আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত ‘দূষণ ছড়ায় মোমবাতির ধোঁয়া থেকেও, বলছেন বিজ্ঞানীরা’ (২১-৯) শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আমরা মোমবাতি প্রস্তুতকারীরা এক সামাজিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েছি।
প্রথমত, এখন পুজোর সময়। আমরা সারা বছর বসে থাকি এই দিনগুলোর জন্য। মানুষের মনে যদি সন্দেহ তৈরি হয় মোমবাতি জ্বালালে দূষণ হয়, তা হলে অনেকেই বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা করবেন। ফলে, এ রাজ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ (প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ) এবং তাঁদের পরিবার না-খেতে পেয়ে মারা যাবে।
দ্বিতীয়ত, আমার ৩৭ বছরের অভিজ্ঞতায় এই প্রথম বিভিন্ন লোককে উত্তর দিতে হচ্ছে, মোমবাতি প্রস্তুত করতে বায়ুদূষণ হয় কি না। কারণ, এই কুটিরশিল্পটি মানুষের ঘরের মধ্যে রয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। অথচ মোমবাতি প্রস্তুতকারকদের পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এক্সম্পেটেড ক্যাটাগরির তালিকায় ৯ নম্বরে রেখেছে। আপনাদের প্রতিবেদক লিখেছেন, ‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে অবশ্য এই বিষয়ে কোনও তথ্য নেই বলে জানানো হয়েছে।’ ফলে, জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে যে খবর নেই, একজন মোম ব্যবসায়ী সেটা জানেন। সংবাদের তথ্য অনুযায়ী কারা এই জাতীয় অশোধিত প্যারাফিন ব্যবহার করেন আমি জানি না। এর একটা পরিসংখ্যান পেলে সুবিধা হত। সাধারণের জ্ঞাতার্থে জানাই, আমরা যে প্যারাফিন ব্যবহার করি সেটা বি আই এস স্বীকৃত আই এস ৪৬৫৪-১৯৭৪। প্রস্তুত করে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের অসম অয়েল ডিভিশন। আমরা স্বীকৃত পরিবেশকদের কাছ থেকেই প্যারাফিন কিনি। তার দ্বারা যে মোমবাতি উৎপাদন করি তার স্পেসিফিকেশন ওয়াক্স ক্যান্ডেল আই এস:১১৩৫৯-১৯৮৫। যাতে দূষণ হয় না। এ কথাটা আমার নয়, সরকারি বিজ্ঞানীদের।
|
মোমবাতি যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ, মোমবাতি ব্যবহার করার আগে মোমবাতির গায়ে আঙুল ঘষবেন। যদি হাতে কিছু লাগে বা মোমবাতির গা থেকে আপনার আঙুলে কিছু উঠে আসে, তা হলে সেটা ব্যবহার করবেন না। সব সময় শক্ত মোমবাতি ব্যবহার করবেন। ইদানীং বাজারে এক ধরনের মোমবাতি আসছে যা ছুড়ে মারলে ভাঙে না। সেটাও ব্যবহার করবেন না। জ্বালানোর আগে পলতে এক সেন্টিমিটার পরিমাণ রেখে বাকিটা কেটে ফেলবেন। মোমবাতি কখনও ফুঁ দিয়ে বা হাওয়া দিয়ে নেভাবেন না। ঠান্ডা জল দিয়ে নিভিয়ে দিলে ধোঁয়াটা তৈরি হবে না।
চিরঞ্জয় চক্রবর্তী। কলকাতা-৬৫
|
