এটিএম-এ ‘বন্ধু’ সেজে অ্যাকাউন্ট সাফ, গ্রেফতার ২
টিএমে সমস্যায় পড়া মানুষের ‘বন্ধু’ সেজে উদয় হত ওরা। কার্ড চেয়ে নিয়ে ‘পিন’ জেনে তুলে দিত টাকা। আর তার পরেই ফাঁকা করে দিত অ্যাকাউন্ট।
পুলিশের দাবি, বর্ধমানে ধরা পড়া বিহারের দুই যুবককে জেরা করে এমনই জানা গিয়েছে। এক জনের নাম রাজীবরঞ্জন সিংহ, বাড়ি গয়ার ফতেপুর থানার রসুনা গ্রামে। অপর জনের নাম মিথিলেশ কুমার ওরফে মিঠু, বাড়ি পটনা শহরে। ইদানীং তারা একটি গাড়ি নিয়ে ঘুরছিল। তাদের কাছে সাতটি এটিএম কার্ড, ৭৭০০ টাকা ও প্রচুর চিউয়িং গাম পাওয়া গিয়েছে। চিউয়িং গাম দিয়েই তারা এটিএমের ভিতরে ক্যামেরার মুখ বন্ধ করে দিত বলে পুলিশ জানিয়েছে। সোমবার বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, “দুই যুবককে জেরা করে জানা গিয়েছে, এই ধরনের প্রতারক চক্র বিভিন্ন শহরে ঘুরছে। আমরা গ্রাহকদের অপরিচিত কাউকে এটিএমে ঢুকতে দিতে বা ‘পিন’ জানাতে বারণ করছি।”
পুলিশ সুপারের অফিসে ধৃতেরা। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বর্ধমান পুলিশ লাইনের মোটর ভেহিক্যালস দফতরের ক্লিনার শঙ্করকুমার বিশ্বাস এলাকারই একটি এটিএম থেকে দু’হাজার টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই টাকা তুলতে পারছিলেন না। এমন সময়ে এটিএমের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক তাঁকে সাহায্য করতে ভিতরে ঢোকেন। টাকা তুলতে যে বিশেষ নম্বর (পিন) লাগে, তা তাদের জানিয়ে দেন শঙ্করবাবু। দুই যুবক এটিএম থেকে টাকা তুলে তাঁর হাতে ধরিয়ে দেন। কার্ডও ফেরত দেন তাঁকে। কিন্তু কিছু ক্ষণ বাদেই শঙ্করবাবু বোঝেন, কার্ডটি তাঁর নয়। জনৈক রাজেশ সিংহের নামাঙ্কিত একটি কার্ড তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজের কার্ড ফেরত নেওয়ার জন্য তিনি যখন দুই যুবককে খুঁজছেন, ঠিক তখনই তাঁর মোবাইলে ব্যাঙ্কের তরফে এসএমএস আসে, অ্যাকাউন্ট থেকে দু’বারে ৭,৭০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
ফিরে ওই যুবকদের খুঁজতে গিয়ে শঙ্করবাবু দেখেন, শহরেরই বীরহাটার কাছে একটি এটিএম থেকে দু’জন বেরোচ্ছে। কিন্তু তিনি কার্ড বদলের কথা জানতে চাওয়া মাত্র এক জন পালায়। অপর জনও পালানোর তোড়জোড় করছে দেখে পথচারীদের সাহায্যে শঙ্করবাবু তাকে ধরে ফেলেন। রাজীব নামে ওই যুবক জানায়, দ্বিতীয় জনের কাছেই শঙ্করবাবুর এটিএম কার্ড রয়েছে। রাজীবের কথা অনুযায়ীই তাকে সঙ্গে নিয়ে শঙ্করবাবু হাওড়ার লিলুয়া পর্যন্ত যান। কিন্তু অপর জনের সন্ধান মেলেনি। শেষে বর্ধমানে ফিরে রবিবার বিকেলে তিনি রাজীবকে বর্ধমান থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। রাজীবকে জেরা করে এ দিন সকালে মিথিলেশকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের কাছে ধৃতেরা কবুল করেছে, এই কারবার তারা অনেক দিন ধরে চালাচ্ছে। এটিএমে কারও হয়ে টাকা তুলে দিয়ে আসল কার্ডের বদলে তারা অন্য একটি কার্ড দিয়ে দেয়। টাকা তুলতে গিয়েই তারা জেনে নিয়েছে ‘পিন’। গ্রাহক অন্য কার্ড নিয়ে চলে যেতেই তারা আসল কার্ড ও পিন ব্যবহার করে টাকা তুলে নেয়। অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যাওয়ার পরে ওই কার্ডই আবার পরের কোনও শিকারকে দিয়ে ঠকানো হয়। পুলিশ সুপার বলেন, “যদি নিজের এটিএম কার্ড কারও হাতে দিতেই হয়, তা হলে ফেরত নেওয়ার সময়ে সেটি নিজের কার্ডই কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। ব্যাঙ্কগুলিকে বলা হয়েছে, প্রতিটি এটিএমের ভিতরে যেন সিসিটিভি বসানো হয়। এটিএম কার্ডে প্যানকার্ডের মত ছবি দেওয়া যায় কি না, তা বিবেচনা করতেও পুলিশ ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.