই সিদ্ধান্ত পেশাদারিত্বের লক্ষণ। এতে মনে হয়, ক্লাবের ভাল হবে।” সত্যজিতের কথায়, “মোহনবাগানের কাজে লাগতে পারলে সব সময় ভাল লাগে।”
টেকনিক্যাল কমিটি কাজ শুরু করলে ডার্বির উপর চাপ অবধারিত বাড়বে। তবে তিন প্রাক্তন তারকাই মনে করছেন, কোচের সঙ্গে তাঁদের ভাল সম্পর্ক থাকবে। অতীতে মোহনবাগানে প্রাক্তন ফুটবলারদের গুরুত্ব দেওয়া হত দলগঠনের সময়। লিগে দল নামানোর আগে কমিটির বৈঠকে থাকতেন প্রাক্তনরা। মাঝে প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন ক্লাবে ক্ষমতায় আসার সময় প্রদীপ চৌধুরী, কম্পটন দত্তকে আসতে বলা হয়েছিল কোচ সুব্রত ভট্টাচার্যকে সাহায্য করতে। অঞ্জনবাবুদের আমলে অশোক চট্টোপাধ্যায়, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক রকম কাজ দেওয়া হয়েছিল। তখন কোচ ছিলেন ব্রাজিলিয়ান পাহিরা। তবে সেই অর্থে সরকারি কোনও টেকনিক্যাল কমিটি হয়নি। মানস-বিদেশদের ধীরে ধীরে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হয়। ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র বলেন, “আমাদের ক্লাবের রুলবুকে নিয়ম রয়েছে, ফুটবল সাব কমিটিতে দু’জন প্রাক্তন তারকাকে রাখতে হবে। আমরা তিন জনকে নিচ্ছি। অতীতে ভারতীয় কোচেরা ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কমিটি থাকলে সমস্যা হত। এ বার আমরা শুরুতেই দুটো ছোট দলের কাছে হেরে গিয়েছি। তাই এমন কমিটি করা হল।” |