আলিপুর পুলিশ কোর্টের বাড়িটিতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা বসেন, সেই বাড়ির প্রবেশপথ এমন পূতিগন্ধময় যে, যেতে গেলে গা-গুলিয়ে ওঠে। বর্ষাকালে তো কোনও কথাই নেই। প্রবেশদ্বারের সামনে একটু বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। তার উপর রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা। সেই সব এড়িয়ে বাড়িটার মধ্যে ঢুকলে দেখা যায়, সিঁড়ি দিয়ে আরম্ভ করে প্রতিটি জায়গায় জঞ্জালের স্তূপ। দেওয়ালগুলি পানের পিকে মাখামখি। সর্বত্রই ধূলিধুসরিত। দেখেশুনে মনে হয়, বাড়িটি তৈরি হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনও ঝাঁট পড়েনি।
আদালতের ঘরগুলির আয়তন এত ছোট (৮ ও ৯ নং বাদে) যে, উকিলবাবুদের স্থান সঙ্কুলান হয় না। মক্কেলরা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁদের সম্মিলিত আওয়াজে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের কাজকর্মে দারুণ ব্যাঘাত ঘটে।
কোনও রকম অনুশাসন না-থাকায় আদালতের কাজকর্ম শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আদালত চত্বরটা মাছের বাজারে রূপান্তরিত হয়।
আদালতের বিপুল পরিমাণ রেকর্ড রাখার ঠিক ব্যবস্থা না-থাকায় এবং মাটিতে অবহেলায় পড়ে থাকায় প্রায়শই তা খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে, সে ক্ষেত্রে মামলা মুলতবি হয়ে যায়।
নতুন সরকার আসার পরেও সেই অবস্থার বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি। বরং অবস্থার কিছুটা অবনতি ঘটেছে।
শাশ্বত গুপ্ত। কলকাতা-৩২
|
বর্ষা শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু দিন হয়ে গেল ৩৪ নং জাতীয় সড়কের অনেক জায়গা এখন যান চলাচলের পক্ষে এমন অযোগ্য হয়ে পড়েছে যে, ওই সব জায়গায় দুর্ঘটনা এখন নদিয়া-মুর্শিদাবাদ জেলা খবরের নিত্যদিনের শিরোনাম। নদিয়ার বেথুয়াডহরির কাছাকাছি বামুনডাঙা, পাগলাচণ্ডীর পানিঘাটা, পলাশির মীরা বাজার সংলগ্ন বেশ কিছুটা এলাকা। বেলডাঙার অনেকটা অংশ এবং এই রকম অনেক জায়গাকেই আর রাস্তা বলে মনে হচ্ছে না। জীবন হাতে নিয়ে মানুষকে বাসে বা অন্য যানবাহনে হাট-বাজার, অফিস, স্কুল, হাসপাতাল বা অন্য কর্মস্থলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি আর ঝুঁকির কারণে অনেক যাত্রিবাহী বাস বন্ধও হয়ে গিয়েছে। যখন-তখন যেখানে-সেখানে গাড়ি ভেঙে রাস্তা জ্যাম।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণের আগে অন্তত স্থানীয় ভাবে স্বল্পমেয়াদি হলেও ভাঙা রাস্তার অংশগুলোয় তাপ্পি মারার ব্যবস্থা করুন। আমার মনে হয়, প্রতি বছরই বর্ষাকালের জন্য স্থানীয় ভাবে তাৎক্ষণিক মেরামতির আপৎকালীন কিছু ব্যবস্থা রাখা খুব জরুরি। রাস্তা সংস্কারের মূল কাজের আগে তাপ্পি দেওয়ার কাজটাকে সমধিক গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের টনক নড়ানোর জন্য কোনও বড় দুর্ঘটনার অপেক্ষায় থাকা নিশ্চয় সমীচীন নয়।
দেশে কত কত প্রযুক্তির সমারোহ, কত বড় বড় পরিকল্পনা অথচ ভাঙা রাস্তায় নির্বিবাদে মানুষ বেঘোরে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। এক দিকে ছোট ছোট কাজের প্রতি ঔদাসীন্য। অন্য দিকে, বড় বড় পরিকল্পনার ছক বড় বিসদৃশ লাগে। সুস্থ চিন্তার পরিবেশটা সংকীর্ণ হয়ে যায়।
সদানন্দ কুশারী। বেথুয়াডহরি, নদিয়া |