ইন্ডিয়া ফয়েল্সের তারাতলা কারখানা খোলার উদ্যোগ
ন্ডিয়া ফয়েল্সের তারাতলা কারখানাটি খোলার জন্য এ বার রাজনৈতিক স্তরে উদ্যোগী হতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে এস ডি অ্যালুমিনিয়ামের একটি সংস্থা ইন্ডিয়া ফয়েল্স। তারাতলা কারখানার জমি নিয়ে পোর্ট ট্রাস্টের সঙ্গে বিবাদ মেটানোর জন্য এ বার তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন এস ডি অ্যালুমিনিয়ামের চেয়ারম্যান সুদীপ দত্ত। তাঁর আশা, যেহেতু তারাতলার কারখানাটি পশ্চিমবঙ্গে এবং কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায় তৃণমূলেরই নেতা, তাই মুখ্যমন্ত্রী এ ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারবেন।
দেশের অন্যতম বৃহৎ অ্যালুমিনিয়াম তৈরির সংস্থা এস ডি অ্যালুমিনিয়াম পশ্চিমবঙ্গে পা রাখে ২০০৮-এ। মন্দার জেরে বিশ্বের আর্থিক অবস্থা যখন টালমাটাল, সেই সময়েই প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ইন্ডিয়া ফয়েল্স হাতে নেন সুদীপবাবু। সংস্থার তিনটি কারখানার মধ্যে হয়রা ও তারাতলার দু’টি কারখানাই তখন বন্ধ। বাকি কমারহাটির-টিও প্রায় বন্ধের মুখে। কিন্তু হাতে নেওয়ার পর কামারহাটির কারখানাটিকেই শুধু চাঙ্গা করা নয়, হয়রার বন্ধ কারখানটির চাকাও ঘুরিয়েছেন তিনি। আর এ বার লক্ষ্য তারাতলার কারখানা চালু করা। সেটিতেও অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল্স তৈরি হত।

সুদীপ দত্ত
তারাতলার এই কারখানাটিকে ঘুরে দাঁড় করানোর পথে তাদের প্রধান বাধা ছিল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জমির লিজ নিয়ে বিরোধ। তখন রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার। সরকারি স্তরে নানান আলোচনা সত্ত্বেও বিরোধ মেটেনি। এ বার রাজ্যে নয়া সরকার আসায় কর্তৃপক্ষ আশার আলো দেখছেন। কারণ, তৃণমূল রাজ্য সরকারের প্রধান দল এবং জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়ও তৃণমূলের নেতা। সুদীপবাবু বলেন, “জমি সংক্রান্ত জট খুললেই তারাতলার কারখানা চালু করব।” পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও এসডি অ্যালুমিনিয়ামের ১১টি কারখানা ছড়িয়ে মুম্বই, গোয়া ও দমন-সহ আরও কিছু অঞ্চলে।
পাশাপাশি, বাড়িতে ব্যবহারের জন্য অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েল্স নতুন মোড়কে বিপণন করতে ‘ডিজনি’-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন সুদীপবাবুরা। এর সুবাদে বিশ্বব্যাপী শিশুদের কাছে জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র ‘ডোরেমন’ ভারতের বাজারে পণ্যের বিপণনের জন্য ব্যবহারের একমাত্র অধিকারী সুদীপবাবুরাই। শুধু ডোরেমনই নয়, তাঁর কথায়, “ডিজনির সঙ্গে চুক্তির সুবাদে এর পর বিশ্ব বিখ্যাত আরও বেশ কিছু কার্টুন চরিত্রের ছবি দেখা যাবে আমাদের ফয়েলে।” বিশেষত শিশুদের মন কেড়ে বাজার দখলের এই অভিনব কৌশল ভারতে তিনিই প্রথম আনলেন বলে দাবি সুদীপবাবুর।
ডোরেমনের ছবি-সহ সুদীপবাবুদের তৈরি ‘হাউজফয়েল’ ব্র্যান্ড নামের রঙিন ওই অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল অফিসে বা স্কুলে টিফিন নিয়ে যাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে খাবার মোড়ক করার জন্য ব্যবহার করা যাবে। সুদীপবাবুর আরও দাবি, “খাবার মোড়ক করার যে ফয়েল আমরা তৈরি করছি, তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটিকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর জন্য জার্মানির একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছি। এই ধরনের জীবানুমুক্ত ফয়েলও ভারতে আমরাই প্রথম চালু করলাম।”
সুদীপবাবুর আশা, যাঁরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিশেষ সচেতন এবং তাজা খাবার খেতে চান, তাঁদের কাছে ওই ফয়েল জনপ্রিয় হবে। আপাতত দমন ছাড়াও ইন্ডিয়া ফয়েলস্-এর দু’টি কারখানাতেও ওই ফয়েল তৈরি হবে। পরে এর জন্য রাজ্যে নতুন একটি কারখানা গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে ওই বাঙালী শিল্পপতির। ১৯৯০-এ ১৭ বছর বয়সে শুরু করেন প্রথম ব্যবসা। মুম্বইতে ছোট একটি কারখানায় ওষুধের স্যাসে তৈরি দিয়ে। কারখানার কর্মী সংখ্যা ছিল ১২। তিনিই এখন অ্যালুমিনিয়াম তৈরির ক্ষেত্রে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী এস ডি অ্যালুমিনিয়ামের মালিক। দেশে মোট ১১টি কারখানা ওই গোষ্ঠীর আওতায়। কাজ করছেন ২০০০ কর্মী। সংস্থার বার্ষিক আয় ছাড়িয়েছে ১০০০ কোটি টাকা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.